মিডিওকার হবার আসলে অনেক যন্ত্রনা। জীবনে বড় কিছু হতে পারবোনা, কিংবা এমন কিছু করতে পারবোনা যাতে মনে হয় এই পৃথিবীতে আসা সার্থক, এই চিন্তাটা খুব একটা সুখকর না। অনেকে আবার এই উপলব্ধিটাকেই কাজে লাগায়...কিছু একটা করতে হবে,,,বলতে বলতে হয়তো কিছুএকটা করেও ফেলে,,,,কিন্তু আমি অনেক অলস বলেই হয়ত থার্ড ইয়ার-এ যখন এই জিনিষ মাথায় আসলো তখন কয়েকদিন দিশাহারা ঘুরেই বেড়ালাম শুধু,,আর যাদের দেখে মনে হত এরা কিছু করতে পারছে তাদের প্রতি হায়রে হিংসা...সিন্ডারেলা-র একটা ভার্সনে গল্পের শেষে ছিল ওর সেই সৎ-মা আর সৎ বোন গুলো ওর সৌভাগ্য দেখে হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরে গেল,,,যদিও এটা পড়ে আমি একটু চিন্তায় ছিলাম হিংসায় জ্বলে পুড়ে মানুষ আসলেই মরে যেতে পারে কিনা, তবে ঐ সময়টায় আমি এমন হিংসিত হয়ে ছিলাম সবার প্রতি যে তখন আমি মোটামুটি ভাবে নিশ্চিত হয়ে গেলাম আমি কয়েকদিনের মধ্যেই হিংসার কারনে মরে যাবার জ্বলন্ত উদাহরনে পরিনত হতে যাচ্ছি! তবে কপাল ভালই বলতে হবে এই অবস্থা বেশিদিন থাকলনা,,,যেইরকম হঠাৎ করে মনে হয়েছিল আমি মিডিওকার, সেইরকম হঠাৎ করেই মনে হল আমি এমন চরম অলস যে আমাকে দিয়ে আসলেই কিছু সম্ভব না। তাই হিংসা করে সময় নষ্ট করে কোন লাভ নাই। আর যেহেতু আমাকে দিয়ে কিছুই হবেনা তাই কোনকিছু হবার চেষ্টা আর চিন্তাও মোটামুটি বাদ দিলাম। বেশ বৈরাগী বৈরাগী ভাব! শেষমেষ আমি সেই মিডিওকার-ই রইলাম কিন্তু কোন আফসোস ছাড়া।মাঝে মাঝে যে মন খারাপ হয়না তা না...তবে সেটা তো সবার-ই হয়!
কালকে মনটা উদ্ভট রকমের খারাপ ছিল,,,কিচ্ছু ভাল্লাগেনা নামক সেই পুরনো রোগ টা আমার। সকাল বেলা তুহি-র অফিসে আটকা পরলাম। তারপর সারাদিন আমার আশেপাশে মানুষের ব্যস্ততা আর তার মাঝখানে আমার চুপচাপ বেকুবের মত বসে থাকা। বের হবার কথা চিন্তা করি আর অমনি শুনি একটা মিছিল গেল, অমুক রাস্তায় অনেক গন্ডগোল, কে কে যেন নিচে গিয়েও ফেরত চলে এল কারন কোন যানবাহন নাকি পাচ্ছেনা। আমিও কোনোকিছু না পাবার চিন্তায়ই বের হলাম না। আমি ভাবছিলাম মানুষগুলো চোখের সামনে মৃত্যুদেখবার পর-ও কি নির্লিপ্ত! তবে সাথে সাথে মনে হচ্ছিল আরে, আমি নিজেও কি নির্লিপ্ত না? তুহি যখন আমার সামনে বসে থরথর করে কাঁপছিল আমি-ই তো তখন ওকে বার বার বল্লাম দোস্ত এইটা কোন ব্যাপার না, এইগুলা রেগুলার হয়ে গেছে, কত কত সান্তনা, কত কত হিপোক্রিসি! ও একটু পর সামলে নিলো কিন্তু আমার মাথা থেকে আর বের হচ্ছিলোনা ব্যাপারটা। একা একা চুপচাপ বসে থাকলে বের হবার কথাও না অবশ্য। সারাদিন এরকম খামখাই বসে থেকে থেকে মনটা কেমন ভোঁতা হয়ে গেল...আর শরীর টাও কেমন ক্লান্ত। মাথাটা কেমন ভোঁতা হয়ে ছিল,,,এর জন্যই হয়তো শুধু শুধু রাতের বেলা আবার সেই মিডিওক্রিসি-র আলোচনা তুলে আনা,,মন খারাপ করা এবং করে দেয়া,,এবং শেষমেষ একটা ক্লান্ত, ভোঁতা মন নিয়ে ঘুমিয়ে পড়া।
আজকে আর লিখতে ইচ্ছা করছেনা। আগে বেশ গুছিয়ে লিখতে পারতাম, আজকাল তাও পারিনা, মনে হয় আগেই অনেক অন্যরকম ছিলাম, মিডিওক্রিসির উপলব্ধির পর থেকেই বোধ হয় মিডিওকার হয়ে যাচ্ছি দিন দিন একটু একটু করে!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



