একুশে ফেব্রুয়ারিতে বিদেশীনির মুখে “ আমি বাংলা বালো বাসি” না শুনলে যেন আমাদের একুশের অর্জন ষোল আনার মধ্যে চৌদ্দ আনা মিথ্যে হয়ে যায়।সব বিদেশীই তার নিজের মাতৃভাষাকে ভালোবাসবে।নিজের ভাষা বাদ দিয়ে অন্য দেশের ভাষা ভালোবাসার কারন নেই।প্রয়োজনও নেই।টিভি ক্যমেরায় তারা যাই বলুক বা যাই বলানো হোক না কেন,আমাদের উচিৎ না তাদের দিয়ে এসব প্যাকেজ নাটক করানো।
মানুষ নিজের প্রয়োজনে বিদেশী ভাষা শিখে।বিদেশী ভাষা-দেশী ভাষা সব ভাষার প্রধান কাজ যোগযোগ রক্ষা করা,মনের ভাব আদান প্রদান করা।বাংলাদেশে যেসব বিদেশী বসবাস করে তারাও সে কারনেই বাংলা ভাষা শেখে।কিন্তু একুশে ফেব্রুয়ারি আসলে আমাদের এমন একটা ধারনা দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয় যেন বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে বিদেশীরা দলে দলে বাংলা শিখছে।
নিজ দেশ,ভাষা,ধর্মের প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা তার সাথে অন্যকিছু কে শরীক করা যায় না।এগুলো মানুষের একেবারে নিজস্ব বিষয়।বলা যায় না---আমি বাংলা ও স্প্যানিশ ভাষা ভালোবাসি।বললে তা কৃত্রিম, খেলো শোনায়।তা আমি যত বড় বিশ্ব নাগরিকই হই না কেন।
নেট ঘেটে দেখা গেল বিদেশী ভাষা শেখার অনেক কারন আছে।যেমন--
বিশ্লেষন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
চাকুরি বাজারে প্রার্থীকে মূল্যবান করে তোলে।
সৃষ্টিশীলতা বাড়ে।
বিদেশ ভ্রমন সহজ এবং আনন্দময় হয়।
সমস্যা সমাধানের ,বিমূর্ত ধারনা নিয়ে কাজ করার দক্ষতা বাড়ে।
শ্রবন ক্ষমতা ও স্মরন শক্তি বাড়ে।
বিদেশী ভাষা শিখলে নিজ ভাষার জ্ঞান বাড়ে।
বিদেশী ভাষা শেখা অন্য ভাষার লোকদের সম্মান করতে শেখায় ও উৎসাহিত করে।ভাষা ও মানব প্রকৃতীর মধ্যে সম্পর্ক বুঝতে সাহায্য করে।
সঙ্গিত,কলা,দর্শন,চলচিত্র,বিজ্ঞানের দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়।
বিদেশী ভাষা বিশ্ব সমন্ধে মানুষের দৃষ্টি-ভঙ্গি বড় করে এবং তাকে নমনীয় ও কষ্ট-সহিষ্ণু করে।
বিদেশী ভাষা শিক্ষা, যারা ভিন্ন তাদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করে ও কুসংষ্কার কমায়।
একজন মানুষ কার্যকর ও দায়িত্ববান ভাবে বহু সাংষ্কৃতিক বিশ্বে অংশগ্রহণ করতে পারে যদি সে অন্য আরেকটি ভাষা জানে।
বিদেশী ভাষা শিক্ষা সাংষ্কৃতিক বৈচিত্রতা উপলব্ধির দিকে নিয়ে যায়।
বৈশ্বয়িক অর্থনীতিতে একজনের বিপননযোগ্য দক্ষতা উন্নতী লাভ করে যদি তার আরেকটি ভাষা জানা থাকে।
এরকম আরো কিছু কারন আছে।কিন্তু মোদ্দা কারণ--যোগাযোগ।কোন ভাষাকে ভালোবেসে কেউ ভাষা শেখে এমন কিছু পেলাম না।তবে ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পছন্দ থাকতে পারে--এতটুকুই।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ভোর ৪:০২