এইটা গল্প না, এইটা হল কল্প, কাজেই যারা রেগুলার গল্প পড়ে অভ্যস্ত তাদের পছন্দ না-ও হতে পারে।
==============================================================
গ্রামের ভিতর দিয়ে ইউনিয়ন বোর্ডের পাকা রাস্তা, ভাংগা চোরা লক্কর মার্কা এক যাত্রিবাহী বাস ছুটে চলছে সেই রাস্তা ধরে। বাসের ড্রাইভার (ওস্তাদ) এবং কন্ট্রাক্টর (চ্যালা) ছাড়াও যাত্রীর সংখ্যা হবে হাতে গুনে ১০/১২ জন। শরৎকালের ভর দুপুর। রাস্তা থেকে দূরে, পুকুর পাড়ে মসজিদের ঘাটে বসে আছে খগ (এই কল্পের খলনায়ক)। কল্পনায় নিজেকে চ্যালার যায়গার দেখতে পায় খগ, এক হাতে বাসের দরজার হাতল ধরে ধুলতে ঝুলতে আরেক হাতে বাসের গায়ে ছন্দ তুলে থাপড় দিতে দিতে একধরনের উত্তেজনায় দ্রুত গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সে। ধলপুরের মোড় পেরিয়ে বাসটা ঘন গাছের আড়ালে হারিয়ে যাওয়া পরও কল্পনায় এগিয়ে যাতে থাকে খগ। বাসের যায়গায় এখন প্রাচীন কালের কাঠের তৈরি এক যুদ্ধজাহাজে সাওয়ার হয়েছে সে। সুবেদার শায়েস্তা খাঁর নৌবাহিনীর নাবিক হয়ে মগ জলদস্যুদের ধাওয়া করে মেঘনা নদী ধরে দক্ষিন-পূর্ব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে খগ। খগের ক্ল্পনার কামানের গোলা ছুটে গিয়ে মগদের এক জাহাজে আঘাত হানে, জাহাজের মাস্তুল সহ কেবিনের কিছু অংশ ছিড়ে গিয়ে ঘুরতে ঘুরতে অন্যপাশে পানিতে গিয়ে থপাস করে পড়ে ঢেউ উঠায় । খ্যাঁক খ্যাঁক করে শয়তানি হাঁসি হেঁসে উঠে খগ। উড়ে গিয়ে মগদের জাহাজে লুটপাট আরম্ভ করে সে। মগ সর্দারের গলায় পা রেখে পাটাতনের নীচে শিকল বাঁধা সিন্দুকের দিকে চকচকে চোখে তাকিয়ে দেখা মাত্রই.....।
খলাৎ করে শব্দ হয় পুকুরের পানিতে, লাল রংএর এক কার্ফিউ মাছ লাফিয়ে উঠে আবার ডুবে যায়। কল্পনা থেকে বাস্তবে ফিরে আসে খগ। আগামী কালকে শহরে ফিরে যেতে হবে চিন্তা করে বিরক্তিতে ভ্রু কূঁচকে উঠে। অলস ভাবে উঠে দাড়ায় খগ। কয়েক জায়গায় তালি যুক্ত স্পন্জের স্যান্ডেলের ভিতর শীর্ণ পা গলিয়ে নেয় খগ। এরপর ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে পুকুর ঘাটের সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে।
================================================================