somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাহাদাত উদরাজী
সাহাদাত উদরাজী'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - 'গল্প ও রান্না' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

কিছু ঘটনাঃ সংক্ষেপে (বুঝে নিতে হবে)

১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চাইলে একটা ভ্রমন কাহিনী লিখে ফেলা যায়, কিন্তু আজকাল বড় লেখা পড়ার মত কাউকে দেখি না। পনর সেকেন্ডের রিল বা সর্টস এখন সবার পছন্দ, লেখাতেও সংক্ষিপ্ত হতে হয়, তবে এখন মানুষের কল্পনা শক্তি প্রখর, এক লাইন পড়েই পুরা উপন্যাস বুঝে ফেলতে পারেন অনেকে! চলুন মাত্র কয়েক লাইন!

১। যানযট!
যারা মনে করেন এলিভেটর এক্সপ্রেস সহ মেট্রোরেল ইত্যাদি হয়েছে, তাদের বলি একবার শুধু বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক পর্যন্ত একবার আসা যাওয়া করে আসেন! গতকাল এলিভেটর ধরেও আমাদের যেতে লেগেছে ৪ ঘন্টা, আসতে সাড়ে তিন ঘন্টা। এলিভেটর এক্সপ্রেস ধনীদের একটু গতি বাড়িয়ে গাড়ি চালনা ছাড়া আর কিছুই মনে হয় নাই! (ছবিটা ভিন্ন রাস্তার)



২। বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক!
বিশাল জায়গা নিয়ে অবস্থিত। সামনেও বিশাল জায়গা, এখানে গাড়ি পার্কিং ফি ১০০টাকা, প্রবেশ ৫০টাকা, ভেতরে গাড়ি দিয়ে দেখা ১৫০টাকা! কি কি দেখলাম!
ক. গোটা ২০ জেব্রা, খ. কয়েকটা গয়াল ও অফ্রিকান হরিন, গ. খুব দূর্বল একটা সিংহ মামা (যার ছবি তুলতে গেলে বার বার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে), ঘ. দূর থেকে ঝপসা একটা সাদা বাঘ ও ঙ. কিছু দূর্বল রোগা হাড্ডিসার পাহারাদার (প্রানীগুলো যেমন দূর্বল তেমনি)! এই সাফারী পার্ক দেখতেই হবে তেমন না, আপনি আফ্রিকার কোন একটা সাফারী পার্কের ইউটিউব ভিডিও দেখলেই আরো বড় ধারনা নিতে পারবেন।



৩। জয়দেব পুরের চৌরাস্তার কাছে রেষ্টুরেন্ট এন্ড বার!
আসার পথে বেশ যানজট পড়েছিল, শুধু জয়দেবপুর চৌরাস্তা পার হতেই এক ঘন্টার বেশী সময় লেগেছিল। রাস্তার পাশেই একটা রেস্টুরেন্ট ও বার দেখলাম, সাইন বোর্ডে! আমার মনে হল, এই যানযটে কেহ চাইলে এই বারে প্রবেশ করে কয়েক পেগ মেরে আবার রাস্তায় চলে আসতে পারবে, খুব সুন্দর ব্যবস্থা!

৪। মটর সাইকেলে যাতায়ত!
দেশে বিরাট একটা শ্রেণীর জন্ম হয়েছে, যারা এখন প্রতিদিন কয়েকশ মাইল মটর সাইকেল না চালালে ঘুমাতে পারে না! হা হা হা, গাজীপুর, রাজেন্দ্রপুর, শালবন বা ময়ন্সিঙ্ঘ রোডের নানান ফ্যাক্টরির সিনিয়র অফিসারেরা প্রতিদিন এভাবে ঢাকা থেকে যাতায়ত করে থাকে। এদের বিরাট সাহস এবং মাঝাকোমর বেশ শক্ত! (ছবিটা ভিন্ন রাস্তায় টোল প্লাজার)



৫। রাস্তায় এই সব কি হচ্ছে, জেলখানা নাকি!
টঙ্গী থেকে গাজীপুর জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তায় মধ্যদিয়ে এই সব কি বানাচ্ছে? অনেক ভেবেও কুল কিনারা পাচ্ছি না। দুনিয়ার এত দেশের রাস্তাঘাট দেখলাম কিন্তু এই সব দেখে হিসাব মিলাতে পারছি না! আড়াআড়ি পিলার দিয়ে উপরে ছাদ, টানা লম্বাটে ঘর, এই সব কি! যদি কেহ জানেন তবে একটু বুঝিয়ে দিয়েন! এই নিয়ে একটা ভিডিও ব্লগ বানানো যেতে পারে!



