somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মদীনায় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর দেয়া প্রথম খুতবা

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইবনুল কাইয়ুম তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ যাদুল মা’আদ এ নিম্নোক্ত খুতবা লিপিবদ্ধ করেছেন। যারা জ্ঞানার্জনে আগ্রহী তাদের জন্য উক্ত গ্রন্থটি একটি মূল্যবান উৎস্য বলে বিবেচিত হয়, যা পাঠে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর জীবনী এবং ফিকহ একত্রে শেখা যায়। এটি একটি অনন্যসাধারণ গ্রন্থ যেখানে জীবনীর মাধ্যমে সুন্নতের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, একই ভাবে সেখান থেকে সুন্নতের মাধ্যমে জীবনী সম্মন্ধে জ্ঞানার্জন করা যায়।
এই খুতবাটি যখন রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম যখন প্রথম মদীনা/ কুবাতে পৌঁছেন তখন প্রদান করেছিলেন, ঘটনাটি মসজিদে নববী নির্মাণের পূর্বে।
আব্দুর রহমান ইবনে কাব থেকে ইবনে ইসহাক বর্ণনা করেন যে, (হাদীসের অংশ বিশেষ): রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম মদিনায় আগমণের পর তিনি সোমবার, মঙ্গলবার এবং বুধবার কোবায় অবস্থান করেন এবং বৃহস্পতিবার সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন, এরপর শুক্রবার তিনি আবার যাত্রা শুরু করেন, বনু সালিম ইবনে আউফ গোত্রের বসতিতে পৌছালে জুম্মার ওয়াক্ত হয়, এবং সেখানে তিনি উপত্যকায় মসজিদে জুম্মার সালাত আদায় করেন, এটা তাঁর মসজিদ নির্মাণের পূর্বে।

ইবনে ইসহাক আরো বলেন, আবু সালামাহ ইবনে আব্দুর রহমান এর মতে এটা ছিল প্রথম খুতবা যা তিনি প্রদান করেন- তিনি যা বলেননি, তা তাঁর প্রতি আরোপ করা হতে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি – তিনি তাদের মাঝে দন্ডায়মান হন, তিনি আল্লাহর প্রশংসা করেন এবং তার মহিমা বর্ণনা করেন, অতঃপর তিনি বলেনঃ



“এরপর, ও লোক সকল! তোমরা তোমাদের (নেক আমল) অগ্রে প্রেরণ কর; আল্লাহর কসম, তোমরা নিশ্চিত জানো, তোমাদের মাঝে এক ব্যাক্তি আঘাতে অচেতন হয়ে লুটিয়ে পড়বে এবং সে তার ভেড়াগুলোকে রাখাল বিহীন অবস্থায় ছেড়ে দেবে, অতঃপর তার প্রভু তাকে নিশ্চিত ভাবে জিজ্ঞাসা করবেন - এবং সেখানে তাদের মাঝে কোনো মাধ্যম বা কোনো পর্দা থাকবেনাঃ “ তোমার কাছে কি কোনো রসুল আসেনি এবং আমার বাণী পৌঁছায়নি? আমি কি তোমাকে সম্পদ এবং অনুগ্রহ দান করিনি? এবং তুমি তোমার জন্য অগ্রে কি পাঠিয়েছ?” নিশ্চয়ই তখন সে ডানে, বামে তাকাবে কিন্তু কিছুই দেখতে পাবেনা; অতঃপর সে সামনে তাকাবে ও দোযখের আগুন ব্যাতিত কিছুই দেখবেনা। সুতরাং যে ব্যাক্তি সক্ষম, সে যেন নিজের চেহারাকে আগুন থেকে বাঁচায়, যদিও তা শুধুমাত্র একটি খেজুর সদকা করার মাধমেও হয়; যে ব্যাক্তি তাও করতে সক্ষম নয়, সে যেন উত্তম কথা বলার মাধ্যমে নিজে কে আগুন থেকে রক্ষা করে, একটি ভালো কাজের পুরস্কার দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। আল্লাহ যেন তোমাদের প্রতি শান্তি, করুণা ও কল্যাণ বর্ষন করেন।”

ইবনে ইসহাক বলেনঃ এরপর আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম দ্বিতীয় খুতবা প্রদান করেন, তিনি বলেন,



