কপিরাইট কী?
মৌলিক সৃষ্টিকর্মের মালিকানা বা সত্ত্বাধিকারী নিশ্চিত করাই হচ্ছে কপিরাইট।
সাহিত্য বা যেকোনো লেখা, শিল্পকর্ম, সংগীত, চলচ্চিত্র, স্থাপত্য, আলোকচিত্র, ভাস্কর্য, লেকচার, কম্পিউটার প্রোগ্রাম, নকশা অর্থাৎ যা কিছু মৌলিকভাবে তৈরি করা হবে, সবকিছুই কপিরাইটের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
কপিরাইট থাকলে বিনা অনুমতিতে সেগুলো ব্যবহার, পুনর্মুদ্রণ, অনুবাদ, প্রকাশ,নকল ইত্যাদি করা হলে এই আইনের আওতায় শাস্তি ও জরিমানা হতে পারে।
**বাংলাদেশের কপিরাইট আইন
বাংলাদেশে কপিরাইট আইন প্রথম তৈরি হয় ১৯৭৪ সালে। কিন্তু এরপর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সিডি, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদির কারণে সৃষ্টিশীলতা ও কপিরাইট ধারণারও বদল হয়েছে।
পরবর্তীতে ২০০০ সালে নতুন একটি কপিরাইট আইন করা হয়, যা পরে ২০০৫ সালে সংশোধন হয়। এই আইনে প্রতিকার পেতে হলে তাকে মেধা সম্পদটির অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে।
**কপিরাইটের মেয়াদঃ
কপিরাইটেরও নির্দিষ্ট মেয়াদ রয়েছে। যেমন সাহিত্য কর্মের জন্য কবি বা লেখকের মৃত্যুর পর থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত কপিরাইট থাকে।
তবে চলচ্চিত্র বা আলোকচিত্রের ক্ষেত্রে প্রকাশিত হওয়ার পরবর্তী বছর থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত কপিরাইট থাকবে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কপিরাইটের মেয়াদ ৬০ বছর, তবে কখন থেকে সেই মেয়াদ শুরু হবে, বিভিন্ন ক্ষেত্র ভেদে সেটি আলাদা হতে পারে।
**কপিরাইট লঙ্ঘনের মামলা যেভাবে করতে হবেঃ
কেউ যদি কোনো লেখক বা প্রণেতার বই বা কোনো সৃষ্টকর্ম নকল করেন, তাহলে দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় প্রতিকার চাইতে পারবেন। শাস্তি হিসেবে কপিরাইট ভঙ্গকারীর হতে পারে চার বছরের জেল ও সর্বনিম্ন ছয় মাসের জেল। সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকার জরিমানা ও সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে এ শাস্তি সর্বোচ্চ পাঁচ বছর ও সর্বনিম্ন এক বছর এবং সর্বোচ্চ ৫ লাখ ও সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা জরিমানা। ফৌজদারি বিচার হবে দায়রা জজ আদালতে। এ ছাড়া জেলা জজ আদালতেও ক্ষতিপূরণ ও নিষেধাজ্ঞার প্রতিকার চাওয়া যাবে।
- মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
আইনজীবী
০১৭৩৩৫৯৪২৭০
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৫:৩২