আমি শম্পা (ছদ্মনাম) । মিথিলার কাজিন ।
আমার আসল নাম দিলাম না ।
কারণ আমি মাহমুদুল হাসান রুবেলের মত বোকা নই ।
মিথিলা সম্পর্কে কিছু বলার জন্য এই ব্লগটা আমি ওপেন করেছি ।
আমার বোনটাকে খুব অপমান করা হয়েছে এখানে ।
কী দোষ ছিল ওর ?
আমি এজন্যে প্রধানত দায়ী করি অথরিটি এবং রুবেলকে ।
তার আগে সবার কিছু প্রশ্নের উত্তর দেই যা রুবেল দিতে পারেনি ।
কারণ তা রুবেলের কল্পনার বাহিরে ছিল ।
মিথিলা রক্ষণাত্মক এবং ধার্মিক পরিবারের মেয়ে ছিল । দুই বোন এবং এক ভাই ওরা ।
ও মেজো । ভাই সবার বড় এবং বিবাহিত ।
"মিথিলা" ওর পারিবারিক নাম না । রুবেল ওকে আদর করে এই নাম দিয়েছিল ।
রুবেল ওকে "মিথ" এবং "মিথিলা" নামে ডাকতো ।
রুবেলকে ও খুব ভালবাসতো । কিন্তু রুবেল প্রথমে রাজী হয়নি ।
তবে পরে রুবেলের বন্ধু তাহজিনার কারণে মিথিলা এবং রুবেলের মাঝে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে উঠে ।
মিথিলা ইন্টারনেট একদমই ব্যবহার করতো না ।
মাঝে মধ্যে শুধু ইমেইল চেক করতো ওর ভাইয়ের মেইলের জন্য ।
রুবেল ওকে এই সাইটের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় ।
মিথিলা রুবেলকে খুশি করার জন্য কিছু না কিছু লিখার চেষ্টা করতো ।
বাংলাদেশে থাকার সময় মিথিলা প্রায়ই আমার বাসায় চলে আসতো নেট ব্যবহারের জন্য ।
কারণ আমি বাংলা টাইপ জানতাম ।
ও হাতে লিখে নিয়ে আসতো ।
তারপর দুজনে মিলে সংশোধন করে লেখা দিতাম নেটে ।
এভাবে দুজনের খুব ভালই যাচ্ছিল ।
কিন্তু মিথিলার অসুখের কারণে ওর ভাইয়ের কাছে চলে যায় ।
তখন সব দায়িত্ব পড়ে আমার উপর ।
মিথিলা ফ্যাক্স করে ওর লেখা পাঠাতে থাকে আমার অফিসে নিয়মিতই ।
আর রুবেল কোন লেখা দিলে আমাকে ফোন দিয়ে ওকে পড়িয়ে শোনাতে হতো ।
তারপর বলতো কী মন্তব্য করতে হবে ।
তারপর মিথিলা হঠাৎ করে মারা যায় কিডনি ফেইলারের কারণে ।
জানুয়ারির 20 তারিখের পর ওর বাংলাদেশে আসার কথা ছিলো এক সপ্তাহের জন্য ।
কারণ তারপর ওর কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন এর কথা ছিলো ফেব্রুয়ারীতে ।
সেসাথে ওর জরায়ুতে ক্যান্সারও ধরা পড়েছিল । তবে তা প্রাথমিক পর্যায়ে ছিলো ।
এ বিষয়গুলো রুবেল এবং মিথিলা আংশিকভাবে জানতো ।
নিউইয়র্কে মিথিলার শুধু পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছিল ।
আর এটাই বাচ্চা মেয়েটা মনে করতো ওর অপারেশন হয়েছে ।
আর রুবেলকে আশা দিতো তাড়াতাড়ি দেশে চলে আসবে ।
আর ফোন করে রুবেলকে যা বলতো রুবেল গাধার মত লেখা দিত এই সাইটে ।
এই কাজটা যে রুবেল কেন করতো তা আজও মেলাতে পারিনি ।
মনে হয় মিথিলাকে খুশি করার জন্য ।
নিউইয়র্ক চলে যাবার পর মিথিলার সব লেখাই আমি বাংলাদেশে বসে এই সাইটে পোস্ট করেছি ।
তবে তা অবশ্যই মিথিলার লেখা ।
এখনও আমার কাছে মিথিলার আরো বেশ কয়েকটা লেখা রয়ে গেছে ।
এগুলো আমি রুবেলকে ফিরিয়ে দিব খুব শীঘ্রই ।
সেসাথে মিথিলার আইডি এবং পাসওয়ার্ডও ফিরিয়ে দিব ওকে ।
মিথিলা আমার বোন হলেও আমার চেয়ে রুবেলের অধিকার বেশি মিথিলার প্রতি ।
আর আমি দুঃখিত সাদিক মোহাম্মদ আলম, রাগ ইমন, মাশীদ, সারিয়া তাসনিম এর কাছে ।
কারণ আমি মিথিলার জানের ভালর জন্য মিথিলার অনুরোধে ওদের সাথে চ্যাট করেছিলাম মিথিলা হয়ে ।
মিথিলা প্রায়ই বলতো, "আপু, আমি মরে গেলে ওর কী হবে ? ওকে কে সান্ত্বনা দিবে ? ওকে কে বুঝাবে ? ওর পাগলামী কে ঠেকাবে ?"
