somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদি বাংলার ইতিহাস (প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ১৬

১৪ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আদি বাংলার ইতিহাস
(প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ১৬


গাঙ্গেয় প্লাবনভূমিঃ
গঙ্গা নদীর তীর সংলগ্ন বিস্তৃত এলাকা নিয়ে গঠিত এই প্লাবনভূমি যার আয়তন প্রায় ২৩,২১৩ বর্গ কিলোমিটার। সর্পিলাকার প্লাবনভূমি প্রধানত শৈলশিরা, অববাহিকা এবং পুরাতন নদীখাত সমন্বয়ে গঠিত একটি সুষম ভূমিরূপ। গাঙ্গেয় প্লাবনভূমি স্থানীয়ভাবে বর্তমান এবং পরিত্যক্ত নদীর গতিপথ বরাবর অনিয়মিতভাবে গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে, পশ্চিমাঞ্চলে হঠাৎ হঠাৎ পর্যায়ক্রমে রৈখিক নিন্ম শৈলশিরা এবং নিন্মভূমির একটি ধারা গড়ে উঠেছে। প্লাবনভূমিতে গঙ্গা নদী প্রতি বছর বন্যার সময় অব্যাহতভাবে ভাঙ্গাগড়ার মাধ্যমে তার গতিপথ পরিবর্তন করে চলেছে। তবে ব্রহ্মপুত্র যমুনার তুলনায় এই নদী কম চর সৃষ্টি করে। সঞ্চয়কালে গাঙ্গেয় পলল চুনযুক্ত, তবে অধিকাংশ অববাহিকা কর্দম শ্রেণীর। কিছু পুরাতন শৈলাশিরার মৃত্তিকা উর্ধ্বস্তরে চুনমুক্ত। অববাহিকাগুলোতে এবং অধিকাংশ শৈলশিরার শিখরদেশে প্রধানত দোআঁশ মৃত্তিকা এবং কখনও কখনও বালুকা মৃত্তিকার প্রাধান্য বিদ্যমান।২১
গাঙ্গেয় প্লাবনভূমির পশ্চিম এবং উত্তরভাগে মৌসুমি বন্যার মাত্রা প্রধানত অগভীর এবং উঁচু শৈলাশিরার শিখরদেশ স্বাভাবিক বন্যার আওতামুক্ত থাকে। তবে পূর্ব এবং দক্ষিণ দিকে বন্যার গভীরতা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। প্রধানত বৃষ্টিপাত এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর উত্থিত হওয়ার ফলে বন্যা সংঘটিত হয়ে থাকে। এই প্লাবনভূমি এবং এর নিকটবর্তী উপনদী খাতসংলগ্ন এলাকায় বর্ষা ঋতুতে নদীর প্রবাহমাত্রা বেড়ে গেলে অনেক সময় এর ব্যতিক্রম হয়ে থাকে। উত্তর-পশ্চিমের মহানন্দা প্লাবনভূমির কিছু বিচ্ছিন্ন এলাকা এই ভূ-প্রাকৃতিক অংশের অন্তর্ভুক্ত। তিস্তা ও গঙ্গার মিশ্র পলল দ্বারা সৃষ্ট সকল অনিয়মিত ভূ-প্রকৃতি নিয়ে মহানন্দা প্লাবনভূমি গঠিত। মেঘনা প্লাবনভূমির বিচ্ছিন্ন অংশসমূহ প্রধানত পলিমাটি দ্বারা গঠিত এবং মৌসুমি ঋতুতে বৃষ্টিপাতের কারণে গভীরভাবে প্লাবিত হয়ে থাকে। রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও যশোর জেলার বেশিরভাগ এলাকা; সমগ্র কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা জেলা; মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার অংশবিশেষ গাঙ্গেয় প্লাবনভূমির অন্তর্ভুক্ত। ভূ-প্রাকৃতিক এই অঞ্চলটি আকৃতির দিক থেকে প্রায় ত্রিকোণাকার যার দক্ষিণে রয়েছে গাঙ্গেয় জোয়ারভাটা প্লাবনভূমি।গাঙ্গেয় প্লাবনভূমিতে প্রাচীন যুগের প্রথম দিকে জনবসতি ছিল এমন জানা যায় না। রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, যশোহর ও কুষ্টিয়া ব্যতীত বাকি অঞ্চলে প্রাচীন যুগের শেষ দিকে এখানে জনবসতি ও রাষ্ট্রশক্তি গড়ে উঠে। সম্ভবত এই অঞ্চলেদেব বংশ ও চন্দ্র বংশের রাজারা প্রাচীন যুগের শেষ দিকে এখানে রাজত্ব করেছেন। শেষকালে সেন বংশের শাসনাধীনে আসে।

