আজ এক মুরুব্বী আমাকে হঠাত করে প্রশ্ন করে বসলেনঃ
বলো তো সুন্দরবন সম্পর্কে কতটা জানো ?
মুরুব্বী ফার্স্ট জেনারেশনের লোক। একটু চালাকী করে বললামঃ ৫ মিনিট সময় দিবেন? একটু চিন্তা করি বলি। মুরুব্বী বললেনঃ ঠিক আছে বলো।
আমি এন্ড্রোয়েডে উইকিপিডিয়া ঘেঁটে ১ মিনিটের মধ্যে সুন্দরবন সম্পর্কে তথ্য বের করেই বাকি ৪ মিনিট পড়লাম। এরপর মোটামুটি সামারিটা বলে ফেললামঃ
সুন্দরবন বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী প্রশস্ত বনভূমি যা বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়াবলীর অন্যতম। পদ্মা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহিকায় বদ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালি ও বরগুনা জেলা জুড়ে বিস্তৃত। সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি।[২]। ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার[৩] রয়েছে বাংলাদেশে।[৪] সুন্দরবন ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এর বাংলাদেশ ও ভারতীয় অংশ বন্তুত একই নিরবচ্ছিন্ন ভূমিখণ্ডের সন্নিহিত অংশ হলেও ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় ভিন্ন ভিন্ন নামে সূচিবদ্ধ হয়েছে যথাক্রমে সুন্দরবন ও সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান নামে। সুন্দরবনকে জালের মত জড়িয়ে রয়েছে সামুদ্রিক স্রোতধারা, কাদা চর এবং ম্যানগ্রোভ বনভূমির লবণাক্ততাসহ ক্ষুদ্রায়তন দ্বীপমালা। মোট বনভূমির ৩১.১ শতাংশ, অর্থাৎ ১,৮৭৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদীনালা, খাঁড়ি, বিল মিলিয়ে জলাকীর্ণ অঞ্চল।[৩] বনভূমিটি, স্বনামে বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও নানান ধরণের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির ও সাপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত। জরিপ মোতাবেক ৫০০ বাঘ ও ৩০,০০০ চিত্রা হরিণ রয়েছে এখন সুন্দরবন এলাকায়। ১৯৯২ সালের ২১শে মে সুন্দরবন রামসার স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
এই তথ্যগুলো সম্পর্কে ইউকিপিডিয়া ঘেঁটে আপনিও নিশ্চিত হতে ক্লিক করুনঃ আমাদের গর্বের সুন্দরবন
চাচা তো পুরো টাস্কিত! আমার ব্রিলিয়ান্সি দেখে টাস্কিত না হয়ে উপায় আছে ! (ইউকি মামারে কেমনে যে ধন্যবাদ দিমু !)
আমি তখন বিশিষ্ট ভাবিস্ট হয়ে গেছি। ভাবে উড়ছি।
এবার মুরুব্বী চাচা আমাকে বললেনঃ বলো তো কেন এখন পর্যন্ত সুন্দরবন বাংলাদেশের মত লুটপাট আর দখলের দেশে অক্ষত আছে ?
এবার আমি শেষ ! এই প্রশ্নের উত্তর দিব কেমনে ?
আবার এন্ড্রোয়েডে ক্লিক মারতে যাব এমন সময় চাচা বলে উঠলেনঃ
ওখানে পাবে না বেটা ! এর উত্তর গুগল আর উইকিপিডিয়া জানে না।
আমি পুরো ঠান্ডা হয়ে গেলাম। বুঝলাম ফার্স্ট জেনারেশনের চাচা আসলে ফোর্থ জেনারেশনের কঠিন বুড়া!
চাচা আমার পিঠ চাপড়ে বললেনঃ গুগলে ইনপুট করে দাও একটা প্রশ্ন- "কেন বাংলাদেশে সুন্দরবন এখনো অক্ষত আছে?"
একই সাথে উত্তর লিখে দাওঃ "এখনো সুন্দরবন টিকে আছে। কারন সুন্দরবনে বাঘ আছে।"
মুরুব্বী চাচা আমার কৌতুহলী চাহনী দেখে বললেনঃ "বিশ্বাস করো বেটা, যদি সুন্দরবনে বাঘ না থাকতো, তাহলে ঐটাও এতদিন সোনার ছেলেদের হাতে দখল হয়ে যেত। "
বাঘ আছে বলেই শেয়ালগুলো তা দখল করতে পারছে না।
আমি অনেকক্ষন চুপ থেকে কথাটা বুঝার চেষ্টা করলাম।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



