somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশে আইন পেশার সুযোগ ও সম্ভাবনা

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আইন পেশার কদর বোঝার জন্য বোধ করি একটি কথাই যথেষ্ট, ‘সেই শহরে বসবাস করা নিশ্চয় বুদ্ধিমানের কাজ নয়, যে শহরে কিনা একজনও আইনজীবী নেই।’ কথাটার উৎপত্তি সেই প্রাচীন যুগে। হলে কী হবে, সময়ের পরিক্রমায় এই যুগে এসেও ওই বক্তব্যের আবেদন কমেনি একটুও; বরং দিনকে দিন বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আইন বিভাগে দলে দলে শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়া সেই গুরুত্বেরই আলামত বৈকি।


সম্মান এবং সুনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য বর্তমান সময়ে আইন পেশার প্রতি সবার আগ্রহ বাড়ছে। আইন পেশার সুযোগ এখন নতুন নতুন মাত্রা ও সম্ভাবনা যোগ করছে। মর্যাদাপূর্ণ এ পেশায় আগে ছেলেরাই আসতেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেয়েরাও এ পেশায় আসছেন।

বলাই বাহুল্য, আইন পেশায় এখন যোগ হয়েছে নতুন নতুন মাত্রা ও সম্ভাবনা। নিম্ন আদালতে বিচারক ও আইনজীবী হিসেবে কাজের সুযোগ তো আছেই, আছে সর্বোচ্চ আদালতের একজন আইনজীবী কিংবা বিচারপতি হওয়ার অপার সম্ভাবনাও। এ ছাড়া নিম্ন ও উচ্চ আদালতে সরকার-নিয়োজিত আইনজীবী হিসেবেও পেশা গড়ার সুযোগের পাশাপাশি রয়েছে নোটারি আইনজীবী হওয়ার সুযোগ।


বলে রাখা ভালো, বিচার বিভাগ ছাড়াও নির্বাহী আদালতগুলোতে আইনজীবীরা মামলা পরিচালনা করার অধিকার রাখেন। এমনকি আইনজীবীরা আদালতে ও বাইরে বিভিন্ন আইন চেম্বার ও ফার্মে ‘ইন হাউস আইনজীবী’ হিসেবেও কাজ করতে পারেন। তাই আইন পেশায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে উত্তরোত্তর। কিন্তু আইনজীবী হতে হলে আইনের ওপর স্নাতক ডিগ্রি নেওয়াই শেষ কথা নয়। বরং এর পরই শুরু হয় আসল কাজ—বার কাউন্সিল থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া। এ পদ্ধতি অবশ্য নিম্ন আদালতের জন্য। আর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হওয়ার পদ্ধতি হচ্ছে, নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত নিম্ন আদালতে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে আবার বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া।

কেউ যদি বিচারক হতে চান, সে ক্ষেত্রে তাঁকে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সহকারী জজ নিয়োগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। বিচারক আর আইনজীবী হিসেবে কারও যদি কমপক্ষে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে তিনি পাবেন বিচারপতি হওয়ার সুযোগ। একজন আইনজীবীর রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠার সুযোগ।



যেমন পারিবারিক, জমিজমা, ফৌজদারি, রিট, কোম্পানিবিষয়ক, অ্যাডমিরালিটি, শ্রম আইন কিংবা আয়কর, কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্স রেজিস্ট্রেশন, বিনিয়োগ বোর্ডে বিনিয়োগকারীদের কাজের অনুমতি প্রভৃতি। এসব ছাড়াও বর্তমানে আরও নতুন কয়েকটি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে আইন পেশায়। যেমন বুদ্ধিবৃত্তিক ও মেধাস্বত্ব, ট্রেডমার্কস, পেটেন্ট ও ডিজাইনবিষয়ক আইনি কাজ। পরিবেশ আইন নিয়েও কাজের পরিধি বিস্তৃত হয়েছে সারা দেশে। এ ছাড়া বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে সাংবাদিকদের মামলা পরিচালনা, কাস্টমস ও ভ্যাট-সংক্রান্ত মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রও বাড়ছে। বিদ্যুৎ ও পল্লী বিদ্যুৎ আদালত হয়েছে।

মানবাধিকারকর্মী হিসেবে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থায় কাজের ব্যাপক সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমাদের দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক-বিমা প্রতিষ্ঠানগুলো ইদানীং আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিচ্ছে। প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত বিচারক ও আইনজীবী হিসেবে কাজের সুযোগ তো আছেই। দেশে আইন সাংবাদিকতার সুযোগ বেড়েছে আগের তুলনায় বেশি। তাই ইদানীং একেকজন আইনজীবী একেক দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। এর ফলে তাঁরা সহজেই সে বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠছেন এবং এই দক্ষতা তাঁদের ‘আইনজীবী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।


বর্তমানে আমাদের দেশে বেশির ভাগ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেশ কটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অনেক কলেজে আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া দেশে বসে দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আইনের ডিগ্রিও নেওয়া যায়। ডিগ্রি নেওয়ার পর বার অ্যাট ল করা যেতে পারে যুক্তরাজ্য থেকে। (সংগ্রহীত)
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×