
দুর্নীতি দমন কমিশন যদি দুর্নীতির অনুসন্ধান করতে গিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির শুনানী গ্রহণ করতে পারে। দুর্নীতি দমন কামশন আইন,২০০৪ এর ২২ ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা, ২০০৭ এর বিধি ৮ এর বিধান মোতাবেক অনুসন্ধান চলাকালে অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য শোনার বিধান রয়েছে।
শুনানীর পূর্বে নোটিশ ইস্যু করতে হবে:
আইনের বিধান মোতাবেক দুর্নীতি বিষয়ক কোন অভিযোগের অনুসন্ধান চলাকালে কমিশন বা কমিশন কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কমিশনার বা কর্মকর্তা যদি মনে করে যে, অভিযোগের সহিত সংশিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শ্রবণ করা প্রয়োজন তাহা হইলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া নোটিশে উল্লিখিত সময়সীমার মধ্যে মৌখিক বা লিখিত বক্তব্য পেশ করিবার সুযোগ প্রদান করিতে পারিবে।
মানে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই লিখিত নোটিশ প্রদান করতে হবে। মৌখিক/মোবাইলে বা হোয়াটস্অ্যাপে নোটিশ পাঠালে হবে না। মামলা বিচারকালীন যদি প্রমাণিত হয় লিখিত নোটিশ যথাযথ আইনানুগভাবে প্রদান করা হয় নি সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত খালাস পেতে পারেন।
অভিযুক্ত ব্যক্তি বক্তব্য মৌখিক বা লিখিতভাবে দিতে পারবেন।
শুনানীতে আইনজীবীরি সহায়তা নেওয়া যাবে?
দুদক আইনের বিধান মোতাবেক শুনানীতে আইনজীবীর সহায়তা নেওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে এবং সাথে আইনজীবীকে নিয়ে যাওয়া যাবে। অনেক সময় দুদক অফিস থেকে আইনজীবী সাথে নেওয়ার কথা বলা থাকে না বা অভিযুক্ত নেন না কিংবা দুদক অফিস থেকে অনুৎসাহিত করা হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনি যদি চান আইনজীবী সাথে থাকুক তাহলে দুদক আইনজীবীসহ শুনানী করতে বাধ্য। যদি আইনজীবী নাও নিতে চান, সেক্ষেত্রে শুনানীর লিখিত বক্তব্য আইনজীবীর সহায়তায় তৈরী করা উত্তম।
ইদানীং দেখা যায়, দুদক অফিস লিখিত বক্তব্য রাখতে চায় না বা রাখলেও রিসিভিং দেয় না। কিন্ত আইনত তারা তা করতে পারে না। অভিযুক্তের বক্তব্য লিখিত আকারে প্রদান করলে তাকে রিসিভিং দিতে হবে। কিংবা লিখিত বক্তব্য দিলে তা অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে এবং নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। কারণ, উক্ত বক্তব্য নথিভুক্ত না করলে মামলা বিচারের গেলে আসামী সেটার সুবিধা পেতে পারে এবং মামলাটি দুর্বল হয়ে পড়ে।
বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, দুদকের মামলা অর্ধেক নষ্ট হয় এই নোটিশ ইস্যু, বক্তব্য শ্রবণ, লিখিত বক্তব্য প্রদানকে কেন্দ্র করে। মানে অনুসন্ধান পর্যায়ের আইনী দুর্বলতাগুলো আসামীরা নিতে পারেন। সেজন্য নোটিশ ইস্যুর সাথে সাথে আসামীদের উচিত আইনজীবীর শরণাপন্ন হওয়া।
-মোহাম্মদ তরিক উল্যাহ
অ্যাডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
০১৭৩৩৫৯৪২৭০ ( কল করার পূর্বে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ দিন)
লেখক- আইন বিষয়ক উপন্যাস 'নিরু, 'অসমাপ্ত জবানবন্দী' এবং 'গায়েবি শৃঙ্খল'; মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপন্যাস 'মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'একাত্তরের অবুঝ বালক' ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