“ সকল প্রশংসা আল্লাহরই জন্য, আমি তাঁর প্রশংসা করছি, তাঁর কাছেই সাহায্য চাইছি।আমরা আমাদের অকল্যাণ থেকে, এবং আমাদের মন্দ আমল গুলো থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থণা করছি। আল্লাহ যাকে পথ প্রদর্শন করেন, কেউ থাকে পথভ্রষ্ট করতে পারেনা, আর আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন, কেউ থাকে পথ দেখাতে পারেনা। এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নাই, ও তার কোন শরীক নাই। শ্রেষ্ঠ বাণী হচ্ছে আল্লাহর কিতাব। যে ব্যক্তির অন্তরকে আল্লাহ এর দ্বারা অলংকৃত করলেন, কুফরী করার পর আল্লাহ তাকে ইসলামে দাখিল করলেন, এবং সে ব্যক্তি সফলকাম হলো, কেননা, সে এ( আল্লাহর বাণী) কে মানব জাতির সকলের উপর স্থান দিল । বাস্তবিকই এটা শ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক অলংকারপূর্ণ বাণী। আল্লাহ যা ভালবাসেন, তোমরা তা ভালবাস; আল্লাহকে হৃদয়ের সবটুকু দিয়ে ভালবাস। আল্লাহর বাণীতে এবং তাঁর নাম স্মরণে কখনো ক্লান্ত হয়োনা, এবং তোমাদের অন্তরকে এর প্রতি কঠিন করোনা। আল্লাহর সকল সৃষ্টির মধ্যে তিনি কাউকে পছন্দ করেন, কর্ম ও কথায় কথায় তার বান্দাদের মধ্যে যে সেরা। সুতরাং আল্লাহর এবাদত কর, ও তার সাথে কাউকে শরীক করোনা, তাঁকে যেমন ভয় করা উচিৎ তেমন ভয় কর, তোমাদের মুখনিসৃত বাক্যে আল্লাহর প্রতি সত্যায়ন কর এবং আল্লাহর আত্মা দিয়ে একে-অপরকে ভালবাস। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে কৃত ওয়াদা ভঙ্গ করাকে ঘৃনা করেন। এবং আল্লাহ যেন তোমাদের প্রতি শান্তি, করুণা ও অনুগ্রহ বর্ষন করেন।
( সীরাতে ইবনে হিসামে উক্ত হাদীস বর্ণিত হয়েছে, কিন্তু শুয়াইব আল-আরনাত এবং আব্দুল কাদির আল-আরনাত এর মতে বর্ণনাকারীদের সনদে কিছু কিছু সমস্যা আছে, কারন, ইবনে ইসহাক আবু সালমাহ ইবনে আব্দুররহমান কে দেখেছেন ঠিকই কিন্তু তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেননি, তিনি (আবু সালমাহ ইবনে আব্দুররহমান) কোনো কোনো সাহাবী থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তিনি কখনোই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম এর সাক্ষাত লাভ করেননি)

[সূত্রঃZad Al-Ma’ad’ vol. 1, page 374 published by Maktabah Al-Manar Al-Islamiyyah]

কৃতজ্ঞতাঃ iqrasense.com


SIMILAR POSTS YOU MAY LIKE TO READ:

দশটি সময় যখন দু’আ কবুল হয়

ইবাদতে পরিতৃপ্তি ও মিষ্ট স্বাদ

সালাত কি জীবনে পরিবর্তন আনে?

আমাদের দশটি বিনষ্ট জিনিস

জুমুআহঃ সপ্তাহের সেরা দিন

হিংসা বা ঈর্ষা জয়ের ৮ টি উপায়
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৪৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে ফেরার টান

লিখেছেন স্প্যানকড, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:৩১

ছবি নেট।

তুমি মানে
সমস্ত দিনের ক্লান্তি শেষে
নতুন করে বেঁচে থাকার নাম।

তুমি মানে
আড্ডা,কবিতা,গান
তুমি মানে দুঃখ মুছে
হেসে ওঠে প্রাণ।

তুমি মানে
বুক ভরা ভালোবাসা
পূর্ণ সমস্ত শূন্যস্থান।

তুমি মানে ভেঙ্গে ফেলা
রাতের নিস্তব্ধতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বজলুল হুদাকে জবাই করে হাসিনা : কর্নেল (অব.) এম এ হক

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯

মেজর বজলুল হুদাকে শেখ হাসিনা জবাই করেছিলেন।

(ছবি ডিলিট করা হলো)

শেখ মুজিবকে হত্যার অপরাধে ২৮শে জানুয়ারী ২০১০ এ মেজর (অব.) বজলুল হুদা সহ মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×