ওর এসব কথা শুনলে চোখে মনের অজান্তে পানি চলে আসতো ।
আমি প্রায়ই ভাবতাম ওদের দুজনকে নিয়ে । দুজনই খুব আবেগপ্রবণ ।
মিথিলার কিছু হয়ে গেলে রুবেলের অঘটন ঘটা অসম্ভব ছিলো না ।
তাই আমি মাশীদ, রাগ ইমন এবং সারিয়া তাসনিম এর সাথে চ্যাট করা শুরু করি ।
তিনজনই অসাধারণ মানুষ ।
মিথিলাকে যখন আমি এই তিনজনের সব কথা খুলে বলি ও অনেক খুশি হয় ।
কারণ মিথিলার সবকিছু ছিল রুবেল কেন্দ্রিক । ওকে ছাড়া কিছুই ভাবতো না ।
আর এটা যে ভুল ছিল না মিথিলার । তা আজ প্রমাণিত ।
মিথিলাকে অপমান করার কারণে রুবেল ওর এতদিনের সব লেখা মুছে ফেলল ।
আর সেসাথে নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে নিল ।
ওর মত সৎ একটা ছেলের পক্ষে তা কখনো মেনে নেয়া সম্ভব নয় ।
আমি রুবেলকে পুরোপুরি সমর্থন দেই এ ব্যাপারে । আর সেসাথে ওর কাছে ক্ষমাও চাই ।
জানি আমি ক্ষমার অযোগ্য পাপ করেছি ।
তবে এটা সত্য যা আমি করেছি সব ওদের দুজনের ভালর জন্য ।
আর অবশ্যই মিথিলার অনুরোধে ।
কারণ খুব দুঃখি একটা মেয়ে মিথিলা ।
জীবনে কিছু পেল না । মাত্র 18 বছর বয়সে হারিয়ে গেল ।
মরেও মেয়েটা শান্তি পেল না । ওকে নিয়ে অনেক নোংরামী করা হল ।
রুবেলকে মিথ্যাবাদী করা হলো । আরো অনেককে দোষ দেয়া হল ।
এ জন্য সব দোষ অথরিটির । এরা যে এতো দায়িত্বজ্ঞানহীন ।
কখনো ভাবিনি । কয়েকদিন মিথিলাকে নিয়ে আহা কী সমবেদনা !
আবার কয়েকদিন পর ঘোষণা মিথিলা ভার্চুয়াল !
তারপর কিছু বোকাদের বোকামী ।
আমি বেশ কয়েকদিন শুধু দেখেই গেছি । কিছু বলিনি ।
তবে খুব আহত হয়েছি । সবারই মা,বোন, ভাই আছে ।
আর সবাইকে মরতে হবে একদিন ।
কাকে কি বলবো ?
শুধু রুবেলকে বলি, তুমি মিথিলাকে কোন দোষ দিও না । ও শুধু তোমার ভাল চেয়েছে । আর তোমার ভালর জন্য ও সবকিছু করতে রাজী ছিল । আমি শুধু ওকে সাহায্য করেছি । আমাকে যা বলার বলিও । গালি দিতে চাইলেও গালি দিও । আমি কিছু বলবো না । আমি অনুভব করছি তোমার কষ্টটা । মিথিলার আত্মার শান্তির জন্য তুমি কোন পাগলামি করো না । আর বড় বোন হিসেবে অনুরোধ করবো, আর কখনো নিজের আসল নাম দিয়ে ব্লগ লিখ না । কারণ তুমি সৎ হলেও, সবাইতো তোমার মত না । যারা তোমাকে, মিথিলাকে অপমান করেছে । নিশ্চয়ই একদিন তাদেরকেও অপমানিত হতে হবে । তুমি প্লিজ ভাই চুপ থাকো এবং পড়ালেখায় মন দাও । তোমার সামনে সুন্দর একটা ভবিষ্যত আছে । নষ্ট করে দিও না পাগলামি করে । তোমার যেসব কাজে মিথিলা আনন্দ পেত তা করে যাও তাহলে মিথিলার আত্মা শান্তি পাবে । মিথিলার আরো অনেক অজানা তথ্য তোমাকে দিব । কে কী বললো, এটা ভাবার দরকার নেই । আমরা জানি তুমি কেমন ?
আর অথরিটির কাছে কিছুই চাওয়ার নেই আমার । কিছু চাই না । আমি আমার বোনের আত্মার শান্তির জন্য যখনই এই সাইটে অনলাইন হবো তখনই আমার এই লেখাটা পোস্ট করবো । আমি এই সাইটের কাউকে বিশ্বাস করি না এবং কখনো কারো সাথে কথাও বলতে আমি ইচ্ছুক না । একদিন হয়তো বা আমাকেও মিথিলার মত অপমানিত হতে হবে ।
আমার এই লেখাটা কারো কাছে আত্মপক্ষ সমর্থন না । আমি শুধু বিবেকের তাড়নায় লিখলাম । রুবেলের আমি যে ক্ষতি করেছি তা যদি এ লেখায় কিছুটা উদ্ধার হয় তবে নিজেকে সার্থক মনে করবো । আর অথরিটিকে বলবো, আপনারা দয়া করে আরো একটু সচেতন হোন । কারো জীবনকে এলোমেলো করার অধিকার আপনাদের নেই । নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর যা করার করবেন । আপনারা বুঝবেন না আমার কিংবা রুবেলের কষ্ট । কারণ এমন পরিস্থিতিতে আপনারা পড়েননি । পড়লে এরকম ব্যবহার করতেন না ।
কারো যদি কিছু জানতে ইচ্ছে হয় তাহলে আমাকে ইমেইল করবেন । আমি এখানে কোন মন্তব্য করবো না । কারণ আমি এটা ওপেন করেছি শুধু রুবেল ও মিথিলার জন্য । এই পোস্ট ছাড়া আর কোন পোস্ট দিব না বলে আমি ঠিক করেছি । আল্লাহ মিথিলাকে বেহেশত নসিব করুক এবং রুবেলকে শক্তি দিক যেন সবকিছু মোকাবেলা করতে পারে ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




