দুনিয়ার নানান মানুষের ধনী হবার কারন জানতে অনেক গুলো তথ্য সহ নানান ভিডিও দেখলাম! কিছু কম্পারিজন মনে দাঁড়া হয়েছে, সেটা উল্লেখ করছি! আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের তথ্য নিয়ে আপাতত আলোচনা করছি না, সে গুলো পরে হতে পারে, আপাতত ইউরোপ আমেরিকা একদিকে, অন্যদিকে এই ইন্ডিয়ার সাবকনটেইন ধরা যাক।
ইউরোপ আমেরিকায় ধনী হতে গেলে একটা বিশেষ মেধা বা ইনোভেশন লাগে, সেই মেধাস্বত্ব তাকে ধাপে ধাপে উপরে নিয়ে যায়। বাংলাদেশ ইন্ডিয়া সহ এই সব দেশে প্রথমেই লাগে প্রতারণা করতে পারার জ্ঞান, এই জ্ঞানেই আর হাতে টাকা আসে।
ইউরোপ আমেরিকায় সামান্য অসততায় বেশ বেকায়দায় পড়ে সব খুয়াতে হতে পারে, ফলে প্রতিটা মূহুর্ত্তেই একজন ধনী নিদিষ্ট আইন বা গন্ডির মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যায়। আর আমাদের এখানে একবার টাকা জমিয়ে ফেলেল আর কে কারে দেখে!
ইউরোপ আমেরিকায় ধনী হতে চাইলে মাষ্ট পজেটিভ মেন্টালিটি এবং নিজের কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, আমাদের এখানে পজেটিভ চিন্তা কি তা হয়ত অনেক ধনীরাও জানে না, আর যারা ধনী হতে চাইছে তারাও এই শব্দ বুঝে না!
ইউরোপ আমেরিকায় ধনী হবার সাথে সাথে একটা সুসজ্জিত দল গঠনের মাধ্যমে বা সাথে কিছু ইনভেষ্টার নিয়ে প্রতিষ্ঠান গুলো পরিচালনার একটা দক্ষ টীম গড়ে ফেলে। আমাদের এখানে নুতন নুতন চামচা বা তেল দিতে ওস্তাদ লোক নিয়োগ দেয়, আর নুতন নুতন ইনভেষ্টটার এনে তাদের টাকাও মেরে খেয়ে ফেলে!
ইউরোপ আমেরিকায় ধনীদের স্ত্রী তাদের সাথে না থাকতে চাইলে সম্পদের অর্ধেক বা এমন দিয়ে একটা দফারফা করে ফেলে, আমাদের এই অঞ্চলে সেই গ্যাত্যা পড়া ঠাডা মার্কা স্ত্রী নিয়েই উক্ত ধনী ব্যক্তি বাকী জীবন কাটিয়ে ফেলে!
মিঃ মাইকেল বলাকি (Michael Blakey) একজন বৃটিশ আমেরিকান বিলিয়নার। ইংল্যান্ডে জন্ম নেয়া এই ব্যক্তি জীবনের শুরুতে একজন বাদক, সং কম্পোজার, রাইটার এবং প্রেডিউসার ছিলেন, পরে আরো আরো বড় বড় কাজ করে এক সময়ে হলিউডে বা ক্যালিফোর্নিয়াতে স্থায়ী হন। জীবনে বহু টিভি অনুষ্ঠান প্রডিউস করে অনেক টাকা কামিয়ে এখন বিলিয়নারের জীবন যাপন করেন, নানান মিডিয়া সহ আবাসন প্রকল্পে তার বিনিয়োগ আছে। তার ফ্যাশন বা কাপড় চোপড় পরা এবং থাকার জায়গা দেখে যে কোন মানুষের চোখ কপালে উঠবে। নিজস্ব বোয়িং, নিজস্ব ইয়ার্ড এবং গাড়ির কালেকশন দেখে যে কোন লোকের মন চমকে উঠবেই। আমি নিজেও তার দীর্ঘ দিনের ফলোয়ার! এখন তিনি সারা বিশ্বে প্রেডিউসার মাইলেক নামে পরিচিত। তার মত এমন লোক দুনিয়াতে থাকলেও তার জুড়ি মেলা ভার, কারন তিনি তার লাইফ ষ্টাইল দুনিয়ার সবাইকে দেখান এবং নিজেও বিশ্বের বড় বড় আবাসন, ঘড়ি, গাড়ি, জুয়েলার্সের ভোগ দেখিয়ে মানুষকে আমন্ত্রন জানান। তার এই কাজটা সহজ নয়।
তবে এর পিছনে একটা গল্প আছে, লেখা না বাড়িয়ে সংক্ষেপে বলি, আরো একজন ফটোগ্রাফার মিঃ আদম (তিনিও ভাগ্য অন্বেষণে বৃটেন ছেড়ে আমেরিকা গিয়েছিলেন) একদিন এক ট্রাফিক সিগ্ন্যালে মিঃ মাইকেলকে দেখেন এবং দেখেই তার মাথায় একটা আইডিয়া খেলে যায়, সেটা ২০১৭ সালের কোন একদিনের ঘটনা। এর পর মিঃ আদম মিঃ মাইকেলের পিছনে লেগে থেকে বোঝাতে সক্ষম হন যে, মিঃ মাইকেল যদি ইউটিউবে চ্যানেল খোলেন এবং তার শখের বিষয়াদি নিয়ে উপ্সথাপনায় আসেন, তবে নিশ্চয় সারা বিশ্বে হিট হবেন।