গঙ্গার জোয়ারভাটা প্লাবনভূমিঃ
বহু স্রোতজ নদনদী (tidal rivers)) ও খাড়ির (crecks) সমন্বয়ে দাবার ছক-কাটা ঘরের মতো কর্তিত অনুচ্চ শৈলশিরা এবং অববাহিকা নিয়ে গাঙ্গেয় জোয়ারভাটা প্লাবনভূমি গঠিত। স্থানীয় ভূমির উচ্চতার পার্থক্য সাধারণত ১ মিটারের কম, কিন্তু গাঙ্গেয় প্লাবনভূমিতে এই পার্থক্য ২ থেকে ৩ মিটারের মতো। ভূমি গঠনকারী পলল প্রধানত চুনবিহীন কর্দম জাতীয়, তবে নদীতীরসমূহে এবং পূর্বদিকে নিুতর মেঘনা প্লাবনভূমি সংলগ্ন স্থানান্তরিত অঞ্চল পলিকণাসমৃদ্ধ এবং সামান্য পরিমাণে চুনযুক্ত। সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী ও ভোলা জেলার অধিকাংশ এলাকা এবং সমগ্র ঝালকাঠি ও বরগুনা জেলা গাঙ্গেয় জোয়ারভাটা প্লাবনভূমির অন্তর্গত। তবে দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত সুন্দরবন এই প্লাবনভূমির বহির্ভূত। এই ভূ-প্রাকৃতিক এককটির আয়তন প্রায় ১০,৯৮১ বর্গকিলোমিটার।

গঙ্গা নদী সারা বছর উত্তর-পূর্ব এবং পূর্বদিকে স্বাদুপানি বহন করলেও লবণাক্ত পানি স্থলভাগের দিকে শুষ্ক মৌসুমে পশ্চিমে এবং প্রায় সারা বছরই কিংবা বছরের বেশিরভাগ সময় ধরে দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে ক্রমেই অনুপ্রবেশ করছে। গঙ্গার শাখানদীসমূহ এবং নিুতর মেঘনা নদী উচ্চ প্লাবনমাত্রায় থাকা অবস্থায় প্রধানত বৃষ্টির পানি ভূভাগে আবদ্ধ হয়ে পড়ার কারণে উত্তর-পূর্বাংশে মৌসুমি ঋতুতে পরিমিত গভীরতার বন্যা সংঘটিত হয়। অন্যত্র সারা বছর অথবা মৌসুমি ঋতুতে ভরা জোয়ারের সময় প্রধানত অগভীর প্লাবন সংঘটিত হয়ে থাকে। তবে যে সকল বিস্তৃত এলাকায় বাঁধ বা পোল্ডার দিয়ে জোয়ারসৃষ্ট বন্যা প্রতিরোধ করা হয়েছে সে সকল এলাকা এর ব্যতিμম। উভয়ের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ এলাকা এবং পূর্বাংশের মাটি সারা বছর লবণমুক্ত থাকে, কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মাটি বিভিন্ন মাত্রায় লবণাক্ত হয়ে পড়ে। সমুদ্রগর্ভ থেকে এই অঞ্চলটি সর্বশেষে উত্থিত হয়েছে।