৬। বিল্ডিং ধনীদের দুঃসময়!
পুরা গাজীপুর থেকে ময়মন্সিঙ্ঘ যেতে রাস্তার দুইধারে হাজারো ফ্যাক্টরী বিল্ডিং চোখে পড়ে। কাছ থেকে দেখলাম অনেক ৮/১০ তলা বিল্ডিং (এই গুলো গার্মেন্ট কলকারখানার উপযুক্ত) খালি, বাতি জ্বলে না এবং দেখলাম বড় ব্যানারে লেখা, 'ভাড়া হবে'! বসে বসে চিন্তা করলাম, এই যে এত বড় বিল্ডিং, বানাতে কমের পক্ষে ৫০ থেকে ১০০ কোটি টাকা লেগেছে, এই টাকা এখন পুরাই জলে! ভাড়া না হলে এই টাকার কি হবে? যারা এখানে বিল্ডিং বানাতে ইনভেষ্ট করছে তাদের তো এখন কান্নার কথা! এভাবে ৫/৭ বছর পড়ে থাকলে বিল্ডিং টেম্পারমেন্ট নষ্ট হয়ে এক সময়ে ব্যবহারের অযোগ্য হয়েই যাবে! কি নির্মম অর্থের অপচয়! ধনীরা এটা সইছে কি করে?



৭। টাইলসের মাছ বাজার!
আপনি কি কখনো মাছ বাজার দেখেছেন? মাছ বিক্রির ধরন বুঝেন নিশ্চয়! একটা মাছ বাজারে ঢালা খুলে মাছ বিক্রির মত করে এখন ভাবানীপুরের মৌলাপাড়ায় গড়ে উঠেছে টাইলসের বাজার। শত শত দোকান, আমি জায়গাটা দেখে অবাক হয়েছি। টাইলসের সুপার মার্কেট এখানে। কৌতুহল হয়ে কয়েকজন দোকানীর সাথে আলাপ জমালাম, তারা জানালেন এই বাজারের টাইলস সারা বাংলাদেশে যায় এবং এরাই হচ্ছে হোলসেইল দোকান। দেশে নাকি টাইলসের ৪০টার মত ফ্যাক্টরী আছে এবং এই এলাকাতেই নাকি ২৯টা ফ্যাক্টরী, ফলে ফ্যাক্টরি এদের কাছে সরাসরি মাল বিক্রি করে, তারাই সারা বাংলাদেশে এজেন্ট দিয়ে বিক্রি করে, পুরাই অবাক, না দেখলে কল্পনাও করতে পারবেন না, এর একটা ভিডিও করেছি, অন্য কোন দিন এলাবোরেট করে লিখবো, এখানে টাকা হাওয়াতে উড়ছে, স্থানীয় যারা একটু বুদ্ধিমান তারা ধরে ব্যাগে ভরছে বলে মনে হল!



৮। চলন্ত রাস্তায় বিকাশে বিদ্যুৎ বিল প্রদানে আমিই প্রথম ব্যক্তি!
১১ তারিখ পার হয়ে যাচ্ছে কিন্তু গত মাসের বিল এখনো অনলাইন হয় নাই, মনে হতে বিকাশ দিয়ে চেক করলাম, দেখি বিল এসেছে ১,৬২৫টাকা! এত কম বিল বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিলো, গত ৫ বছরে এটাই আমার সর্বনিন্ম বিল বলে মনে হল! গাড়িতে বসেই (তখন সন্ধ্য ৬টা ৩৫মিনিট, জয়দেবপুর চৌরাস্তায় সেইধারে) বিল পেমেন্ট করে দিলাম! পাশে বসা বন্ধু আড় চোখে চেয়ে জানালো, বিল পেমেন্ট করে দিলি! আমি হেসে বললাম, সময় কাজে লাগালাম বন্ধু! এভাবে চলন্ত পথে বিকাশে বিদ্যুৎ বিল পেমেন্ট মনে হয় আমিই প্রথম! আমাকে কি একটা পুরুস্কার দেয়া যায় না!



