somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিন্তনের এ বক্তব্যের ব্যাপারে আপনার মতামত কি?

০৫ ই জুন, ২০১০ দুপুর ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রকাশককে ‘নাই’ করে দিয়ে গায়ের জোরে একটা পত্রিকা বন্ধ করে দিলো সরকার
বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক 'আমার দেশ' পত্রিকা মহাজোট সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। সরকারের কাজকর্মের ওপর সংবাদনিষ্ঠ নজরদারি ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার দিক থেকে তুখোড় ভূমিকা রাখবার কারণে দৈনিক আমার দেশ সাংবাদিকতার পরিমন্ডলে দ্রুত নিজের স্থান করে নেয়। জনগণের স্বার্থ রক্ষার দিক থেকে এই ভূমিকার প্রচন্ড অভাব ছিল বাংলাদেশে। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা এবং ছেলে জয়ের বিরুদ্ধে একটা রাষ্ট্রীয় সংস্থা কর্তৃক আনা দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে একটা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে আমার দেশ, তারপর থেকেই সরকার এই পত্রিকাটার ওপর খড়গহস্ত হয়ে ওঠে। ওপরের ছবিতে ওই প্রতিবেদনের অনলাইন সংস্করণ থেকে নেয়া ছবিতে প্রধানমন্ত্রির পুত্র জয় ও তৌফিক এলাহিকে দেখা যাচ্ছে। শিরোনাম, "তৌফিক এলাহী ও জয়ের বিরুদ্ধে ৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ নেয়ার অভিযোগ : শেভরনকে বিনা টেন্ডারে ৩৭০ কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দিতে উৎকোচ গ্রহণের বিষয় তদন্ত করছে মন্ত্রণালয়"
অতিসম্প্রতি দৈনিক আমার দেশ বিডিআর বিদ্রোহ বিষয়ে সরকারি তদন্ত কমিটির রিপোর্টও প্রকাশ করে। সরকার এই অতি গুরুত্বপুর্ণ রিপোর্টটি জনসম্মুখে প্রকাশ করে নি। মনে রাখা দরকার বিডিয়ার বিদ্রোহ ও বিপুল সংখ্যক সেনা অফিসার ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যা কেন্দ্র করে শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি যে ক্ষোভ ও অবিশ্বাস রয়েছে তার কোন সুরাহা করতে পারেন নি শেখ হাসিনা। সেনা তদন্ত রিপোর্ট এখনও প্রকাশিত হয়নি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী ও পর্যবেক্ষকদের প্রতিবাদ উপেক্ষা করে বিচারাধীন বিডিআর জওয়ানদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় হেফাজতে থাকা অবস্থায় হত্যা যে সংবেদনা, সন্দেহ ও জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সেই দিক থেকে দৈনিক আমার দেশ-এর মতো পত্রিকার উপস্থিতি ও মাহমুদুর রহমানে নির্ভীক সাংবাদিকতা ছিল প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনার জন্য বিপজ্জনক। এসব কারণেই পত্রিকাটি রোষানলে পড়ে, এবং অবশেষে পত্রিকাটির সাবেক প্রকাশক হাসমত আলী হাসুকে গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া, একদিনে মামলা দায়ের, একদিনে পত্রিকাটির ডিক্লারেশান বাতিল এবং একই দিনে সশস্ত্র ভাবে একটি দৈনিক পত্রিকা অফিসে ঢুকে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে খুবই কলঙ্কজনক ঘটনা।
চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে যে সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকারের কথা সাধারণত বলা হয়ে থাকে এবং দাবি করা হয় বাংলাদেশের সংবিধান নাকি সেই অধিকার স্বীকার করে -- সেই অধিকার প্রকাশ্যেই দলিত হল। নাগরিক ও মানবিক অধিকারের ফানুস সশব্দে ফুটা হয়ে গেল আমাদের চোখের সামনেই। স্রেফ গায়ের জোরে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে 'আমার দেশ'। তবুও যাঁরা মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রতি ক্ষমতাসীনদের প্রতিশ্রুতিকে এখনও মূল্য দেন, তারা এর নিন্দা করবেন, নিন্দা করছেনও অনেকে। তবে এগুলো কদলির বাইরের খোসা। কাঁচকলার ভেতরতাও যে কাঁচকলা সেটা বুঝতে হলে আমাদের আরো গভীরে নজর দিতে হবে।
যাঁরা 'আমার দেশ' পত্রিকার বিরূদ্ধে সরকারের আচরণের নিন্দা করছেন আমরা তবুও তাঁদের প্রশংসা করি। কিন্তু চিন্তার পাঠকদের জন্য নিন্দা যথেষ্ট নয়। ঘটনার পর্যালোচনা এবং গণশক্তি পরিগঠনের প্রতি লক্ষ্য রেখে কোন দিকে আমাদের নজর নিবদ্ধ রাখতে হবে সেই দিকগুলো নির্দিষ্ট করাই আমাদের কাজ। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতার সঙ্গে নির্বাহী ও বিচার বিভাগের সম্পর্ক, সংবিধান ও আইনের মধ্যে পার্থক্য, বুর্জোয়া রাষ্ট্রে নাগরিক ও মানবিক অধিকারের প্রতি একদিকে প্রতিশ্রুতি অন্যদিকে দিকে তার লঙ্ঘন ইত্যাদি দিক কখনও স্পষ্ট আবার কখনও প্রচ্ছন্নভাবে ফুটে উঠেছে। দৈনিক আমার দেশ-এর ডিক্লারেশান বাতিল, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে মামলা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে এই সম্পর্কগুলোকে যতটুকু সম্ভব আমরা বোঝার চেষ্টা করব। সেই লক্ষে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার আইনী গাফিলতির যে কাহিনী সরকার ও সরকারের সমর্থকরা বানিয়ে ছিলেন তার মর্ম বোঝার জন্য প্রথমে ঘটনাক্রম বোঝা দরকার। ক্রমে আমরা অন্য বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করব।-- সম্পাদনা বিভাগ।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১০ দুপুর ১২:১০
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×