ক্ষমতায় গেলেই যে দূর্নীতি, ঘুষ, কমিশন, চুরি, ডাকাতি, ব্যাংক লুট করে/খেয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা নিজের করে নিতে হবে তা বুঝতে হলে আফ্রিকান দেশ গুলোর রাষ্ট্র প্রধানদের দিকে তাকালেই বুঝা যায়, কি চকচকে তেলাক্ত চেহারা এই সব আফ্রিকান রাষ্ট্র প্রধানদের, হাতে সোনার ঘড়ি্ পরনে কোট টাই, দামি জুতা, চলাচলে দামী মাসির্ডিজ গাড়ি, এদের একেক জন যেন আমাদের ওকা ফ্যাশনের শতবর্ষী! অথচ আফ্রিকার একেক দেশে একেক রকমের সম্পদ থাকা সর্তেও সাধারন জনগন নিঃস্ব এবং ধুলোয় গড়াগড়ি খায়। বছরের পর বছর দেশ শাসন করে সরকার প্রধান তার নিজের ও নিজের লোকদের ঝোলা ভরলেও সাধারন মানুষের ভাগ্যে তেমন কিছুই রাখে না, এই দূর্নীতিবাজ সরকার গুলোর কারণেই আফ্রিকার সাধারন মানুষের এই দূর্গতি, এরা পাহাড় জঙ্গলে বসবাস করতে বাধ্য এবং এদের নাম নাকি ভিন্নমতালম্বি বা রাইবেল!
গত কয়েক দিন আগে এই আফ্রিকার তেল সমৃদ্ধ দেশ চাদের প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস ডেবি ভাইয়ের অকাল হত্যা মৃত্যু আমাদের চোখের সামনে অনেক কিছু এনে দিয়েছে। ইদ্রিস ভাই মোট ৩০ বছর চাদের প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং এই কয়েকদিন আগে আবারো আরো ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। আমি নিজে অনেক তথ্য দেখলাম এবং সেই সকল তথ্য ভেরিফিকেশন করে কিছুতেই তাকে একজন সৎ এবং দেশ প্রেমিক প্রেসিডেন্ট বলতে পারছি না। চাদ মুলত বেশ বড় একটা দেশ এবং তেল খনি পাপ্তি উলেখযোগ্য ছিলো। তিনি তার ৩০ বছরের এই পদে থাকার কোন সুযোগ দেশের সাধারন মানুষের জন্য করেছেন বলে দেখি না, সব কিছুই যেন নিজের এবং নিজেদের লোকদের জন্য! আফ্রিকার সেরা জীবিত মৃত মিলিয়ে দূর্নীতিবাজদের তালিখায় তার নাম গত বছরেও ছিল ৮ম স্থানে!
আফ্রিকার জিম্বাবুয়ের এক সময়ের প্রেসিডেন্টের নাম তো নিশ্চয় শুনেছেন, হ্যাঁ, রবার্ট মুগাবে! এই লোকেও পুরা ক্ষমতায় ৩০ বছর পার করেছিলো, এবং তার শেষটা ছিলো পালিয়ে সিঙ্গাপুরে চলে আসা এবং সেখানেই হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়! ক্ষমতায় থেকে নিজের ধন সম্পদ আর স্ত্রী, মেয়ে নিয়ে আনন্দ ছাড়া তেমন কিছু করছেন বলে অনেকেই মনে করতে পারে না, অথচ ৩০ বছর একটা বিরাট বড় সময় ছিলো তার হাতে! এই রবার্ট মুগাবে একটা আইন করেছিল যে, যে কেহ তার নামে কোন কুৎসা ছড়ালে বা বলেই জেল কিংবা হত্যা এবং এভাবে বহু মানুষ তার হাতে নিধন হয়েছেও। তাকেও আফ্রিকার সেরা জীবিত মৃত মিলিয়ে দূর্নীতিবাজদের তালিখায় তার নাম গত বছরেও ছিল ৬ষ্ট স্থানে!
রাষ্ট্র পরিচালনায় থেকে সরকার প্রধান এবং তার চেলাদের সম্পদ অর্জন যেন আফ্রিকার দেশ গুলোর একটা ঐতিহ্য! কত প্রেসিডেন্ট এলো গেল হত্যা হল, তবুও সেই ধারাই বেঁচে আছে এবং এটা হারিয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে না! আফ্রিকার সাধারন মানুষের ধুলোমাখা মুখ গুলো আমাদের কত কথা বলে, আমরাও না শুনার ভান করে থাকি!
তবে তবে, শেষে এটা কথা না বলেই পারছি না, যে কোন স্বৈরচার সরকার বেঁচে থাকে দেশের বাইরে কোন না কোন দেশের বা পাশবর্তি দেশের সাহায্য নিয়েই! এই নিলজ্জ বেহায়া সরকার প্রধানেরা তার শাসনামলে সেই দেশকে দুইহাত ভরে দিয়ে যায় এবং বিনিময়ে তাদের মানসিক নিরাপত্তা দেয় সেই দেশের সরকার বা সরকার প্রধান, যদিও শেষ শূন্যই।
আফ্রিকার এমন সব দেশের দূর্নীতিবাজ সরকারের জন্য যে দেশটা কাজ করে তার নাম হচ্ছে ফান্স! হ্যাঁ, তথ্য উত্তাপ তাই বলে। ফান্স আফ্রিকার প্রায় সব দেশের মধ্যেই এমন কাজ করে এবং এখনো ফান্স আফ্রিকার অনেক দেশকে তাদের কলোনী মনে করে, অন্যদিকে প্রায় অনেক আফ্রিকার দেশের ২য় ভাষাও ফেঞ্চ! ফান্স সরকার সব সময়েই এই সব দূর্নীতিবাজদের সাথে থাকে এবং তাদের প্রশয়ে নিজেরা লাভবান হয়, তবে শেষ রক্ষাটা করতে পারে না!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৩২