somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাহাদাত উদরাজী
সাহাদাত উদরাজী'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - 'গল্প ও রান্না' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

গল্পঃ যাপিত জীবন

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনে হচ্ছে, আধা পাগলের জীবন যাপন করছি, একই চেইন দিনের পর দিন! সকালে ঘুম থেকে উঠে গরম জল দিয়ে গোসল, দুইটা পরোটা, একটা ডিম ভাঁজি বা সামান্য সবজি সাথে এক্কাপ চা দিয়ে সকালের নাস্তা। ঠিক ১০টার আগে অফিসে পৌঁছা, সারাক্ষন কাজ (টাকা রুজির যত কলা কৌশল), কাজের ফাঁকে ফাঁকে অনলাইনে থাকা, এটাই সামান্য আনন্দ!

দুপুরে হোটেলে এক প্লেট ভাত, মাছ কিংবা সবজি। সন্ধ্যায় সামান্য পেয়ারা কুঁচি। সন্ধ্যার পরে বিদেশিক যোগাযোগ, বসের ঠেক মেরে বসে থাকা। বলা চলে রাত ৮টার আগে অফিস ছাড়ার কথা চিন্তা করাও যায় না আজকাল। কখনো কোন কোন দিন বেইলী রোডে সামান্য সময়ের আড্ডা, টার্গেট রাত ১০টার পর যেন না হয়! বন্ধু বলা যায় এমন কেহ অবশিষ্ট নেই তেমন!

রাতের ঢাকা দেখতে দেখতে মালিবাগ রেল গেইটে অবস্থান, কখনো হেঁটে, কখনো রিক্সায়। রেইল গেইটের পাশে ফারুকের চা দোকানে মিনিট দশ না বসলে চলে না। তার পর সোজা বাসায়! হাত মুখ ধুয়ে সোফায় এলিয়ে কিছু সময় ইঊটিউবে টেক বিষয়ক বা গান শোনা বা কুকিং প্রোগ্রাম। রাত ১২টার আগে বা পরে রাতের খাবার, আহমরি তেমন কি, এক প্লেট সাদা ভাত সাথে মাছ বা মুরগীর একটা তরকারী বা সবজি। এই তো!

শেষ সময় রাত ১টা, ধমক ধামক দিয়ে ছেলেদের বিছানায় পাঠানো, ওরা আমার চেয়েও বেশী আড্ডাবাজ। মনে হয় আরো কিছু সময় আছে, ধারনা করে ফেইসবুকে বসে পড়ি। ফেইসবুকে প্রথমে চেক করি, অনলাইনের কোন কোন বন্ধুর এক্টিভিটি নেই, তাদের খুঁজে বের করে বাদ দেই, বাদ দেয়ার আগে অনেক চিন্তা হয়, এত বছর সাথে ছিলো, গত এক/দুই বছর নেই, কেন! মারা পড়লো না তো, যে লোকটার সাথে ১০ বছরের বন্ধুত্ব, গত ১/২ বছরে তার কোন স্ট্যাটাস নেই কেন? বিষয়টা খুব ভাবায়! মনে অনেক প্রশ্ন জাগে! হারিয়ে যাওয়া মানুষদের কথা মনে পড়ে, নিজেরও একদিন হারিয়ে যাব ভাবনায় আসে!

এভাবে লাইট বন্ধ করে মুল দরজা জানালার ছিটকানি চেক করে সব রুম গুলো ভেতর চেক দিয়ে, ভেতরের ঘরে চলে যাই, কোল বালিশ জড়িয়ে ঘরে ঘুমের ভান করি, কিছু সময় পরে ঘুম আসে। আমি কয়েক মিনিটেই ঘুমিয়ে পড়তে পারি, আসলে শরীর নিস্তেজ বলেই। বয়সের ভার হয়ত।

দোয়াল ঘড়ি দেখি, মোবাইলে এলার্ম দেই (যদিও এর দরকার হয় না তেমন, শরীর উঠিয়ে নেয় সময়মত)। রাত ২টা, মাথায় অনেক চিন্তা থাকে। সবচেয়ে বড় চিন্তা প্রতি মাসে কমের পক্ষে এক লক্ষ টাকা খরচ আছে, সেই খরচের টাকা উপার্জন করতেই হবে, সাথে কিছু জমানোর চিন্তাও আসে! এতটা বছর এই শহরে কাটিয়ে দিলাম, এখনো বড় কোন সঞ্চয় নেই, স্থায়ী কোন আবাসন নেই, ব্যবস্থা করতেই হবে। শরীরের সমস্যায় টাকা না থাকলে উপায় পাবো না, তাও চিন্তা হয়! এমন আরো কত কি!

আরো ভাবনা হয়, সকালে উঠেই চুলায় ঠান্ডা জল গরম করতে হবে, যদিও আজকাল আর তেমন শীত অনুভব হচ্ছে না! বড় ছেলেকে গতরাতে দেখলাম, ফ্যান চালিয়ে খালি গায়ে ঘুমাচ্ছে!

আর একটা কথা না বলেই নয়, আমাদের বাসায় চারটে দোয়াল ঘড়ি আছে, চারটাতে চার সময়। ড্রয়িং কাম ড্রাইনিং রুমের ঘড়িটা দেখে আঁতকে উঠি, সেটা সব সময়েই ১৫ মিনিট ফাস্ট থাকে! আজকাল এই ফাঁদ ঘরের সবাই বুঝে গেছে, তবে ঠিক করার কেহ নাই! মুল দুনিয়া এমনই, খাবারের লোক আছে কাজের লোক নেই! আর ঘরে আমি সেরা অলস ব্যক্তি বটেই!

বিদ্রঃ সারা দিনের কর্মসুচীতে সামান্য কয়েকটা ঘটনা ইচ্ছা করেই লুকানো হয়েছে মাত্র! সেই ঘটনা গুলো আপনারা কল্পনা করতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০৬
৬টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×