জনরাঃ অ্যাকশন, সুপার পাওয়ার, সুপারন্যাচারাল
পর্বসংখ্যাঃ ১৩
অ্যানিমেটির কাহিনী অল্টারনেটিভ সেটিং এর জাপানে; প্রযুক্তি যেখানে বর্তমান পৃথিবীর তুলনায় অনেক এগিয়ে। সেখানকার একটি শহর শিজুমে সিটিতে একটি দ্বীপের ওপর অবস্থিত স্কুল আশিনাকা হাইস্কুল। এই স্কুলেরই এক সাধারণ ছাত্র ইসানা ইয়াশিরো। খামখেয়ালি, কেয়ারলেস এবং ফ্রেন্ডলি স্বভাবের “শিরো-কুন” কে ওর ক্লাসের সবাই বেশ পছন্দ করে। সেজন্য সারাক্ষণ ফাঁকিবাজি করে বেড়ানোটা শিরোর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
ওদিকে শহরের অন্য প্রান্তে রেড কিং এর অধীনস্থ হোমুরা গ্যাং তান্ডব চালাচ্ছে। উদ্দেশ্য, তাদের এক গ্যাং মেম্বারের খুনিকে খুঁজে বের করা। কিন্তু এদের সাথে শিরোর সম্পর্ক কি! স্কুল ফেস্টিভালের জন্য জিনিস কিনতে শহরে এসেই হোমুরা গ্যাং এর রোষের সামনে পড়ল শিরো। কোনমতে তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রাণ নিয়ে পালাতে পালাতে সে গিয়ে পড়ল আরেক বিপদের মুখে। ইয়াতোগামি কুরোহ, বা কুরোইনু নামে পরিচিত এই ব্যক্তিটি হল পূর্ববর্তী কালারলেস কিং এর ফলোয়ার, যার বর্তমান উদ্দেশ্য নতুন কালারলেস কিংকে খুঁজে বের করে তাকে হত্যা করা।
মোটামুটি এভাবে একটি প্রমিজিং স্টোরিলাইন নিয়ে শুরু হয় কে প্রজেক্ট অ্যানিমেটির কাহিনী। এরপরে কাহিনী আরও ডালপালা মেলতে থাকে, একে একে বেরিয়ে আসে প্রতিটি ক্যারেক্টারের ব্যাকস্টোরি। জাপানের আবহাওয়ার ওপর প্রভাব খাটানো “কিং” দের ও তাদের ক্ল্যানসম্যানদের সাথে দর্শকের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, এগোতে থাকে কাহিনী। হোমুরা গ্যাংকে ঘিরে অসম্ভব সুন্দর ও ইমোশনাল কিছু দৃশ্য রয়েছে, এই অংশগুলো আমার নিজের অসম্ভব ভাল লেগেছে।
অ্যানিমেটির সেটিংটা যথেষ্ট ভাল, কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে মাঝে মাঝে এক্সপ্লানেশনগুলো কেমন যেন অসম্পূর্ণ। অনেক ব্যাপারে আরও বেশি ব্যাখ্যা আশা করেছিলাম, যা মুভিটিতেও দেয়া হয়নি, তবে আশা করছি সামনের আপকামিং সিজনে সেগুলোর উত্তর পাওয়া যাবে। এছাড়া কাহিনীটা সহজেই মনকে ছুঁয়ে যাওয়ার মত, বেশ কয়েকটি ক্যারেক্টারের প্রতি মায়া জন্মে গিয়েছে খুব সহজেই। আন্না কুশিনা এবং ইয়াতোগামি কুরোহ- এই দুটি চরিত্রকে আমার খুবই ভাল লেগেছে, তবে ভাল লাগার মত আরও অনেক চরিত্র আছে অ্যানিমেটিতে।
অ্যানিমেটির আর্টওয়ার্ক খুব বেশি সুন্দর, চোখ ধাঁধানো অ্যানিমেশন আর খুব চমৎকার ক্যারেক্টার ডিজাইনের কারণে দেখার সময় অনেক শান্তি লেগেছে, ফাইট সিনগুলো খুব ভাল, আর উজ্জ্বল অ্যানিমেশনের জন্য এই সিনগুলো আরও উপভোগ্য হয়েছে। সেইসাথে সাউন্ডট্র্যাকও অতিরিক্ত সুন্দর; প্রতিটি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক আমার মনে ছাপ ফেলেছে। ক্যারেক্টারগুলোর সাথে মানানসই থিম, ইমোশনাল দৃশ্যতে চমৎকার মন ছুঁয়ে যাওয়া ট্র্যাক এবং ফাইট সিনগুলোতে এক্সাইটিং মিউজিক- সবমিলিয়ে এই অ্যানিমেটার প্রতিটি ট্র্যাকই সুন্দর। এর মাঝে আমার সবচেয়ে পছন্দের ট্র্যাক হল “কিস অফ ডেথ”। (https://youtu.be/ceWxUIQyDaw?list=RDceWxUIQyDaw)
তবে অ্যানিমেটির যে ব্যাপারটি আমার কাছে অতিরিক্ত বিরক্তিকর লেগেছে, তা হল প্রতিটি নারী চরিত্রই ফ্যানসার্ভিসের শিকার হয়েছে। এই ব্যাপারটি না থাকলে অ্যানিমেটি আরও উপভোগ্য হত বলে আমার মনে হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৪