somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুলিশের গরু মুলামুলির লাগাম কে টেনে ধরবে

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সম্প্রতি দেশ জুড়ে বিরোধী দলের সহিংসতার কারণে সরকারের নির্দেশে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে গিয়েছে। এর প্রয়োজনও কম ছিল না। কারণ যে হারে সাধারণ মানুষ সৃষ্ট রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নিরাপত্তা হীনতায় ছিল তাতে যৌথ বাহিনীর এই অবস্থানে দেশ জুড়ে অনেকটা স্বস্তির বাতাস বয়ে এসেছে। হরতাল, অবরোধের নামে সাধারণ মানুষের জান মালের যে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে তা পূর্বের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এই সব নাশকতা ঠেকাতে আমাদের পুলিশ বাহিনীও দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে যা অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু তাই বলে ইচ্ছে মত নিরাপরাধ মানুষকে যাছাই বাছাই ছাড়াই গ্রেফতার করে এনে আটকে রাখা, মারধর করা আর তারপর বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া কিংবা কাঙ্ক্ষিত টাকা না পেয়ে আদালতে চালান করে দেওয়া সেই প্রশংসায় ভাটা পড়েছে নয় কি! এখন পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতারের নামে নিরাপদ মানুষকে হয়রানী ও পরে ঘুষ না পেয়ে তাঁদের আদালতে চালান করে দেওয়া যেন নিত্যদিনের ঘটনা এবং এর থেকে উৎপত্তি হওয়া নানা রকমের আইনি সমস্যা নিয়েও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে অসহায় নিরাপরাধ মানুষকেই বেশি। অথচ প্রকৃত অপরাধীরা ঠিকই ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থেকে যাচ্ছে। নিরাপরাধ মানুষ হলে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় সব দিক থেকে। যেন স্বাধীন দেশে থেকেও পরাধীনতার মধ্যে তাঁদের জীবন যাপন করতে হচ্ছে! একদিকে রাস্তায় বিরোধী দল কর্তৃক রাস্তায় পুড়ে মরার ভয় অপরদিকে পুলিশের সন্দেহের শিকার হয়ে বিচারের আগে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর জেল হাজতে পড়ে থাকার ভয়। কোথায় যাবে সাধারণ জনগন! রাস্তায় চলাচলে নিরাপত্তা তো বোধ করেই না বরং সব সময় থাকতে হয় না জানি কখন পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্যের শিকার হয়। পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায় পুলিশের তল্লাশি নিয়েও হচ্ছে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি। বাদ যাচ্ছে না রাস্তায় খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে স্কুল যাওয়া ছেলেটিও। আমার প্রশ্ন হল গ্রেফতার হবে প্রকৃত অপরাধীরা কিংবা সন্দেহভাজনরা কিন্তু রাস্তা ঘাট, বাসা বাড়ী থেকে নিরাপরাধ মানুষ ধরে এনে তারপর রাত পোহাবার আগে গরু বাজারের গরুর মত দর মুলামুলি করে ছেড়ে দেওয়া হয়, না হলে আদালতে চালান করে দেওয়া হয় যে কোন মিথ্যে মামলা সাজিয়ে তাও আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে অজামিন যোগ্য মামালায়, এই কেমন সভ্য জাতীর অসভ্যতা তা আমার বোধে আসে না! আবার প্রশ্ন হল যদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি পুলিশের সন্দেহে অপরাধীই হয়ে থাকে তাহলে কেন রাত পোহাবার আগে দাম নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হল। এতে কি সংশ্লিষ্ট অপরাধীকে অপরাধ করতে আরও উসকিয়ে দেওয়া হচ্ছে না? পুলিশের এই গরু মুলামুলির লাগাম কে টেনে ধরতে পারে জানি না? গত বছরে সারা দেশে এই পর্যন্ত পুলিশের বিরুদ্ধে ২০ হাজারের বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে। তাও শুধু মাত্র দেশের সচেতন নাগরিকরাই এই অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু দেশে আরও লক্ষ লক্ষ নিরাপরাদ মানুষ যে পুলিশের অনৈতিক হয়রানী ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে তা আর কেউ জানছে না, আর হচ্ছে না কোন সুরাহাও। যদি আমাদের পুলিশ বাহিনী জনগণের বন্ধু হওয়ার চেয়ে জনগণের জমই হয়ে থাকেন তাহলে এই বাহিনীর আর দরকার কি! এখনও সময় বাকী রয়েছে পুলিশ বাহিনীর প্রতি জনগণের শ্রদ্ধা বাড়ানোর। আর পুলিশের সন্দেহেরও একটা সীমা রেখা থাকা উচিত যাতে করে অন্তত কোন নিরাপরাধ মানুষকে জেল হাজতে যেতে না হয়। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিরাপরাধ মানুষরাই বেশি আইনি ঝামেলায় ফেঁসে যায় এবং তাঁদের উদ্ধার করার মতও কেউ থাকে না। প্রায় সময় দেখা যায় সন্দেহভাজন হিসেবে যাদের গ্রেফতার করা হয় নিয়ম থাকার পরেও সাথে সাথে তাঁদের পরিবারকে না জানিয়ে কিংবা এলাকায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাপারে খোঁজখবর না নিয়ে মনা গড়া মামলা ঠুকে দেওয়া হয়। অথবা থানায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবারকে ডেকে এনে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয় অন্যথায় সোজা মামলা ঠুকে দেওয়া হয়।

যাহোক, পুলিশ হল জনগণের বন্ধু। উন্নত বিশ্বেও আমরা তাই দেখি থাকি। তাঁরা আসবে জনগণের সকল দুর্দশা লাগব করতে, তাঁদের সাহায্য করতে কিন্তু পুলিশের কারণে যদি সাধারণ মানুষরাই যদি উল্টা আজ গ্রফতারের ভয়ে থাকে তবে এই স্বাধীন দেশের স্বাধীনতার অর্থ কোথায়?

মোঃ জাহিদ হোসেন
আইনের শিক্ষার্থী , চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
লেখকঃ প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, রোলা বাংলাদেশ
রিসার্চ অর্গানাইজেশন ফর লিগাল এওয়ারনেস অব বাংলাদেশ
[email protected]

১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×