পরশু যাওয়া হয়নাই হলে। তুহি ফোন করে বলল ও নাকি আমার বাসায় থাকতে আসবে,,তাই হলের প্ল্ল্যান বাদ দিলাম। তুহি আসল 6টার দিকে,, ভাস্কর-ও সাথে সাথেই বের হয়ে গেল। একটু পরেই আসল মিথুন, তারপর তুহি আর মিথুন আড্ডা দিল আর আমি একা একা বই পড়লাম,,মিথুন গেলো 10টায়,,তারপর আমরা খেয়ে শর্মীর সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম অনলাইনে, তারপর তুহি ঘুম! কি বোরিং! আমি একা একা জেগে জেগে ভাবছিলাম ভাস্কর কি করছে,,,দুএকটা উলটোপালটা এসএমএস ,,,ও নিজেও বোধহয় সেটা বুঝে এসএমএস বন্ধ করল। তারপর কখন জানি ঘুমিয়ে পরলাম টেরটাও পেলামনা।
তুহি যখন মিথুন এর সাথে গল্প করছিল,,আমার ঐ একা থাকার সময়টায় কি জানি কি মনে হল,,,মনে হয় একা একা লাগছিল বলেই হয়ত, ধ্রুবকে নক্ করলাম। ওর সাথে কথা বলতে গেলে মাঝে মাঝে আমরা আবার সেই পুরোন আমরা হয়ে যাই। এক মূহুর্তের জন্য আমি আবার হয়ে যাই এইনজেল,,আর ও হয়ে যায় লর্ড। এটা হত প্রথম দিকে বেশি,,,ইদানিং আর হয়না, কিন্তু পরশু রাতে কথা বলতে বলতে হঠাৎ কেমন করে যেন আবার সেই পুরোন দিনে ফিরে গিয়েছিলাম,, দুজনই একসময় সেটা বুঝতে পারলাম,,আর সাথে সাথে দুজনেই চুপ করে গেলাম।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আমার জীবনটা 2005 এর লেইট ডিসেম্বরে শুরু হয়ে 2006 এর লেইট মার্চের মধ্যে আটকা পরে গ্যাছে। দুজন মিলে আমরা একটা অন্য পৃথিবী বানিয়েছিলাম,,একদম আমাদের মত,,ঠিক আমরা যেমন চাই তেমনটা। আমি সারা জীবন স্বপ্ন দেখে গিয়েছি,,কখনো ভাবিনি স্বপ্নগুলো আসলে বাস্তব হওয়া সম্ভব,,কিন্তু সেই সময়টা,, সেই মেঘলা মেঘলা মন খারাপ করা দিনগুলি,,সেই অচেনা শহরে অপ্রিয় একটা মানুষের সাথে থাকা,,সেই সময়টাতে,,,আমি আমার স্বপ্নগুলোর মধ্যেই ছিলাম! আই ওয়জ লিভিং মাই ড্রিমস দেন! সারাদিনের বিরক্তি,, সারাদিনের কষ্ট,, প্রথম স্নো-ফল দেখে দৌড়ে নিচে যাওয়া,,,আবার দৌড়ে উপরে এসে অপেক্ষা কখন লর্ডকে জানাব,,সালামের চোখ ফাঁকি দিয়ে 5 মিনিট পর পর মেইল চেক করা,,মেইল না পেলে মন খারাপ করা,,আবার আচমকা অপ্রত্যাশিত মেইলের অপ্রত্যাশিত আনন্দ,,সবকিছু বলতে হবে,,কি করলাম, কি খেলাম, কোথায় গেলাম, কি কিনলাম, কি পড়লাম, কি স্বপ্ন দেখলাম,,স-ব! আমাদের মত করে আমাদের জগতের স্বপ্ন,,শুধু আমরা দুজন,,আর কেউ না,,,আর কাউকে দরকার নেই আমাদের,,তখন কি একমূহুর্তের জন্যেও ভেবেছিলাম যে আমরা আসলে শুধু স্বপ্নই দেখছি? ভেবেছিলাম হয়ত,,কিন্তু পাত্তা দেইনি একদম। মাঝে মাঝে নিজেকে বিশ্বাস হতনা,,এই বয়সে সেই 17 বছরের মত এত আবেগ কোথা থেকে এল! একদম ভেসে গিয়েছিলাম,,কোন বাঁধ দেইনি,,দেবার চেষ্টাও করিনি।
এখন তো ডিজইলিউজ্নমেন্ট,,আসলে সবটাই স্বপ্ন ছিল। অনেক প্র্যাকটিক্যাল হয়েছি,,ঐ সময়টুকু পার না হলে হয়ত আগের মত নাইভ-ই থেকে যেতাম। এখন কিছুটা বুঝি স্বপ্ন আর বাস্তবের সীমারেখাটা। কিন্তু ঐ সময়টা, আর ঐ সময়টার স্বপ্নগুলোকেই আমি সবথেকে ভালবাসি। জানি কখনো হবার নয়,,তখনো জানতাম,,কিন্তু সত্যিকারের ভালবাসা বলে যদি কিছু থেকে থাকে তবে ঐ দুইমাসেই আমি জেনেছিলাম তার রকমটা!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



