আজকে ভীষন কালো
মেঘ বলেছে আসবে না সে।
লাগছে না তো ভালো!
দূরবর্তী মহাবিপদ
সংকেত এই আজ
মাঝে মাঝে উঠছে ডেকে
গুরু গম্ভীর বাজ ।
বোঝো না তো দুষ্টু মেঘা
তুমি আসলেই তবে
মেঘ কাটবে , রোদ হাসবে
বৃষ্টি যখন হবে!
২৭/ ১২/ ১৯৯২
ঢাকা
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসতে এতক্ষন লাগে?
ঃ আহা, সিলেট থেকে চট্টগ্রাম হয়ে তারপর না ঢাকা এলাম!
ঃ আসতে বলেছে কে? থেকেই যেতে ।
ঃ বৃষ্টি , প্লিজ, মাকে অনেক দিন দেখিনি। মাকে কি একটু সময় দিতে হয় না?
ঃ হয়। যাও, চট্টগ্রাম ফেরত যাও।
ঃ তোমার সাথে দেখা করে তারপর যাই?
ঃ না ।
ঃ বৃষ্টি , প্লিজ। আমি সারা রাত জেগে জার্নি করেছি। ৫ মিনিট দেখা করেই চলে যাব।
ঃ না , আমার সময় নাই। পড়তে বসবো । তাছাড়া আমি ইচ্ছা করলেই বাড়ি থেকে বের হতে পারি না, সেটা তুমি জানো।
ঃ গানের ক্লাসে যাবে না?
ঃ সামনে পরীক্ষা না? আব্বু গানের ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ।
ঃ সর্বনাশ ! এক কাজ করো। বাদলকে ফোন কর, বলো তোমার আব্বুকে ফোন করে বলতে যে তোমার সাহায্য লাগবে ওর।
ঃ ঐ! তোমার জন্য বাদল , আমি মিথ্যা বলবো কেন? ছিঃ !
ঃ তোমার সাহায্য লাগবে না বাদলের?
ঃ তা লাগবে!
ঃ তাহলে মিথ্যা হলো কি করে?
ঃ সেটা স্কুলে দেখায় দিলেও হবে ।
ঃ হা হা হা । বটে ! স্কুল না বন্ধ হয়ে গেছে। পরীক্ষার আগে তো খোলার কথা না!
ঃ ওহ! আমার সব রুটিন দেখি মুখস্থ । কি সুন্দর কথা।
ঃ আমি জানি তুমি ভীষন রেগে আছো। একটু বোঝার চেষ্টা করো।প্রফ শেষ না করে আসা যায়? মেডিকেলের পরীক্ষা খুব কঠিন হয়। আর আমি তো এক মিনিট ও সময় নষ্ট করিনি। পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে সোজা হোস্টেল, ব্যাগ গোছানোই ছিল, নিয়ে রওনা দিয়েছি।
ঃ এত ব্যাখ্যা কে শুনতে চেয়েছে।
ঃ ঠিক আছে রে বাবা। আমি দোষী। এখন বের হও !
ঃ ৫ মিনিটের জন্য আমি বের হতে পারবো না।
ঃ আচ্ছা , তাহলে ৬ মিনিট।
ঃ হা হা হা হা । শয়তান ।
ঃ তোমার জন্য কবিতার বই এনেছি। আর কোয়ান্টাম ফিজিক্সের উপর । গর্ভধারিনী পড়া শেষ?
ঃ হুঁ। আগের বই সব শেষ। লুই পেরেল এর পরের পর্ব পড়ছি এখন।
ঃ তাহলে পরীক্ষার পড়া খুব ভালো হচ্ছে , তাই না?
ঃ হি হি হি । আমি তো স্কুলের পড়ার ফাঁকে ফাঁকে অন্য বই পড়ি না। অন্য বই পড়ার ফাঁকে ফাঁকে সময় পেলে স্কুলের বই পড়ি।
ঃ সাধু সাধু ! তুমি তো দেখি জিনিয়াস!
ঃ হি হি হি হি । মোটেই না। জিনিয়াস হলো, সিজার । ম্যাট্রিকে ফার্স্ট হতে পারলো না বলে কি দুঃখ !! ইন্টারে সিওর ফার্স্ট হবে।
ঃ আরে ধুর! ঐ সব রেজাল্ট শেষ কালে কোন কাজেই লাগে না। তুমি এসব নিয়ে ভাববে না তো।
ঃ হ্যাঁ , এখন তো তাই বলবে তুমি। নিজে তো স্ট্যান্ড করা ছাত্র। তার উপর পড়ো ডাক্তারী । কুরবানীর হাটে তোমার দাম তো ১০ লাখ হওয়ার কথা!!
ঃ হা হা হা হা হা । তুমি না, উফ। কোন দুঃখে যে স্ট্যান্ড করতে, আর ডাক্তারী পড়তে গিয়েছিলাম। সারা দিন তোমার খোঁচা খেতে হয়। তোমার নাম হওয়া উচিৎ সজারু।
ঃ এহ! নিজে তো সৌদি খেজুর । কাছে আসলেই গুঁতা খাই ।
ঃ আর কথার ছুরি দিয়ে কাটলে কি যেন পাও, তাই না?
ঃ এই ধরনের অসভ্য কথায় আমি অভ্যস্ত না, আমি ফোন রেখে দিলাম।
ঃ মাফ করে দাও। আর বলবো না! আমি আসি সামনের মোড়ে? ফুলের দোকানের পাশে? এই ধরো , আধা ঘন্টার মধ্যে?
ঃ ধুত্তুরি। না দেখা করা পর্যন্ত তুমি ফোন করতেই থাকবে, না? আচ্ছা , ঠিক আছে।বই গুলো নেওয়ার জন্য আসা যেতে পারে। ওহ, হ্যাঁ।অজয়ের গান রেকর্ড করেছি তোমার জন্য, ভুলেই গিয়েছিলাম।আচ্ছা, আসো। ক্যাসেট গুলো দিয়ে দেই।পরে আমি আরো ব্যস্ত হয়ে যাব।খবরদার, আমার এস এস সির আগে কিন্তু আর আসবে না, আমি দেখা করতে পারবো না। তুমি আমার অনেক সময় নষ্ট করো। যা বলার , চিঠিতে লিখবে, বুঝেছো?
ঃ জি , যো হুকুম বেগম সাহেবা। পেন্নাম। খোদা হাফেজ।
[চলবে?]
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ৮:৩২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