সুন্দরবন অঞ্চলঃ
বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণাঞ্চলের ভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ০.৯১ মি. উঁচু। এই অত্যধিক নিন্মভূমি জুড়ে গড়ে উঠেছে সুন্দরবন এবং সুন্দরবন অঞ্চল নামে পরিচিত পুনরুদ্ধারকৃত চাষের জমি। এই বৃহদাকৃতির মোহনাজ এলাকা অত্যধিক নিচু থাকার পেছনে সম্ভবত দুটি কারণ রয়েছে, যথা- গঙ্গার শাখাসমূহ কর্তৃক অপর্যাপ্ত সঞ্চয়কার্য অথবা ভূ-অবনমন। গঙ্গার প্রধান শাখাসমূহের কোনোটিই কখনও এই অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হতো না। বরং ছোট ছোট কিছু শাখাই বিগত কয়েক শতাব্দী ধরে সঞ্চয়কার্য করে আসছে। এই মোহনা এলাকার গঠনকার্য এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। আবার এটাও ধারণা করা হয় যে,সম্ভবত ভূ-অবনমন প্রক্রিয়া এই এলাকার অত্যধিক নিু হওয়ার পেছনে কার্যকর ছিল। এই এলাকার মধ্যভাগে শেখেরটেক ও বেদকাশি এলাকায় বৃহৎ ধ্বংসাবশেষের অস্তিত্ব রয়েছে। উল্লিখিত এলাকাসমূহে সমুদ্রপৃষ্ঠের অনেক নিচে নৃতাত্ত্বিক নিদর্শন এবং গাছপালার গুঁড়ি পলি দ্বারা চাপা পড়ে গিয়েছে। চকোরিয়া সুন্দরবন নামে পরিচিত সুন্দরবনের একটি বিচ্ছিন্ন অংশ কক্সবাজারে মাতামুহুরী নদীর মোহনায় অবস্থিত। এই এলাকাটি প্রাচীনকালে গঠিত হলেও ক্রমাগত অবনমন হতে থাকায় এ অঞ্চলের ভূগঠন এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। এখানে মধ্যযুগের জনবসতির প্রমাণ পাওয়া গেলেও, প্রাচীনকালের কোনো নিদর্শন পাওয়া যায়নি।

নিন্মতর আত্রাই অববাহিকাঃ
৮৫৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ক্ষুদ্র ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চলটি আত্রাই এবং গঙ্গা নদীর মিশ্র পললগঠিত নন্মিাঞ্চলে অবস্থিত। এই অববাহিকা ভর বা নিচু অববাহিকা নামে পরিচিত। আত্রাই নদীর উত্তরের ভূমিরূপ প্রধানত সমতল, তবে নদীর দক্ষিণে অবস্থিত ভূ-প্রকৃতিতে প্লাবনভূমি শৈলশিরাসমূহ এবং সুবিস্তৃত অববাহিকা বিদ্যমান। মৃত্তিকা বৈশিষ্ট্যে ভারি কর্দমেরপ্রাধান্য রয়েছে, তবে দক্ষিণ এবং পশ্চিমের শৈলশিরাসমূহের মৃত্তিকা দোআঁশ প্রকৃতির। বর্ষায় যমুনার অতিরিক্ত প্রবাহ হুরাসাগর নদীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময়ে এই ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চলের নিষ্কাশন ব্যবস্থা আবদ্ধ হয়ে পড়ে। পূর্বে মৌসুমি বন্যার মাত্রা ছিল গভীর এবং চলন বিলের বিস্তৃত এলাকা সারা বছরই জলমগড়ব থাকত। পরবর্তীকালে ১৯৬০ সাল থেকে পোল্ডার নির্মাণের ফলে এই এলাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থা অনেকাংশে উনড়বতি লাভ করে। তা সত্ত্বেও কখনও কখনও স্থানীয়ভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে কিংবা আত্রাই নদীতে অথবা বরেন্দ্রভূমির সংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট আকস্মিক বন্যার ফলে বাঁধ ভেঙে পোল্ডারের ভিতরে ও বাইরে প্রবল বন্যা সংঘটিত হয়।
২১. K. Bagchi: The Geanges Delta.
আদি বাংলার ইতিহাস (প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ১৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×