somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঐ যে [গল্প]

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুক্রবার সন্ধ্যা হলেই মাগরিবের নামায পড়ে চলে যাই এলাকার একেবারে শেষ মাথায়। আগে জায়গাটায় খেলা-ধূলা করতাম। মাঠের মতো বিস্তৃত ছিল, এখন ৩০ তলা একটা বিল্ডিং এর অবকাঠামো দাঁড়িয়ে আছে। গাতনি দেয়া এখনো শুরু করেনি, বিল্ডিং এর মজবুত কঙ্কাল ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে বলা যায়।
শুক্রবার জুমার নামাযের পরে আর এই বিল্ডিঙ্গে কোন কাজ হয় না, তাই কোন শ্রমিকও থাকে না। যে যার মতো ঘুরতে যায় অথবা বাড়ি চলে যায়।
বাড়িটা যে পাহাড়া দেয় সে আমাকে চেহারায় চিনতো আগে, নামাযে মসজিদে প্রতিদিনই দেখা হতো। সেই ভরসায় তাকে বলেছি - প্রতি শুক্রবার সন্ধ্যায় আমি আসবো একেবারে সবার উপরের তলায় গিয়ে ঘন্টাখানিক থাকবো। একাই আসবো, সাথে কিছুই আনবো না, ইচ্ছা হলে আমাকে চেক করে নিতে পারে।
আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তবেই অনুমতি পেয়েছি। তবে তাঁর ব্যক্তিগত অনুমতি, মালিকের নয়।
গেটে এসে চাচাকে সালাম দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসলাম। এটা একধরনের ব্যায়ামও আমার জন্য, উঠতেই আধা ঘন্টা লেগে যায়। এতো উঁচু বিল্ডিং পুরো এলাকায় আর একটাও নেই, অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায়। দূরের লাল-হলুদ বাতি, জ্যামের দীর্ঘ সাড়ি, রায়ের বাজার বদ্ধ্যভূমি, আরো দূরের ধুলোয় ঢাকা রাস্তা, একপাশ থেকে আরেক পাশ গুহ্রলেই নতুন সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। এক ফ্রেমেই বৈচিত্রকে এঁটিয়ে ফেলা যায়। তবে আমি এই চিত্র দেখতে এখানে আসি না, আমি আসি গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে।
কেউ শুনতে পারবে না আমার চিৎকার, হাহাকার। পুরো সপ্তাহের ঘৃণার কথা উগড়ে দেই মুহুর্তের মধ্যে, ভালোবাসার কথা নির্ভয়ে, নিঃসংকোচে বলি।
রাগে চোখ দিয়ে পানি পরে কিংবা হতাশায়, না পাওয়ার বেদনায়, বিভিন্ন অনুভূতি একে অপরের সাথে মিশে যায়। এরপর আরেক কারণে আসি যেটা উচিত না, চাচা বিপদে পড়বে যদি কোনদিন ঘটে যায়।
হাইট ফোবিয়া থাকার পরেও ছাদের কিণারায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি, জানি আত্মহত্যা করার মতো সাহস নেই। সাহসটা থাকলেও ধর্মীয় নীতি এসে বাগড়া দিবে। তাই কোণায় দাঁড়িয়ে থাকি, যদি কোন অশরীরি কিছু এসে ধাক্কা দেয়, যদি বাতাসের প্রচন্ড ধাক্কায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যাই তবে তো তা আত্মহত্যা হবে না, পাপও হবে না। বাঁদুড় অনেক নিচ দিয়ে উড়ে যাচ্ছে, ইচ্ছে করে পিঠের উপরে গিয়ে লাফ দিয়ে বসি। আমি যদি পাখির পালকের মতো হতাম?
এশারের আযান শোনা যাচ্ছে, চোখ মুখ মুছতে মুছতে নিচের দিকে নামা শুরু করলাম। আবার এক সপ্তাহ পরে। এইভাবে আরো কিছু সপ্তাহ পরে ঐ ছাদের উপরে আড্ডা হবে, বিয়ের হলুদের অনুষ্ঠান হবে। সারা রাত গান বাজনা হবে দূর থেকে মানুষ দেখতে পাবে। সবচেয়ে উজ্জ্বল একটি বাড়ির ছাদ, ছাদের কাছে আমি অনেক ঋণী থাকবো।
ঘুটঘুটে অন্ধকারের ছাদ তুই ভালো থাকিস......
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৪২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×