somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসলেই মানুষ কি নিয়ে বাঁচে?

০৩ রা জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জীবন মানে কি? জন্ম থেকে মৃত্যুর দিকে এক এক করে এগিয়ে যাওয়ার নামই জীবন। আর এইটুকু সময়ই আমাদের বেঁচে থাকতে হয়, নানা সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে। আমরা মহাকালের তিনটা সময়ের বলয়ে ঘোরপাক খাচ্ছি। অতীতের ফেলে আসা দিন গুলি আমাদের পিছু টানে, আবার অনাগত ভবিষ্যৎ এর কথা ভেবে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পরি। সৃষ্টি কর্তা যে আমাদের সুন্দর বর্তমান কাল উপহার দিয়েছেন, তা একটুও চিন্তা করে দেখি না। আমরা কেউ আপনজন বা প্রিয়জন হারাতে চাই না। আপনজন বা প্রিয়জন হারিয়েও মানুষকে বেঁচে থাকতে হয়। আমাদের পেটে ভুখ লাগে, আমরা প্রকৃতির ডাকে সারা দেই, জীবন চলে যায় জীবনের নিয়মে। অনেক সময় আমাদের অনেক দূঃচিন্তা আমাদের মনের চিলে কোঠায় বাসা বাঁধে। আমরা ভেবে অস্থির হই মা-বাবা হারালে ছেলে-মেয়েরা কি নিয়ে বাঁচবো, অথবা ছেলে-মেয়েরা চলে গেলে মা-বাবাদের অবলম্বনই বা কি রইল? আবার কেউ প্রিয়জনকে হারিয়ে বা খুব আপন মানুষের কাছ থেকে আঘাত পেয়ে হতাশার মধ্যে ডুবে যায়, বেছে নেয় অন্য পথ।

কিছু ঘটনা আছে যা আমাদের জীবনে প্রতিদিনই ঘটে। যেমন গতকাল রাত ৯ টার দিকে একটা ফোন পেলাম। একজন মা-কে বাঁচাতে ৫ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। নইলে বাঁচানো যাবে না রোগীকে। হয়তো এই রকম রোগীর মধ্যে কেউ না কেউ বেঁচে যায়, আবার কেউ না কেউ- না ফেরার দেশে চলে।

ছেলেটির বয়স কতবাই হবে, চার কি সারে চার। কতটুকুই তার স্মরণ শক্তি। সন্ধ্যা হয়ে আসছে, রোদ মাখা সুন্দর দিনটা আস্তে আস্তে কালো আঁধারের অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে। ছেলেটি হসপিটালের সামনের দিকে দাঁড়িয়ে আইসক্রিম বিক্রেতার দিকে তাকিয়ে আছে। ইচ্ছে করছে আইসক্রিম খাবে। এই দিকে হসপিটালের আইসিউতে তা মা। ডাক্তাররা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁকে বাঁচানোর জন্য। ছেলেটিকের মাথায় তখনো সেই দুঃচিন্তা নামক ঐ আবেগটি জড়ো হতে পারেনি, যে কিছু ক্ষণের মধ্যে সে একজন আপন মানুষ হারাতে যাচ্ছে। দূর হতে দূরসম্পর্কের এক ফুপি তা লক্ষ্য করলো, ছেলেটির প্রতি মায়া হলো, মাথায় হাত বুলিয়ে বললো, আইসক্রিম খাবে তুমি? আইসক্রিমের গাড়ির দিকে দৌড়ে গেল। ছেলেটির মুখের হাঁসি, ফুঁপির চোখের কোনে জল জমে গেল।

সময়তো থেমে নেই, সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নেমে এলো। মানুষের জীবনওতো এইরকম আলো নিভে গিয়ে আঁধারের পথে হাঁটা শুরু হয়। তারপর বাড়ির উঠোনে, অনেক মানুষের ভীড়, লাশের চারদিকে নিকট আত্মীয় স্বজনদের ভীড়, কান্নাকাটি। শুধু ছেলেটির চোখে তখনও কান্না নেই। হয়তো বিধাতা তার মায়ের মৃত্যুর পর যে আবেগ থাকার কথা সেই আবেগ মৃত্যুর সাথে তার আবেগগুলো কেড়ে নিয়েছে। সে শুধু দেখছে কাঠের একটি ছোট্ট খাট আর তার উপর সাদা কাপড়ে মোড়ানো একজন মানুষ শুয়ে আছেন।

এই ভাবে রাত শেষ হয়ে ভোর চলে আসে। এই বার লাশ দাফনের পালা। তখন বর্ষাকাল। নদী-নালা পেড়িয়ে বর্ষার পানি বাড়ির পাশের ডোবা, জমি, মাঠ-ঘাটও ডুবিয়ে দিয়েছে। পানি চারদিকে থৈ থৈ করছে। সেই বর্ষার মৌসুমে বাড়ি থেকে কবরস্থান যেতে নৌকার প্রয়োজন হতো। লাশটি নৌকায় উঠানো হলো। ছেলেটি তখনোও লাশের পাশে বসে আছে। নৌকাটি একটু একটু করে কবরস্থানের দিকে এগুচ্ছে। সবার মাথায় সাদা টুপি, সাদা পাঞ্জাবি। অনেকের চেহাড়ায় প্রকৃতির দেওয়া কোমলতা-মলীনতা ফুটে উঠেছে। সবার মুখে মুখে কালেমা শাহাদাত। আশরাফুল মাখলুকাতের চলে যাওয়া প্রকৃতিও তখন নিরবে নিভৃতে অবলকন করছে।

পরিশেষে পথে পরে থাকা পাথর সরানো, সৎ কর্ম বলে পরিগণিত হয়। তাইলে মানুষের জীবন চলার পথে পাথর (বাঁধা) না হয়ে দাঁড়াই। আসুন কারো জীবনে দুঃখ-কষ্টের, এমনকি দীর্ঘ নিঃশ্বাসে কারণ না হই। কারো চলার পথে বাঁধা হয়ে না দাঁড়াই। সবার সাথে সুন্দর ভাবে সৃষ্টি কর্তার প্রেজেন্ট করা প্রেজেন্ট কালকে উপভোগ করি।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১৯ বিকাল ৩:৫৪
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×