somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাহাদাত উদরাজী
সাহাদাত উদরাজী'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - 'গল্প ও রান্না' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

সহজ ভাবনায় ভারতের ক্যাব, এনআরসি বা নাগরিকত্ব আইন ও আমাদের করনীয় বিষয়াদি

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দীর্ঘ সময় ধরে ইন্ডিয়ান বর্তমান গভারমেন্টের ক্যাব, এনআরসি বা নাগরিকত্ব আইন নিয়ে গবেষণা করলাম বা জানতে চেষ্টা করলাম! বলা চলে মিঃ মোদী, মিঃ অমিত শাহ সহ প্রায় নানান প্রদেশের বড় বড় রাজনীতিকদের কথা শুনলাম, পাশাপাশি মমতা ব্যানারজী, মিঃ কানাইয়া সহ সাধারণ মানুষের বেশ কথা, ভিডিও শুনলাম! মিঃ মোদী গং যা বলতে চাইছেন তা হচ্ছে, ভারত তথা হিন্দুস্থান ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়েছে, ভারত হিন্দুদের এবং সেখানে বাংলাদেশ, পাকিস্থান, আফগানিস্থান থেকে নানান ধর্মের (হিন্দু ছাড়া বা হিন্দুরা, সাথে মুসলিম অ অন্যান্ন ধর্মের) লোকেরা যেয়ে বসত গড়েছে এবং তারাই এখন হিন্দুস্থানের মালিক হয়ে যাচ্ছে, যা হতে দেয়া যায় না! ইত্যাদি ইত্যাদি মানে/ফলে এখন অনেক প্রদেশের মানুষের নাগরিকত্ব ঝাছাই বাছাই করা দরকার এবং এতে অনেকের নাগরিকত্ব বাদ পড়বে এবং তাদের সেই স্থান বা দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য বা জেল জরিমানা ইত্যাদি করা হবে! এর ফলে দেশ হিন্দুদের থাকবে এবং তারাই দেশ চালাবে!

যাই হোক, বুঝতে তেমন বাকী থাকে না!

এবার আসুন জনাবা মমতা ব্যানার্জী সহ মিঃ কানাইয়া এবং আরো নানান মুসলিম নেতা বা সাধারণ মানুষ কি বলছে! এই মানুষ গুলো বলছে, দেশে যারা বসবাস করে তারাই দেশের নাগরিক, যারা এক স্থানে ১০০/৫০/৩০/২০ বছর বসবাস করছে তারাই নাগরিক! ১০০ বছর আগে থেকে সে বা তার পূর্বশুরীরা সেখানে বসবাস করছে, সেটাই তার স্থান। এখানে আবার কিসের প্রমান পত্র বা কিসের কি! একটা মানুষ যদি স্থান পরিবর্তন করে অন্য স্থানে বসবাস করে তা হলে কি তার নাগরিকত্ব থাকে না বা সে কি সেই দেশের নাগরিক নন ইত্যাদি ইত্যাদি, খুব সহজে বলা চলে সব সময়েই কি তাকে তার চোদ্দ পুরুষের কাগজ পত্র নিয়ে প্রমান করতে হবে, সে সেখানের স্থায়ী বাসিন্দা! বা এটা কি সম্ভব কারো পক্ষে বা কয়আট মানুষ এমন প্রমান করতে পারবেন!

বুঝে উঠতে পারলে বিষয়টা খুব সহজে মাথায় ধরাতে পারেন!

এবার আসুন আমি আমার নিজের বা আমার পরিবারের/সমাজের উদাহরণ দেই! বাংলাদেশে যদি সরকার এমন একটা কথা বলে ফেলেন তখন আমরা কি করবো বা কিছু করতে পারবো কি! আমাদের চার পুরুষ আমি খেয়াল রেখেছি। আমার দাদা, আমার বাবা, আমি এবং আমার সন্তানদের! দাদাকে আমি মাত্র আমার বয়স ৬/৭ হারিয়েছি ফলে উনার থেকে তেমন কিছু জানতে পারি নাই, তবে শুনেছি উনার বাবার দাদা আমাদের বর্তমান গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন ঘর জামাই হয়ে! মানে দাদার দাদা আমাদের বর্তমান গ্রামে কোথা থেকে এসেছিলেন, সেটা আর আমরা তেমন কেহ জানি না বা তার পরিবার কোথায় ছিলেন, তিনি কার সন্তান ছিলেন তা আর জানা যায় না! যাই হোক, এর পর দাদা দাদুর ছিলো ১০ ছেলে মেয়ে, এই ১০ ছেলে মেয়ের দুর দুরান্তে বিয়ে হল, অনেকে গ্রাম ছেড়ে চলেও গেল! তিন মেয়েদের দূরে বা ভিন্ন জেলায় বিয়ে হয়ে এখন তাঁরা আমাদের গ্রাম আর মনেও করতে পারছে না! বাবা চাচাদের অনেকে উপার্জন ও নানান কারনে বলা চলে গ্রাম ছেড়ে নানান শহরে বসবাস করতে লাগলো! আমার বাবা বড় সন্তান, আমরা চার ভাই বোন, এখন আর কেহ গ্রামে থাকি না, আমি ও ছোট এই ঢাকা শহরে, বড় ভাই চট্রগ্রামে, একমাত্র বোন তার স্বামীকে নিয়ে ইটালি! দাদা দাদু থেকে আমরা এখন প্রায় শ'খানেক এবং এই শখানেক হয়েছি গত ৫০ বছরেই! এদিকে আমাদের এক ছোট চাচা রাগ করে বাড়ী থেকে এই ঢাকা শহরে এসে বিয়ে করেছেন নাটোরে এক নারীকে এবং এখন তিন সন্তান নিয়ে এই শহরেই আছেন, তিনি গত প্রায় ৩৫ বছরে একবারের জন্যও গ্রামে যান নাই! ইত্যাদি ইত্যাদি!

