জনরাঃ মিস্ট্রি, সুপারন্যাচারাল
পর্বসংখ্যাঃ ১১
ভবিষ্যতের যুদ্ধ-পরবর্তী বিধ্বস্ত জাপান। দেশটির শাসনের ভার মিলিটারীর হাতে, সাময়িক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তারা কঠোরভাবে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্র নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করছে, যার মাঝে ইন্টারনেট ও তথ্য সরবরাহের সকল উৎসও রয়েছে।
এরকম সময়ে টোকিওতে বাস করে ইউকি শিনজুরৌ। তার সম্পর্কে প্রচলিত কথাটি হল, “ডিফিটেড ডিটেকটিভ”, যদিও সে নিজেকে “লাস্ট গ্রেট ডিটেকটিভ” বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করে। এই অস্থিতিশীল জাপানের পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চুনোপুঁটি থেকে শুরু করে রুই-কাতলারা পর্যন্ত করতে থাকে বিভিন্ন চক্রান্ত, যার মাঝে হত্যা থেকে শুরু করে ক্ষমতা দখলের লড়াই পর্যন্ত সবই অন্তর্ভূক্ত। ইউকি শিনজুরো তার অদ্ভুত সঙ্গী ইংগা কে সাথে নিয়ে প্রতিটি রহস্যের তলানি পর্যন্ত যায়, যদিও এর জন্য তাকে বিভিন্ন সময়ে অনেকের রোষানলের কবলে পড়তে হয়। তাও তাকে চালিয়ে যেতে হবে সত্যের অনুসন্ধান, নাহলে যে এক ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে ইংগা! এই পথে ইউকির সাথে কখনো বন্ধু, আবার কখনো প্রতিযোগী হিসেবে কাজ করেন কাইশৌ রিনরোকু, একটি বড় কোম্পানির ডিরেক্টর তিনি, ঘরে বসে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে ক্রাইম সিন পর্যবেক্ষণ করেন তিনি।
১১ পর্বের অ্যানিমে, খুব বেশি ডেভেলপমেন্টের আসলে তেমন সুযোগ নেই, তবে তারপরেও আস্তে আস্তে প্রধান চরিত্রগুলোর ব্যাকস্টোরি রিভিল হয়, ব্যাপারটা ভালভাবেই এক্সিকিউট করা হয়েছে। মিস্ট্রির অংশটা আসলেই অনেক ভাল, হত্যা, চুরি-ডাকাতি বা ষড়যন্ত্র, যাই হোক না কেন, প্রতিটি পর্বেই নতুন নতুন কেস আনা হয়েছে, এবং শেষের দিকে কয়েকটি কেসকে একসূত্রে গেঁথে একটি বড় মিস্ট্রি বানানো হয়েছে, ব্যাপারটা বেশ ভাল লেগেছে। প্রোটাগনিস্ট হিসেবে ইউকি শিনজুরৌ খারাপ না, যদিও মাঝে মাঝে তার আচরণ একটু খাপছাড়া লেগেছে আমার কাছে।
প্রশংসার সাথে সাথে খুঁত জিনিসটাও ওতপ্রোতভাবে জড়িত, এই অ্যানিমেও তার ব্যাতিক্রম নয়! শুরু থেকেই যে জিনিসটা আমার কাছে বিরক্তিকর লেগেছে, তা হল “ইংগা” নামের চরিত্রটি। আপনারা যারা অ্যানিমেটি দেখেছেন, তারা হয়ত বুঝতে পারবেন আমি কি বলতে চাচ্ছি, আমার মনে হয়েছে, শুধুমাত্র ঐ একটা প্রশ্ন করার জন্য এরকম একটা ক্যারেক্টারের আসলে খুব দরকার পড়েনা, অপরাধীর মুখ খোলানোর আরও হাজারটা উপায় রয়েছে। তারপরেও সে একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ অ্যানিমেটির, তাই অস্বস্তিটাও বেশি লেগেছে। এছাড়া মিস্ট্রি যখন সলভ করা হয়, মাঝে মাঝে এক্সপ্লানেশনগুলো খাপছাড়া লেগেছে, কিছু ক্ষেত্রে আরেকটু ডিটেইলড এক্সপ্লানেশন জরুরী ছিল।
অ্যানিমেটির আর্টওয়ার্ক ভাল, ওএসটিও মন্দ নয়, মাঝে পপ আইডল “ইয়োনাগাহিমে” নিয়ে একটি কেস ছিল, সেই কেসটিতে এই (https://youtu.be/mf6VOxXKqus) গানটি ব্যবহার করা হয়, আমার বেশ দারুণ লেগেছে এটি। কাহিনীর গতি ভাল, তবে মাঝে মাঝে একটু বেশিই দ্রুত এগিয়েছে বলে মনে হয়েছে আমার কাছে।
সবমিলিয়ে মিস্ট্রি অ্যানিমে হিসেবে এটি ভালই, ১১ পর্বের ছোট একটা অ্যানিমে, তাই অল্প সময়ের মাঝেই শেষ করা সম্ভব, সিনোপসিস পড়ে ভাল লাগলে একবার ট্রাই করে দেখতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:৫১