somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের মাঝে খুনীরা

২৬ শে অক্টোবর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৭:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ, যুদ্ধোপরাধী, রাজাকার নিধন, এসব নিয়ে প্রচুর লিখালিখি হয়েছে। হয়েছে নানান আকারের আর প্রকারের আন্দোলন। দেশে আছে আগুনঝরানো লেখক, সাংবাদিক, বিপ্লবী স্পিরিট। লাভ কি হয়েছে? হলে কতটুকু? যেটুকু হয়নি, কেন হয়নি?

সবাই সব জানার পর আইনের ফাঁক (অথবা আমাদের নপুংসতা?) গলে স্বাধীনতা বিরোধী, ৭১এর খুনী, তাদের সহযোগীরা আর মদদদাতারা সবাই শুধু বেরই হয়ে যায়নি এদের অনেকেই হয়েছে প্রতিষ্ঠিত এবং বিশাল শিল্পপতি, খবরের কাগজের মালিক অথবা সম্পাদক, রাজনৈতিক নেতা, সমাজসেবক (?) ইত্যাদি। ব্যার্থতার গ্লানিতে, ব্যাথায়, রাগে, হতাশায়, আক্ষেপে আর ঘেন্নায় সারা শরীরের স্নায়ু-পেশী হয়ে আসে সংকুচিত, বিকৃত।

সবাই কি সব বোঝে আসলেই? বিশাল জনগোষ্ঠীকে করে রাখা হয়েছে অশিক্ষিত। এরা কতটুকু কি বোঝে? আমার মত অগনিত বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মানুষই যখন খুব কমই বোঝে, থেকে যায় কনফিউজড্? উত্তর পায়না প্রশ্নের? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নাই কেন? কেন একটা উদহরনও নাই? যারা কিছু করতে পারতেন তাদের যদি আইডিয়ার অভাব হয়ে থাকে সে আশংকায় এই লেখার শেষে একটা আইডিয়ার নির্দেশনা দিতে পারি মাত্র।

আমার কাছে আইডিয়া থাকলে নিজে কিছু করছিনা কেন তাও কখনও বলবো।

অনেক 'নাই' আর নাপাওয়ার লিস্টের মধ্যে উঠে আসে একটা বড় 'নাই': নেতা পাইনি, নেতা নাই। দেশটা বাপ-মড়া মেয়ের মত - সবাই তার গার্জেন আসলে কেউই না। সবাই বাহাদুরী করতে আসে, সুবিধা নিতে এসে নিজেদের ভেতরে মারামারি করে। বাপ-মড়া মেয়ের যা হবার তা'ই হয়।

যুদ্ধ শুধু এদেশেই হয়নি। যে সমস্ত পরিবার এবং ব্যাক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ক্ষতির কখনোই কারো সঙ্গে তুলনীয় নয়। তারপরও কখনো প্রশ্ন জাগে আমরা খুব সস্তায় দেশটি পেয়েছি কি? জার্মানী আর জাপানের মত মূল্য কি আমাদের দিতে হয়েছে? নতুবা এমন হবে কেন আমাদের দেশপ্রেমের মাত্রা এবং তার রকমসকম?

নিজের পারিবারিক যে ক্ষতি হয়েছে, যে কষ্টের ভেতর দিয়ে গিয়েছি তাতে সেই শিশু মনেই ক্ষোভ জন্মেছিলো শত্রু চিহ্ণিত করে শাস্তি দেয়ার। হয়নি। বাস্তবতা আর তদ্ভুত অক্ষমতার জন্যেই।

আমার নায়ককে আমি হারিয়েছি। আশায় বড় হয়েছি এক নায়ককে দেখবো বলে যে সবার হয়ে বদলা নেবে। বেঈমানী করেছে সময়। সময় সেই নায়কের জন্ম দেয়নি। কে জানে হয়তো দিয়েছে? এখনও একটু একটু আশার আলো কোথায় যেন একা একা জ্বলে যায়। হাসিব, আরিফ জেবতিক, মানবী এদের এবং আরো বেশ ক'জনের কথাগুলো নতুন করে আশা জাগায় - কেউ কোথাও আছে। এতগুলো চিন্তা কারোনা কারো কাজে পরিণত হবে। হয়েছেতো বহুবার, এদেশেই। আর একটা বার? শুধু একটা বার?

শুরুতে যে আইডিয়াটার কথা বলছিলাম:

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসী কন্সেস্ট্রেশন ক্যাম্পে একজন আর্কিটেকচারাল ইঞ্জিনিয়ার চার বছর নির্যাতিত হন। তার নাম Simon Weisenthal। একজন অস্ট্রিয়ান ইহুদী, জন্ম ১৯০৮, মৃত্যু ২০০৫। কন্সেস্ট্রেশন ক্যাম্পের পর বাকী জীবন কাটিয়েছেন পালিয়ে বেড়ানো নাৎসী যুদ্ধপরাধিদের খুঁজে বের করে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করাতে। যুদ্ধপরাধ আর মানবতা বিরোধী অপরাধের কারনে তাদের কাঠগড়ায় দাড় করান সায়মন ভিজেন্দাল। কোথ্থেকে শুরু করেন তিনি? কন্সেস্ট্রেশন ক্যাম্প থেকে যখন মুক্ত হন তখন তার উচ্চতা ৫ফুট ১১ ইঞ্চি আর ওজন ৪৫কেজি!! স্বাস্থ্য একটু ভালো হয়ে আসার সাথে সাথেই আমেরিকান আর্মির হয়ে নাৎসী যুদ্দপরাধের বিচারের ডকুমেন্টশন শুরু করেন। তার জীবদ্দশায় বহু যুদ্ধপরাধীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করান সায়মন। তার এই অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার কাহিনী জানতে তার লেখা Murderers Among Us বইটি পড়ে নিন। তার সম্পর্কে জানতে উইকিপিডিয়ার এই লিংকটি দেখুন Click This Link

সায়মন, তার জীবন আর কাজ আমাদের ইন্সিপিরেশন জোগাতে পারে। হয়তো দিক নির্দেশনাও। যদিও মিল আছে প্রেক্ষাপট, ডিনামিকস সাথে অন্যান্য অনেক কিছুরই, অমিলও কম নয়।

আফটার অল আজিব দেশ আমার এই প্রিয় জন্মভূমি। তবুও আমারই।

আর একজন নায়ক? সামহোয়্যার? এমং আস?
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০০৭ রাত ৮:০৩
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×