জ্বি, যাবে, একটা বসাইয়া পুরা বিল্ডিং কাম চালাইতে পারবে! সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একটা ‘ডিভাইস’ (যন্ত্র) থেকে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মিটার পর্যন্ত ইন্টারনেট পাওয়া যাবে। গ্রামে তা ৫০ থেকে ৬০ মিটার পর্যন্ত হবে। এক ব্যক্তি কিনে বা একাধিক ব্যক্তি সমিতি আকারে কিনে তা ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে পারবেন।
যাই হোক, নূতন প্রযুক্তি এলেই কিচছু মানুষ আছে কাই কাই করে উঠে, পরে তারাই সেটার ব্যবহারকারী হয়ে উঠে! কিছু উদাহরণ দিলে বুঝা যাবে। মোবাইল নিয়েই আলোচনায় থাকি!
মোবাইল ফোনে বাটন ফোনের স্ক্রীন বদলাতে থাকলো, একটু বড় একটা কিনে ফেললাম। বেইলী রোডের অনেক বন্ধু হাতিয়ে বলে কি দরকার, অহেতুক, ছবি তো ক্যামেরা দিয়েই তোলা যায়। ফিলিফসের একটা কিনলাম, ৩০ সেকেন্ড ভিডিও করা যায়। আমার এক টাউট কিছিমের আত্মীয় হাতে নেড়ে চড়ে বলল, রাইতে কি ভাবীকে নিয়ে ভিডিও করবেন! থাইল্যান্ড থেকে লিনেভো ৮ ইঞ্ছির (সম্ভবত) মোবাইল এক বন্ধুকে দিয়ে আনালাম, সেটা দেখে কেহ এক্সেপ্ট করলো না, পকেটে রাখেন কি করে!
ইয়াহু মেসেঞ্জার অরকুট পার করে ফেইসবুক ইউটিউব বেশ দেখা হচ্ছে, এমন সময় স্যামসং নোট সিরিজ এল, সাথে কলম, কিনে ফেললাম। ওমা এটা দেখে তো অনেক বন্ধু বলল, অহেতুক পুরাই, কলম দিয়ে কি করবে!
চলার পথে এমন অনেক উদাহরণ আছে, সব লিখলে সাগরের পানি কালি হলেও কম পড়বে! সাগর তলের নেট কানেকশন প্রথমবার বাংলাদেশ সংযুক্ত হতে পারে নাই, কারন সেই সময়ের সরকার প্রধানকে বুঝানো হয়েছিল, দেশের সব ডাটা লুট হয়ে যাবে! হা হা, বেচারীকে এখনো এই খোটা সুন্তে হয়! আর আরেকজন প্রায় বলত, আমি মোবাইল ঘরে ঘরে দিয়েছি, যদিও এই কথা আশালীন এবং অসুন্দর!
যাই হোক, লেখা বড় না করি! উপরের অনেক বন্ধু আত্মীয় এখন সেরা সেরা ফোল্ডিং ফোন ব্যবহার করে, রাইতদিন ২৪ ঘন্টা মাথা নিচু করে মোবাইলের দিকে চাইয়া থাকে! দেড় সেকেন্ডের জন্যও মাথা তুলে না!
এবার একদম নিজের বাসায় আসি, আমার প্রিয়তমা স্ত্রী আমার কম্পিউটার মোবাইল নেট ব্যবহার দেখে প্রায় বিরক্ত হতেন, বিশ্রী কিছু কথাও বলতেন! হা হা হা, কয়েকদিন আগে বলেন, টিকটক কেন দেখো! আমি অবশ্য উত্তর দেই নাই, তিনি এখন যে মাত্রায় ফেইসবুক ইউটিউব দেখেন তা আমার চেয়ে কম না, পুরাই নেশার মত! তবে যে কথাটা চেপে নাস্তা সেরে উঠেছি তা হচ্ছে, "মনা তুমিও একদিন টিকটক দেখবেই না, নিজেই ভিডিও করে আপলোড দিবে, টিকটক করার সব গুণ তোমার মধ্যেও আছে"!
নুতন প্রযুক্তিকে সব সময়েই হ্যাঁ বলুন, দুনিয়া এখন প্রযুক্তির, গ্রাম উপজেলাতে বসে লাখ লাখ টাকা কামানোর মানুষের অভাব এখন নেই, সারা বিশ্বে তো বটেই! ঘরে বসেই সারা দুনিয়াতে নাম কামানোর লোকেরও অভাব নেই। নেপালের এক নরসুন্দরকে চিনি, যিনি চুল কাটার ভিডিও দিয়েই কোটিপতি, আমাদের নরসুন্দর আখতারকে তো সবাই চিনেন, যিনি এখন সাকিব খানের চুল কাটেন মাসে একবার, যা দিয়ে নাকি তিনি পুরা মাস চলতে পারেন! প্রযুক্তির সাফল্য এটাই, বাহারী জ্ঞান থাকলে সেটা উন্মুক্ত করে সবার কাছে! প্রযুক্তিতে হার্ডোয়ার জরুরী বিষয়, এখানে ইনভেষ্ট করা অপচয় নয়!
আরেকটা বিষয়, যা নিয়ে আরো একটা বড় লেখা লেখা যায়। আমাদের দেশে বিদেশীদের বসবাস, আমাদের দেশে বসবাস বা কাজ করতে আসা লোকেদের যথাযত সন্মান দিতেই হবে, এটা এখনকার যুগে আরো গুরুত্বপূর্ন। বিদেশী দেখলে ঝাপিয়ে পড়ার দরকার নেই আবার কুর্নিশ করারও দরকার নেই, তাদেরকে আমাদের মত করে চলাচল সহ যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিতে হবে, যেভাবে ওরাও আমাদের প্রবাসীদের করে থাকে!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০২৫ দুপুর ২:২৫