যাই হোক, উপরের প্যারা বা কাহিনী এই জন্য লিখলাম যে, একটা পরিবার বা তার সন্তানেরা কিভাবে কোথায় কোথায় চলে গিয়েছে! এখন আপনি যদি আমার ঢাকার বাসায় এসে আমাকে বলেন, আপনার ১০০ বছরের আগের দলিল দস্তাবেজ দেখান, আপনি কোথায় কোথায় ছিলেন প্রমান করুন! বা যদি আমার চাচার এপার্ট্মেন্টে গিয়ে বলেন, আপনার ৫০ বছর আগের ডকুমেন্ট দেখান, মুলত তিনি বা আমি কি দেখাবো! আমরা যে আমাদের পিতার আবাস স্থান ছেড়েছি অনেক আগে বা তার কোন কাগজ রাখি নাই!

উপরের দুটো প্যারা বুঝলেই মুলত ইন্ডিয়ান বর্তমান সরকারের ক্যাব, এনারসি, নাগরিকত্ব ইত্যাদি বিষয় বোঝা যায়! আমার দাদা যে স্থানে ছিলো আমি যে এখন আর সেই স্থানে নেই বা থাকতে পারি নাই, এটা বুঝলেই এই টার্ম গুলো বোঝা যায়! আমার কাছে কেহ এই সব কাগজ চাওয়া যে নেহাত আমাকে অপমান করা, তাতে কোন সন্দেহ নেই! ঠিক এমনি অবস্থায় পড়ছে ইন্ডিয়ার অধিকাংশ মানুষ! কেহ বিষয়টা বুঝতে পারছে, কেহ বুঝতে পারছে না! পক্ষে বিপক্ষে মত আসছে।

মুলত এটা মানুষের জন্য একটা ভয়াবহ সামাজিক সমস্যা হিসাবে আসছে!

রোহিঙ্গা ইস্যুটাও এমনই এবং এই ইস্যুতেই এই মানূষ গুলোকে বলি দিয়েছে বার্মা! বর্তমান বাংলাদেশে মুলত এমন কোন সমস্যা নাই কিন্তু যদি সরকার এমন ভেবে থাকেন তবে আপনি আমি কি করবো? আপনি কি লক্ষ করেছেন, আপনার চার পাশে যারা আছেন, তাদের অনেকেই নানান স্থান থেকে এসেছেন এবং এখন সবাই একাত্রে থাকেন!

নদী ভাঙ্গা ঘর হারা কোন স্বজন কি কখনো দেখেছেন? ফুটপাতে বড় হওয়া কোন সন্তান কি আপনার চোখে পড়েছে? আপনি যে ভিন্ন শহরে বড় হচ্ছেন, বাবার পূর্বের শহরে যে আপনি কোন দিন যান নাই, তা কি মনে আছে?

আরো পরিস্কার করে বলি, যারা মানুষের এই ভেদাভেদ তৈরী করে নিজদের ইতিহাস বানাতে চাইছেন, এরা মুলত অমানুষ এবং অবিবেচক! এটা এখনো ইন্ডিয়ার সমস্যা হলেও তাঁরা যেভাবে বাংলাদেশের নাম জপছে তাতে আগামীতে আমাদের মধ্যেও এই সমস্যা এসে যেতে পারে।

কাজে কাজেই আমাদের বিবেক জাগ্রত করা উচিত এবং গন মানুষের সমর্থন দেয়া দরকার! (ক্রমশ)

(এই মাত্র সামু ব্লগে প্রকাশিত আমার সহজ চিন্তা, সময় পেলে লেখাটা আরো বড় করা যেত! আপনাদের চিন্তা ভাবনা বলতে পারেন!)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:১২
৮টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×