somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ বৃত্তহীন (২য় পর্ব)

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বৃত্তহীন (১ম পর্ব)

আমাদের দেখা হবে আর কোনদিন ?
মনে হয় না...
আবার এটা মনে হয়, যে কোন নারীর মধ্যে আমি তোমায় এখনো খুঁজে বেড়াই ।
হুমম...মনে আছে সেই বৃষ্টিতে ভেজার সন্ধ্যা
তোমাকে বলেছিলাম- নদী মেঘ হয়ে ফিরে আসে আকাশে...
আকাশের সব নীল কষ্ট নিয়ে উড়ে যায় শঙ্খচিল
প্রজাপতি ভুলে যায় তার শূয়োপোকা জীবনের কথা
কিছুই থাকেনা আগের মতন
তবু আমি থাকব তোমার জন্য...
নীলা...
আমার নীল সুখ তুমি
এই কথা বলে একটা চুমু খেতে গিয়ে কফির মগ উল্টে পরেছিল
মানে তুমি লজ্জায় একটু সরতে গিয়ে তোমার হাত লেগে ভেঙে পরেছিল কফির মগ ।
মনে পড়ে নীল ?
আমার নীল...
আজ থেকে তোমাকে নীল বলে ডাকব ।
আজ আমরাও যেন সেই কফির মগের মত চূর্ণ-বিচূর্ণ
তবু কথা হয় এখানে । স্মৃতি তর্পণ করি
এক ধরণের সুখ খুঁজি
সময় যাপন...
কিন্তু জানি , যদি বলি দেখা কর তুমি দেখা করবে না !
হয়ত আমিও...
তবু মজার ব্যাপার কি জানো- তুমি যে রাস্তা দিয়ে ছুটে চল
আমি সেই রাস্তার ধারে ঘাস ফুল হয়ে ফুটে থাকি
তুমি যে দুপুরে একাকি অনুভব কর
আমি সেই দুপুরে তোমার জানালায় মিষ্টি রোদ্দুর হয়ে থাকি
তুমি যদি আজ টিভিতে শাহরূখ খান লাইভ অনুষ্ঠান দেখ
জেনো, আমি তোমার চোখের পাপ্রীর অপলক চেয়ে থাকা !...

নীল...মানুষ খুব একা !
কত ছোট আমাদের জীবন
কতকিছু করা হল না এই জীবনে...
পাওয়া হল না
তবু ভাবি, এই বেঁচে থাকা কত সুন্দর
আবার ভাবি কেন এই বেঁচে থাকা একটা সুন্দর মুহূর্তকে যদি ছুঁতে না পারি ?
সেই সন্ধ্যা সেই বর্ষা...
সেই তোমার-আমার ভেজা
আহাঃ...আমরা চাইলেও ফিরিয়ে আনতে পারব না জীবনে
শুধু এরকম মিথ্যে...শুধুই মিথ্যে কাব্য করে যাব...

দেব্-এর চিঠিটা পড়া শেষ করে নিজের অজান্তেই দীর্ঘশ্বাস ফেলল আনীলা । সত্যিই মানুষ খুব একা ! গভীরভাবে দেব্ কে ভাবার চেষ্টা করল সে...
প্রত্যেকটা মানুষই খুব একা । দেব্ কি খুব একা ? প্রোফাইল ইনফো তে লেখা- কমপ্লিকেটেড আবার ছবির এ্যালবাম এ পারিবারিক ছবি...। আনীলা কিছুটা দ্বীধান্বিত । নিজেকে বোঝালো- দেব্ ব্যাক্তিগতভাবে যা খুশি হোক তাতে তার কোন মাথাব্যথা নেই...এখন দেব্-এর সাথে যে কাল্পনিক কাব্য-খেলায় মেতেছে সে খেলার তাল ঠিক রাখার জন্য মনোযোগি হতে হবে । আনীলা খেলাটা খুব এনজয় করছে । আজ ক্লাসে একটুও মন বসে নি । শুধু ভেবেছে বাসায় ফিরে কখন পিসি অন করে দেব্-এর চিঠি পড়বে । নিজের এরকম কান্ড দেখে নিজের কাছেই অদ্ভুত মনে হল তার । দেব্-এর প্রতি ভালো লাগাটা ক্রমেই বাড়ছে...
এ এক অন্য রকম প্রেম ! কোনভাবেই হয়ত সংজ্ঞায়িত করা যায় না । আনীলার পাঁচ বছর আগের কথা মনে পড়ল । অনূপের সাথে প্রথম পরিচয়ের মুহূর্তটি...। বৈখাখী মেলায় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসরে পরিচয় হয়েছিল দু'জনের । অনূপের কথা মনে পড়তেই আবারো বুকটা হুহু করে উঠল তার । পুরোনো কষ্ট কে এক পাশে সরিয়ে রেখে দেব্ কে চিঠি লিখতে বসল আনীলা-

অবলিলায় নিষ্ঠুরের মত কথা বলার অভ্যাস
এখনো ছাড়তে পারনি !
এ জন্যই তোমার ওপর খুব রাগ হয়...
আমি কি শুধুই অতিত ?
কেন দেখা হবে না আমাদের.....?
প্রতিদিন পথ চলতে গিয়ে শত মুখের ভীড়ে
আজও তোমার মুখ খুঁজি !
ভালোবাসা কি এতই ঠুনকো ?
ভালোবাসা কি বাষ্পিত মেঘ হয়ে দূরের আকাশে হারিয়ে যায় ?...
তুমি খুব নিষ্ঠুরের মত বলতে পার !

তোমার চুমুর ভয়ে আর কফির মগ ভাঙব না ।
এখন আমি বেশ বড় হয়েছি ।
তখন কি ছোটই না ছিলাম !
আমার ঠোঁট দু'টো তোমার ঠোঁটের দখলে নিয়ে
আমার লজ্জা ভাঙিয়ে দিতে
আর আমি তোমাকে ঠেলে সরিয়ে দিতাম...
সত্যিই কি আমরা সেই কফি-মগটার মত চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছি ?

ক্লাস ছিল
এই কিছুক্ষণ আগে ঘরে ফিরলাম ।
আবার সেই এক ঘেয়ে টেবিল-চেয়ার, বিছানা বালিশ...
কম্পিউটার খুলেই তোমার চিঠিটা পেলাম । টের পেলাম দু'ফোটা
অদৃশ্য জল গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ল ।
আমাদের যাপিত জীবন কি এভাবেই যাবে !
.....একা !
খুব একা একাই কেটে যায় কৃষ্ণপক্ষ-শুক্লপক্ষ !
একা একাই কেটে যায় ঋতুর দিনগুলো...


আমাদের দেখা না হওয়াটা কি খুব স্বাভাবিক ?...
আমরা কি শুধুই অতিত !
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:৪৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×