ব্যাপারটা মেনে নিতে মিলিয়নার মিঃ মাইকেলের কিছু সময় লাগলেও পরে একটা চুক্তিতে আসেন এবং মিঃ আদমকে পার্টনার নিয়ে কাজে লেগে পড়েন, কম সময়েই তার ভিডিও গুলো সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হয় এবং ইউটিউবে মিলিয়ন সাবক্রাইবার পেতে মাত্র কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়। এখনো সেই জনপ্রিয়তা চালু আছে, বরঞ্চ তার এখনকার ভিডিও গুলোতে মিলিয়ন লাইক পড়তে মাত্র কয়েকদিন লাগে, তিনি দেখান আমেরিকার বড় বড় আবাসন, বিলাসী দ্রব্য এবং তার ব্যবহার! মিঃ আদম তার ক্যামেরা নিয়ে তার পিছনে ঘুরেন এবং মিঃ মাইকেল মিঃ আদমকে বন্ধুর মত মনে করে তার জীবনেও পাল্টে দিয়েছেন। মিঃ আদম নিজেও এখন মিলিয়নার হবার পথে।
যাই হোক, মিঃ মাইকেলকে আপনারদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার মুল ইচ্ছা হচ্ছে, তার কিছু স্বাক্ষাতকার, মিঃ মাইকেলের এই স্বাক্ষাতকার গুলো জানলে আপনি বুঝতে পারবেন কি করে ধনী হতে হয় এবং ধনী হয়ে পরে কি করে জীবন যাপন করতে হয়। আপনারা নিজেরা তার ইউটিউবের ভিডিও গুলো দেখতে পারেন। তবে হাস্যমুখ এবং কিছু কথা সবার কাজে লাগবেই। কিছু দিন আগে এক ভিডিওতে তিনি বলেছেন, ধনী হতে চাইলে আগে নিজকে তৈরী করতে হবে মানে নিজের উপর ইনভেষ্ট করতে হবে, নিজকে পজেটিভ ব্যক্তি বানিয়ে তবেই লক্ষস্থির করে কাজে নামতে হবে। নিজস্ব ব্যবসায় বন্ধু, আত্মীয়স্বজন পরিবারের লোকজন আনা যাবে না, সততার সাথে নিজের মেধা নিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। তার কথা গুলো বেশ যুক্তির। আমি সমর্থন করি, ধনী হবার টার্গেট সেট তার কাছে উল্লেখ্য পয়েন্ট, মানে আপনি এই টার্গেট সেট করেই এগিয়ে যাবেন, সাফল্য আসবেই!
যাই হোক, কথা আর বাড়াচ্ছি না, তার এই সময়তে মাত্র কয়েক ঘন্টা আগের সহ সর্বশেষ দুটি ভিডিওর লিঙ্ক দিলাম, বাকীটা আপনারা খুঁজে বের করে দেখতে পারেন। এই সময়ে দুনিয়ার সব চেয়ে বড় বাড়ির নাম 'দ্যা ওয়ান'! দ্যা ওয়ান বাড়ির মালিকের (তিনিও বিলিয়নার) সাথে সাক্ষাৎ এবং নানা প্রসঙ্গে কথা গুলো নিঃসন্দেহে কাজের হবে।
আর একটা ভিডিও দিচ্ছি, দেখুন।
সারা বিশ্ব থেকে তাকে নানান প্রশ্ন করা হয়, তিনি তার জবাব দেন বেশ হাসি মুখেই, সেই ভিডিও গুলো আপলোড আছে, চাইলে খুঁজে বের করে দেখতে পারেন।
দুনিয়া দেখুন, সাথে এই চিন্তাও করুন, আমাদের দেশ কেন হেরে যাচ্ছে! কোথায় আমাদের অভাব। আমি মনে করি, আমাদের দেশের সবই ছিলো, শুধু নেই একজন সুচিন্তার সুশাসক, একজন বিবেচক শাসক পেলেই আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী হতে পারত।
বিদ্রঃ অনেক কানিমার্কা পাঠক এই লেখা পড়ে হয়ত বলতে পারেন, আপনি নিজে কেন ধনী হচ্ছেন না, বা ব্যাকা মুখে বলতে পারেন, আপনার অবস্থা কি! আপনাদের জন্য উত্তর হচ্ছে, অর্থ উপার্জন আমার কাছে আনন্দের বিষয় নয়, আমার বিষয় হচ্ছে লেখা বা তথ্য আপনাদের জানিয়ে দেয়া! সবাইকে শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৭