৯। এফএম রেডিও বিষয়ক!
চলন্ত পথে আমার এফএম রেডিও শুনতে বেশ আনন্দ লাগে। গতকালও এভাবে শুনে সময় কাটাচ্ছিলাম। একটা এফএফ রেডিওতে 'নাটবল্টু' নামের দুইজন এংকরের কথা শুনছিলাম। আমি এই ছেলেদের চুম্মা দিতে চাই, কথা পিঠে কথা, যে কোন বিষয় নিয়ে কথা গান বানিয়ে ফেলা চমৎকার লাগে। তবে গাঁজা না টেনে এরা কি করে এমন উপস্থাপনা করে, মনকে এত উৎফুল্ল রাখে! এদের সম্ভবত 'রেডিও জকি' বলে। অনেক মানুষ এদের ফোন করে, গান শুনায়, মেসেজ পাঠায়, তারা তা উত্তর দেয়! গাজীপুর চৌরাস্তা থেকেও শুনলাম কয়েকজন মেসেজ দিয়েছে, তারাও নিশ্চয় আমার সাথে এই জকিদের কথা শুনছে! এরা আজব আজব কথা বলে, যা আপনি আমি কখনো কল্পনাও করতে পারি না! (ছবিটা বিবিসি বাংলা থেকে নেয়া)



১০। ট্রাক-ড্রাইভার দুলাভাই!
দেশের সেরা সন্তান গুলো ট্রাক লরী চালায়! আমি এদের দুলাভাই বলি, এদের স্ত্রীরা আমার বোন। এক শহর থেকে অন্য শহরে রাত দিন নেই, ছুটে চলাই এদের জীবন। আমার কাছে এদের জীবন অবাক লাগে। আমার স্কুল লাইফের ইচ্ছা ছিল একজন ট্রাক ড্রাইভার হবার, সেটা পারি নাই। তবে এক রাতে আমি একজন ট্রাক-ড্রাইভারের সাথে বসে চট্রগ্রাম থেকে ঢাকা এসেছিলাম, বিচিত্র অভিজ্ঞতা! শুনাবো আরেকদিন! গাজীপুর ময়মন্সিঙ্ঘ হাইওয়ের পাশে এমন হাজারো ট্রাক-ড্রাইভারের জীবন ইতিহাস, যারা ফ্যাক্টরি থেকে মাল বের করে দেশের নানান উপজেলায় বের হয়ে পড়ে!

* উপরের ঘটনা গুলো পড়ে মনে হতে পারে আমার গাড়ি আমি চালিয়ে সাফারী পার্কে গিয়েছি এসেছি, আসলে তা নয়। গাড়ীটা আমার এক বন্ধুর, সে নুতন গাড়ি কিনেছে। ভাল বন্ধু হিসাবে সে আজকাল আমাকে নিয়ে এদিক সেদিক বের হচ্ছে। তবে আমাকে সাব-ড্রাইভার বা হেল্পার বলতে পারেন, তার পাশে বসে রাস্তা দেখানো আমার কাজ, আমি যেভাবে যেতে বলি, যে লেইনে চালাতে বলি, আস্তে জোরে যেভাবে বলি, সে সেভাবেই চালায়! আমি মাঝে মাঝে গুগল ম্যাপ দেখি আর রাস্তায় কোথায় লাল নীল তা বুঝতে চেষ্টা করি!

(প্রায় সব ঘটনার ছবি ভিডিও আছে, চাইলে দেখাতে পারবো!)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×