স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত পুনরায় বিবাহ করলে যে শাস্তি হয়
কোন পুরুষ যদি অনুমতি বিনা দ্বিতীয় বিবাহ করেন তবে তিনি অবিলম্বে তার বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীদের আশু বা বিলম্বিত দেন মোহরের সম্পূর্ণ টাকা তৎক্ষণাৎ পরিশোধ করবেন এবং মোহরানার টাকা পরিশোধ করা না হলে বকেয়া ভূমি রাজস্ব আদায়ের মতো আদায় করা হবে। এছাড়াও স্ত্রী মামলা আনায়ন করলে তাতে দোষী সাব্যস্থ হলে ১ বৎসর পর্যন্ত জেল ও ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড কিংবা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবেন। পাশাপাশি দন্ডবিধি আইন ১৮৬০ এর ৪৯৪ এর বিধান মতে স্বামী যা স্ত্রীর জীবনকালে পুনরায় বিবাহ করেন যে ব্যক্তি যে কোন বর্ণনার কারাদন্ডে যার মেয়াদ সাত বৎসর পর্যন্ত হতে পারে তদুপরি অর্থদন্ডে দন্ডনীয় হবে। তবে একটি বিষয় পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা উচিত, বহু বিয়ের মামলায় বাদীকে সফল হতে হলে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে, দ্বিতীয় বিয়ের সময় প্রথম বৈধ বিয়ের অস্তিত্ব ছিল।
বহু বিবাহের আইনগত দিক
পূর্বাহ্নে সালিশী পরিষদের নিকট হতে লিখিত অনুমতি না নিয়ে কোন পুরুষ একটি বিবাহ বলবৎ থাকাকালে আর একটি বিবাহ করতে পারবে না এবং পূর্বানুমতি গ্রহণ না করে এই জাতীয় কোন বিবাহ হলে তা মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রেশন আইন ১৯৭৪ মালের ৫২ নং আইন মোতাবেক রেজিষ্ট্রী হবে না)।
১. উপরের (১) উপ-ধারায় বর্ণিত অনুমতির জন্য নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করতে হবে এং আবেদনপত্রে প্রস্তাবিত বিবাহের কারণ এবং বর্তমানে স্ত্রী বা স্ত্রীগণের সম্মতি নেওয়া হয়েছে কিনা তা উল্লেখ করতে হবে।
২. উপরোক্ত (২) উপ-ধারা অনুযায়ী আবেদনপত্র পাঠাবার পর চেয়ারম্যান আবেদনকারী ও তার বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীগণকে তাদের নিজ নিজ প্রতিনিধি মনোনয়ন করতে বলবে এবং সালিশী পরিষদ যদি মনে করে যে, প্রস্তাবিত বিবাহটি প্রয়োজন ও ন্যায়সঙ্গত তা হলে কোন শর্ত থাকলে সে সাপেক্ষে প্রার্থীর বিবাহের অনুমতি মঞ্জুর করতে পারে।
৩. আবেদনপত্র সম্পর্কে সিদ্ধান্তকালে, সালিশী পরিষদ এ সিদ্ধান্তের কারণ সমূহ লিপিবদ্ধ করবে এবং কোন পক্ষ নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্ধারিত সময়ে সংশ্লিষ্ট সহকারী জজের পুনর্বিচারের জন্য আবেদন করতে পারবে এবং এতে সহকারী জজের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে এবং এর বৈধতা সম্পর্কে কোন আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।
৪. বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীগণের প্রাপ্য মুয়াজ্জল বা মু-অজ্জল দেনমোহরের টাকা তৎক্ষণাৎ পরিশোধ করবে। সে টাকা ওইরূপে পরিশোধ করা না হয় তা হলে বকেয়া ভূমি রাজস্ব রূপে আদায় করা হবে।
বহু বিবাহেরে ক্ষেত্রে ইউপি চেয়ারম্যান সাহেবের দায়-দায়িত্বঃ
১. বহু বিবাহের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান সাহেব স্বামীকে অনুমতি দিতেও পারে আবার নাও দিতে পারে।
২. যদি কোন স্বামী সালিশী পরিষদের মাধ্যমে অনুমতি পেয়ে যায় তাহলে চেয়ারম্যান সাহেব তাকে স্মারক নং- সহ দ্বিতীয় বিবাহের অনুমতি প্রদান করবে।
৩. অনুমতি ব্যতিত স্বামী বহু বিবাহ করলে চেয়ারম্যান সাহেব তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বর্তমান স্ত্রীকে উদ্বুদ্ধ করবে।
৪. সালিশী পরিষদের অনুমতি ব্যতিত কোন ব্যক্তি যদি অন্য একটি বিবাহ করে, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করতে পারবে।
বহু বিবাহের ক্ষেত্রে কাজী সাহেবের দায়-দায়িত্ব:
➖বিবাহটি বরের বহু বিবাহ কিনা তা যাচাই করবে।
➖সলিশী পরিষদের লিখিত অনুমতি আছে কিনা তা দেখবে।
➖সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কাজী সাহেব যে কোন পন্থা অবলম্বন করতে পারে আবার সন্দেহ হলে বিবাহটি নাও রেজিষ্টি করতে পারে।
- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ, আইনজীবী
01733 594 270
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৩৯