somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দূর্গা পূজা বা দূর্গোৎসব

১৬ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ৩:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুর্গাপূজা বা দুর্গোৎসব হিন্দু দেবী দুর্গার আরাধনাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হওয়া বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। শাস্ত্রীয় বিধানে আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষে এবং চৈত্রমাসের শুক্লপক্ষে দুর্গোৎসব পালন করা যায়। চৈত্র অর্থাৎ বসন্তকালের দুর্গাপূজা বাসন্তী দুর্গাপূজা ও আশ্বিন অর্থাৎ শরৎকালের দুর্গাপূজা শারদীয়া দুর্গাপূজা নামে পরিচিত। বাংলায় শারদীয়া দুর্গাপূজা অধিক জনপ্রিয়। যদিও অনেক পরিবারে বাসন্তী দুর্গোৎসব পালনের প্রথাও বর্তমান।

দুর্গাপূজা ভারতীয় উপমহাদেশের অন্তর্গত একাধিক রাষ্ট্রে পালিত হয়ে থাকলেও, এটি বিশেষ করে বাঙালিদের উৎসব হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় এই উৎসবের জাঁকজমক সর্বাধিক। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ও বিশেষ উৎসাহে এই উৎসব পালন করে থাকেন। এমনকি অসম ও ওড়িশাতেও দুর্গাপূজা মহাসমারোহে পালিত হয়ে থাকে। বর্তমানকালে পাশ্চাত্য, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যেসব দেশগুলিতে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা কর্মসূত্রে অবস্থান করেন, সেখানেও মহাসমারোহে দুর্গোৎসব আয়োজিত হয়ে থাকে। এই কারণে সারা বিশ্বের কাছেই বর্তমানে বাংলার অন্যতম প্রতীক হয়ে উঠেছে দুর্গোৎসব। ২০০৬ সালে ব্রিটিশ মিউজিয়ামের গ্রেট হল-এ ভয়েসেস অব বেঙ্গল সিজন নামে একটি সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীর অঙ্গ হিসাবে বিরাট দুর্গোৎসবের আয়োজন করেন স্থানীয় বাঙালি অভিবাসীবৃন্দ ও জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।[১]

সাধারণত আশ্বিন শুক্লপক্ষের ষষ্ঠ দিন অর্থাৎ ষষ্ঠী থেকে দশম দিন অর্থাৎ দশমী অবধি পাঁচ দিন দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই পাঁচটি দিন যথাক্রমে দুর্গাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমী নামে পরিচিত। আবার সমগ্র পক্ষটি দেবীপক্ষ নামে আখ্যাত হয়। দেবীপক্ষের সূচনা হয় পূর্ববর্তী অমাবস্যার দিন; এই দিনটি মহালয়া নামে পরিচিত। অন্যদিকে দেবীপক্ষের সমাপ্তি পঞ্চদশ দিন অর্থাৎ পূর্ণিমায়; এই দিনটি কোজাগরী পূর্ণিমা নামে পরিচিত ও বাৎসরিক লক্ষ্মীপূজার দিন হিসাবে গণ্য হয়। দুর্গাপূজা মূলত পাঁচদিনের অনুষ্ঠান হলেও মহালয়া থেকেই প্রকৃত উৎসবের সূচনা ও কোজাগরী লক্ষ্মীপূজায় তার সমাপ্তি। পশ্চিমবঙ্গের কোনও কোনও পরিবারে অবশ্য পনেরো দিনে দুর্গোৎসব পালনের প্রথা আছে। এক্ষেত্রে উৎসব মহালয়ার পূর্বপক্ষ অর্থাৎ পিতৃপক্ষের নবম দিন অর্থাৎ কৃষ্ণানবমীতে শুরু হয়ে থাকে। বিষ্ণুপুরের প্রাচীন রাজবাড়িতে আজও এই প্রথা বিদ্যমান। পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় মহাসপ্তমী থেকে বিজয়া দশমী অবধি জাতীয় ছুটি ঘোষিত থাকে; এই ছুটি বাংলাদেশে কেবলমাত্র বিজয়া দশমীর দিনই পাওয়া যায়।

বর্তমানকালে দুর্গাপূজা দুইভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে – ব্যক্তিগতভাবে পারিবারিক স্তরে ও সমষ্টিগতভাবে পাড়া স্তরে। ব্যক্তিগত পূজাগুলি নিয়মনিষ্ঠা ও শাস্ত্রীয় বিধান পালনে বেশি আগ্রহী হয়; এগুলির আয়োজন মূলত বিত্তশালী বাঙালি পরিবারগুলিতেই হয়ে থাকে। অন্যদিকে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের বাসিন্দারা একত্রিত হয়ে যৌথ উদ্যোগেও দুর্গোৎসবের আয়োজন করেন। এগুলি বারোয়ারি বা সর্বজনীন পূজা নামে পরিচিত। সর্বজনীন পূজার উদ্ভবের ইতিহাসের সঙ্গে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের ঐতিহ্য ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। আজকাল এই পূজাগুলিতে থিম পূজা অর্থাৎ, থিম ভিত্তিক মণ্ডপ ও প্রতিমা নির্মাণের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ৩:৫০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×