গত ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১০ তারিখ হতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের দখলে। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে দিন বদল। ক্যাম্পাসে যত্রতত্র যাকে তাকে মারধর, চাঁদাবাজি, সিট দখল, গ্রুপিং, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি, শিক্ষক পেটানো, ছাত্রী লাঞ্চনা, বোমা বানাতে গিয়ে আহত হওয়া, নামাজি ছাত্রদের মারধর ইত্যাদি কর্মকান্ডে অতিষ্ট সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী।
ঘটনা ১ : রাবি এস. এম. হলে বেলাল নামের এক ছাত্রের কাছে যায় ছাত্রলীগের কর্মীরা। তারা তার কাছ থেকে তার মোবাইলটা খুব ভাল লেগেছে বলে নিয়ে যায়। যেটি আর কখনো ফেরত আসবে বলে সে মনে করেনা।
ঘটনা ২: জিয়া হলে মাস্টার্সের এক ছাত্রের সংগে কথা বলতে বলতে ছাত্রলীগের কর্মীরা জানতে পারে তার এক বন্ধু তাকে কোন এক সময় "ইয়ুথ ওয়েভ" নামে এক পত্রিকা উপহার দিয়েছিল। তারা পরে তার রুম সার্চ করে "ইয়ুথ ওয়েভ" ও "ছাত্র সংবাদ" নামের দুটি পত্রিকার কপি পায়। তারা সাদা কাগজে তার কাছ থেকে লিখে নেয় যে- তার রুম থেকে দুটি জেহাদী বই পাওয়া গেছে। পরে তাকে ঐ হলের এক নেতার রুমে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং হল থেকে বের করে দেয়। হল থেকে বের করার সময় তাকে বলে- পারলে ৪বছর পরে এসে প্রতিশোধ নিয়ে যাস্।
ঘটনা ৩: হলে যারা থাকবে তাদের সবাইকে লীগের মিছিলে যাওয়া বাধ্যতামূলক। এব্যপারে প্রতিবন্ধীদেরও ছাড় নেই।
জিয়া হলে এক নামাজি ছাত্র শারিরীক প্রতিবন্ধী। তার এক পা বাঁকা অনেকটা পোলিও রোগীদের মতন। তাকেও তারা বাধ্য করেছে তাদের মিছিলে যেতে। মিছিলে সবাই দ্রুত হাঁটে আর সে সবার সাত আট হাত পেছনে পেছনে হেঁটে হেঁটে মিছিল করে। কি নির্মম।
ঘটনা ৪: হলের প্রত্যেকটা ছেলেকেই ছাত্রলীগকে চাঁদা দিতে হবে। চাঁদার পরিমান ন্যুনতম ২০০ টাকা। এটা নাকি ছাত্র কল্যাণে ব্যয় হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই জানে এ টাকা ব্যবহার হবে তাদের অস্ত্র কিনতে এবং মাদক নেশা মেটাতে।
ঘটনা ৫: ছাত্রলীগ ছাত্রশিবিরের রুম ভাংচুর করতে গিয়ে কয়েকশত সমর্থক ফরম পায়। তারপরই শুরু হয় চাঁদাবাজির আরেক নতুন খেলা। ফরমে উল্লেখিত মোবাইল নাম্বারে কল করে চাঁদা চাওয়া হচ্ছে এবং বলা হচ্ছে চাঁদা না দিলে পুলিশে ধরিয়ে দেবে এছাড়া আরওতো হয়রানি আছেই। ঘটনাক্রমে ছাত্রলীগেরই এক কর্মীর নামের ফরম পাওয়া যায় মাদার বকস্ হলে। যে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়ার আগে ফরম পূরন করেছিল বন্ধুর অনুরোধ রাখতে গিয়ে। তাকে ১০হাজার টাকা দিতে বলা হলেও পরে কিছু কমে সে ম্যানেজ করে। কিন্তু হল ছাড়া হয় সন্দেহের কারণে।
ঘটনা ৬: শুধুমাত্র নামাজ পড়ার কারনে মারধর করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু হল, জিয়া হল, সোহরাওয়ার্দী হলে কয়েকটি নিরীহ ছাত্রকে।
এছাড়াও আরো অসংখ্য ঘটনা ঘটছে রাবি ক্যাম্পাসে কিছু আমরা জানছি আবার অনেক কিছুই জানছিনা। ছাত্রী নির্যাতন এবং শিক্ষক পেটানোর ঘটনা সবারই জানা।
ঘটনা গুলো জানালাম একান্তই আমার নিজের পর্যবেক্ষণ থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১০ দুপুর ১২:০৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





