গোধূলি পর্ব
আব্দুল্লাহ আল মামুন
দ্বি-প্রহরের ঝলমলে সূর্যটা
হেলেছে খানিক আগে,
ছুটছে জীবন একলা যেন
বেলাশেষের রাগে।
গোধূলি সূর্য পেছনে রেখে
দুয়ারে এ কোন রমণী?
তিনি! এ বসতবাড়ির
একমাত্র উত্তরাধিকারিণী।
গায়ে গামছা, কেরোসিন চুলায়
ডিমের রসুই চলছিল,
এমন সময় ঝলমলে উত্পাত-
ভরাযৌবনা অবাক হয়ে দেখছিল।
একবার আপন শরীর আবার
ডিমের শরীরে তাকালাম,
লুকানো যাবে না কোনটাই-
লুকোচুরি নয় বুঝে ফেললাম।
টকটকে অধরের ফাঁকে দু’টি শব্দ
চোখে চোখে - 'আসতে পারি?'
'আসুন।' কিন্তু কোথায় বসাই?
একটাই-খাট, তা-ও ঝুলছে মশারি।
ধীর পায়ে এলেন তীব্রকটাক্ষিণী
বসলেন খাটের কিনারে,
রসণায় করুণা বর্ষণ করে
আমিও বসলাম অন্য ধারে।
দোলালাগা অবয়বে তাকালাম
বললাম, 'আবার কেন এসেছেন?'
উন্মিলিত চোখ, কম্পিত অধর
বললেন, 'কেন ফিরিয়ে দ্যান?'
বহুবারের মত এবার খুব দ্রুত
জবাব পায়নি গোধূলি,
আমি নিজেকে সামলাতে ব্যস্ত
ভাবছি, এমন আশ্রয়টা হাতছাড়া হ'লি!
পরের মাসে সেই ছোট্ট কামরার
ঘর-সংসার মিটিয়ে দিলাম,
চিলেকোঠার এই আশ্রয়টুকু
বড় অসময়ে পেয়েছিলাম।
আশ্রয়হীন এক যুবক হয়েছিল
প্রজাবিহীন চিলেকোঠার নায়েব,
তারপর কি হলো, যুবক কি হারালো
কেউ জানলো না, সবই 'গায়েব'।
যুবক যে উতলা হয়নি তা নয়
বজ্রমুষ্ঠিতে চেপেছে আপন হৃদয়
তবুও কাউকে দেয়নি বুঝতে
এক গোপন প্রিয়ার প্রণয়।
আর গোধূলি? চলে গেছে দূরে
অন্যের ঘরে হয়েছে নিশিযাপিনী,
তার পাঁজর ভেঙ্গেছে কি বক্ষ ছিঁড়েছে
তা এ পাড়ার কেউ দেখেনি।
এখন মাঝে মাঝে একলা হলে
গোধূলি থমকে দাঁড়ায়,
যুবক ভুলেই গেছে কবে...
মনে পড়ে কি গোধূলিবেলায়?
(ফেব্রুয়ারি '০২-এ মুক্তাঙ্গন নামে একটি লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত)(ক্লোজআপহাসি)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০০৭ দুপুর ১:৩৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



