somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চীনা বান্ধবী এবং প্রফেসর

০৭ ই মে, ২০১৫ সকাল ৯:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশে থাকতে চীন দেশের মানুষের সংস্পর্শে তেমন একটা আসিনি। মানে আগে তো আমাদের দেশের বিউটি পার্লারগুলো চীনা বংশদ্ভুত পরিবারগুলোই চালাতো। ছোট বেলায় যখন ধানমন্ডির মে ফেয়ার অথবা হংকং বিউটি পার্লারে যেতাম চুল কাটাতে তখন চীনা মহিলাদের দেখেছি। তাদের বাংলাতে একটা অন্যরকম টান থাকলেও, তাদের কথা বুঝতে কখনও অসুবিধে হয়নি। চেয়ার বললে চেয়ারই বুঝতাম, অন্য কিছু নয়।

একবার এক লেখার কাজে এমন এক চীনা বংশদ্ভুত পরিবারের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলাম। ঢাকার ধানমন্ডিতে একসময় অবস্থিত হংকং চাইনিজ রেস্টোরান্ট এবং বিউটি পার্লার ছিল তাদের মালিকানাধীন। সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে দেখি এক চীনা ভদ্রলোক আমাদের দেশীয় লুঙ্গী পড়ে খুব নির্বিকার ভঙ্গিতে সিগারেট টানছেন। জানিনা আমাদের ভড়কে দেয়ার জন্যই কিনা। যাই হোক, পরিবারটির সাথে কথা বললাম, তাদের ব্যবসা, কি করে এই দেশে এলেন এসব সব জানলাম। তারা পুরোনো কিছু পারিবারিক ছবিও দেখালেন। বুঝলাম যে চেহারা, গায়ের রং আর আকারেই শুধু তারা চৈনিক, মনে-প্রাণে তারা নিজেদের বাংলাদেশীই ভাবে। অতএব, বাংলাদেশে সত্যিকারের চীন দেশের মানুষের সান্নিধ্যে আমি কখনই আসিনি।

দেশের বাইরে এসে প্রথম তাদের দেখলাম। একদম ১০০ ভাগ খাঁটি চীন দেশের মানুষ, যাদের কথার ৮০ ভাগই আমি বুঝিনা, ২০ ভাগ টেনেটুনে কোনো রকমে। কপাল এমন যে যেই প্রফেসরের সাথে কাজ করবো তিনিও চাইনিজ। প্রথম প্রথম এতো অসুবিধে হতো। ওনার এক ক্লাস লেকচারে উনি বারবার বলছিলেন Effective, আর আমি বারবার শুনছিলাম Negative! একেবারে ভিন্ন অর্থ দু'টি শব্দের। লেকচারের মানেই বদলে গিয়েছিল! কিন্তু মানুষ পারেনা এমন জিনিষ কম আছে, কারণ কিছু মাস পর আমি ওনার "চৈনিক ইংরেজি" বুঝতে শুরু করলাম।

প্রবাসে এসে খুব বেশি বন্ধু হয়নি আমার। হাতেগোনা যে ক'জন বন্ধুহয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম চেন। চায়নাতে প্রচুর মানুষের নাম নাকি চেন। চেনের ইংরেজি আমার প্রফেসরের চাইতেও ভয়াবহ। ও কি বলে আমি কিছুই বুঝিনা, মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় অনুরোধ করি যেন কাগজে লিখে দেয় ওর বক্তব্য। সদ্য চীন থেকে আসা চেন এর ইংরেজি শুধু আমি নই, অন্যরাও বুঝতে পারে না। কিন্তু কিভাবে কিভাবে এই মেয়েটিই আমার সবচেয়ে প্রিয় বান্ধবী হয়ে উঠেছিল প্রবাসে। ক্লাসের পর অথবা বন্ধের দিনগুলোতে কেনাকাটা করা, বাইরে খাওয়া, বাজার করা সবই চলতো চেনের সাথে। চেনের ইংরেজি সময়ের সাথে সাথে অনেক ভাল হয়ে উঠেছিল। নির্ভুল ইংরেজি লিখতো চেন, ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী ছিল সে। যতসব সমস্যা হত ইংরেজি বলবার সময়। কিছু মাস আগে হঠাৎ ডাকে একটি খাম এসে হাজির। খুলে দেখি চেনের পাঠানো একটি মজার কার্ড। পড়ালেখার পাট চুকে গেছে বহু আগে কিন্তু বন্ধুত্বে ভাটা পড়েনি - চোখের আড়াল হলেও মানুষ হয়তো সবসময় মনের আড়াল হয়না।

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৫ রাত ১:৪৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×