somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সরিয়ে নেয়ার সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত কতোটা যৌক্তিক

২৮ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিডিনিউজে দেখলাম, নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপের দক্ষিণে বন বিভাগ থেকে ৫০০ একর জমি বন্দোবস্ত নিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের শরণার্থী শিবিরসমূহে অবস্হিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সরিয়ে নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।
নেহায়েত সাময়িক ব্যবস্হা হিসেবে এটা করা হলে তাও একটা কথা ছিলো। কিন্তু এটা যদি প্রকারান্তরে স্হায়ী প্রত্যাবাসন হয়ে থাকে, তাহলে এতে বাংলাদেশের কমপক্ষে দুটি আশু পরাজয় ঘটবে।
প্রথমত, ব্রহ্মদেশের দাবী অনুযায়ী আরাকানের ভূমিপুত্র রোহিঙ্গা মুসলিমদের বাংলাদেশে রেখে দেয়ার দাবীর সামনে কার্যত বাংলাদেশের নিস্ফল আত্মসমর্পণ ঘটবে।
দ্বিতীয়ত, আরাকানে রোহিঙ্গাদের স্বাধীন হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে ভূরাজনৈতিক ফায়দা অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ বাংলাদেশ চিরতরে হারাবে। অষ্টম শতাব্দী থেকে আরাকানকে সাজাতে মুসলিমদের যা কিছু অবদান, তা বাংলাদেশের পৌরহিত্যে ধ্বংস হবে।
এছাড়াও এখানে আরো অনেক বিবেচনার বিষয় রয়ে যাচ্ছে। যেমন, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে আমাদের এক শ্রেণীর বিড়াল তপস্বীর অভিযোগ (যাতে কিছুটা বাস্তবতা আছে) হচ্ছে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে বিভিন্ন অপরাধ তৎপরতায় জড়ানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও শ্রমবাজার উভয়ই কমাচ্ছে। আমি ক্ষমাপ্রার্থী, তবে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের আরো ভেতরে হাতিয়া দ্বীপে স্হানান্তরের ফলে উপরিউক্ত সমস্যাগুলো তো কমবেই না, বরং জ্যামিতিক হারে বাড়বে।
তাছাড়া হাতিয়া দ্বীপের জনমিতির স্বাভাবিক অবস্হিতির প্রশ্নও আসছে। হাতিয়া জনবিরল কোন দ্বীপ নয়। সেখানে হুট করে বড় সংখ্যায় বহিরাগত নিয়ে জুড়ে দিলে তা স্হানীয়দের দৈনন্দিন আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডসমূহে প্রভাব ফেলবে। অত্র অঞ্চলে এর সামাজিক কুপ্রভাব হবে মারাত্মক।
আর যদি ভাবা হয়ে থাকে যে, দ্বীপের দক্ষিণে বনবিভাগের ম্যানগ্রোভ জমিতে রোহিঙ্গাদের বসিয়ে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মুখে ফেলে এই অভাগাদের নিশ্চিন্হ করাতেই শর্টকাট সমাধান নিহিত, তাহলে বলবো, আল্লাহ আছেন। মজলুমের কণ্ঠস্বরই আল্লাহর কন্ঠস্বর। স্পেন থেকে মাথা গুনে গুনে মুসলিমদের খুন করার পরও আজ ছয় শতাব্দী পর গ্রানাডা বা কর্ডোবা শহরগুলোতে আজানের সুললিত আওয়াজ ভেসে আসে। আজো টিকে আছে আল হাম্বরা। স্পেনের খ্রীষ্টান মৌলবাদী সরকারগুলো স্বর্ণ যুগের মুসলিম শৌর্য ও ঐশ্বর্যের প্রতীক আল হাম্বরার পর্যটন বেচে রোজগারের জন্য এখন এর রক্ষণাবেক্ষণ করে যত্নের সাথে।
আমরা সোভিয়েত ইউনিয়ন আর যুগোস্লাভিয়ার মুসলিমদের পরিণতিও দেখেছি। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রভাবশালী টিটো ও লেলিনের দেশদ্বয়ের ধ্বংসাবশেষে মাথা উঁচু করেছে মুসলিমরা। আমার আব্বা বলতেন, ইউরোপের মূল ভূখণ্ডে যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এতোগুলো ভূখণ্ড আছে, তা যুগোস্লাভিয়া না ভাঙ্গলে জানতেই পারতাম না!
কিংবা তুরস্কের কথাও বলা যায়! বড্ড গণতান্ত্রিক উপায়ে সে দেশ থেকে ইসলামী তমুদ্দুন ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে চেয়েছিলেন কামাল পাশা ও তদীয় উত্তরাধিকারীরা। সেই গণতান্ত্রিক কাঁটা দিয়েই কামাল পাশার কাঁটা উৎপাটনের কাজ চলছে আজ প্রায় নয় দশক পর এসে, এরদোগান তো কেবল একজন উসিলা মাত্র। ইস্তানবুলের হাজিয়া সোফিয়ায় এখন আবার কোরআন তেলাওয়াত হয়।
যতো দিন গড়াবে, এসব দেশের সাথে আরো নতুন নতুন দেশের নাম তালিকাভুক্ত হতে থাকবে। দোয়া করি, এদেশকে যেন আল্লাহ এভাবে আত্মঘাতী না করেন। দুই পাশে হাজার মাইলে কোন মুসলিম ভূখণ্ড না থাকার পরও আল্লাহ এই বাংলাকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রেখেছেন। সেটাও এমন প্রতাপের সাথে যে, নৃতাত্ত্বিকভাবে আরবদের চেয়েও বাঙ্গালী মুসলিম সংখ্যায় গরিষ্ঠ। বাংলার প্রতি এহেন বিরল রহমতের পেছনে কোন গুঢ় উদ্দেশ্য যদি থেকে থাকে, তবে তার ঝলক যেন আল্লাহ সত্ত্বর প্রকটিত করেন...!
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×