ঘড়িহীন কৈশোরে বিপুল আকাশপটে
হারাতাম অদৃশ্য পাখা ছড়িয়ে
কখন যে ঘুরে গেল সময়ের কাটা
ফুরালো যে অহেতুক পথে পথে হাটা
কিশোর বেলার দিন গেছে হারিয়ে
নাগাল পাবে না আর হাত বাড়িয়ে.....
জীবনের অনেকগুলো বসন্ত পার করে আজকে যখন পিছনের দিকে যখন তাকাই তখন হতাশ হই। সেই সব সোনাঝরা দিনগুলোর কথা ভেবে ভেবে আফসোস হয়। রমজান মাসে যখন নিজের ব্যস্ত জীবনের দিকে দৃষ্টিপাত করি তখন সেই ছোট্টবেলার রমযানের দিকে তাকিয়ে নষ্টালজিক হয়ে যায়।
প্রথম রমজানে চাঁদ দেখার পর বাসায় সবাইকে বলে রাখতাম আমি কিন্তু কালকে অবশ্যই রোজা রাখব। কিন্তু সেহরীতে যখন আব্বু আম্মু ডাকত তখন উঠতেই চাইতাম না। কিন্তু আব্বু আম্মু জানতেন সকালে উঠে ঠিকই কান্নাকাটি করব।তাই জোর করে ঘুম থেকে তুলে দিতেন।
দু চারটে খেয়ে নামায পড়তে যেতাম মসজিদে। মসজিদে বন্ধুদের সাথে পরিকল্পনা করতাম খেলার। নামাযের পর বাসায় এসে দিতাম ঘুম।
ঘুম থেকে উঠতে উঠতে দেখা যেত দশটা বেজে যেত। এরপর বাসায় সবার চোখ ফাকি দিয়ে চলে যেতাম মাঠে। রমজান মাসে আমরা খেলতাম লম্বা খেলা । ২০ -২৫ ওভারের ম্যাচ হতো। খেলতে খেলতে যোহরের আযান দিত। এইসময় খেলা টা কেন জানি বেশি জমতো। বাসার সামনে মাঠ হওয়ায় ডাকাডাকি শুরু হতো নামাযের জন্য।
যোহরের নামাযের পর বাসায় আসার পর আম্মার কড়া নির্দেশ ছিল প্রতিদিন একপারা কুরআন শরীফ পড়তে হবে। তাই কোনরকমে একপারা কোরআন শরীফ পড়ে নিতাম।
আছরের নামাযের পর ছোট্ট একটা খেলা শেষে ইফতার এর আয়োজনে শরীক হতাম।
যেদিন প্রতিবেশীর বাসায় ইফতার পাঠানো হতো সেদিন খেলতে পারতাম না বলে খুব আফসোস হতো।
ইফতার এর পর পড়ালেখা করে চলে যেতাম মসজিদে তারাবীহ নামাযে। আর নামাযে চলতে সবচাইতে বেশি দুষ্টামি।
আহ সেইসব মধুর দিনগুলি.......
আর ফিরে আসবে না।
এখন জীবন ভাসে জীবিকার জলে
স্বপ্নেরা মরে যায় সময়ে তলে
জটিল জলের স্রোতে আছি দাড়িয়ে
হায়রে কিশোর বেলা তোকে হারিয়ে
ঘড়িহীন কৈশোরে বিপুল আকাশপটে
হারাতাম অদৃশ্য পাখা ছড়িয়ে
কখন যে ঘুরে গেল সময়ের কাটা
ফুরালো যে অহেতুক পথে পথে হাটা
কিশোর বেলার দিন গেছে হারিয়ে
নাগাল পাবে না আর হাত বাড়িয়ে.....(সংগৃহীত)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




