somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থাকুক রাজনীতি মুক্ত - জাহিদ হোসেন

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সম্প্রতি শিবির কর্তৃক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের এক কর্মীর রগ কর্তনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে অর্ধ শতাধিক আহত হওয়া ছাড়াও সর্বশেষ ৪ শিবির কর্মী নিহত হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায়। হরতাল অবরোধের কারণে দীর্ঘ দিন পর প্রাণ প্রিয় এই ক্যাম্পাস মুখরিত হতে না হতে আবার রক্তাক্ত হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাণের যে উচ্ছ্বাস ফিরে এসেছিল তাতে আবার রাজনৈতিক কোন্দলে প্রাণ হারাতে হয়েছে কিছু মেধাবী শিক্ষার্থীকে হোক না তাঁরা ছাত্রলীগ অথবা ছাত্রশিবির পরিচয়ধারী। কারণ এসব পরিচয়ের বাইরে তাঁরা একজন মেধাবী শিক্ষার্থী, একজন মায়ের কোলের ছেলে। কিছু দিন পর পর হারিয়ে ফেলছি নষ্ট এই ছাত্র রাজনীতির বলি হওয়া চিরচেনা সেই মুখগুলো। আমার কথা হল এই ক্ষেত্রে যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পূর্ব থেকে উপলব্ধি করে থাকে যে নির্বাচনের পর ছাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোন ধরণের সংঘর্ষ বাঁধতে পারে তাহলে কেন কড়াকড়ি আরোপ করে ক্যাম্পাসে সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে দিল না? কারণ কোন ছাত্র যেই রাজনৈতিক দলের হোক না কেন একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে সে তাঁর জীবনের নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার রাখে। এর জন্য প্রশাসনের যে কোন পন্থা অবলম্বন করা উচিত। সে যদি কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হয়ে থাকে তাহলে তাঁকে আইনের হাতে সোপর্দ করা হোক, প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় হতে বহিষ্কার করা হোক। কিন্তু তাই বলে পুলিশ নিস্ক্রিয় থেকে কোন একটি রাজনৈতিক দলকে আরেকটি রাজনৈতিক দলের উপর গুলি ও হামলা করতে সহায়তা করা কতটা প্রয়োজনীয়! হয়ত পুলিশ বলবে উপরের নির্দেশ আছে। আমার কথা হল তাই বলে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর মত কাজেও পুলিশ এবং পরোক্ষভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিভাবে ছাড় দেয়? তাছাড়া জানা যায় এই পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যত ছাত্র নিহত হয়েছে তার অধিকাংশের কোন বিচার হয়নি। আর এই সব হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনার রহস্য উম্মোচনের জন্য ঘটিত তদন্ত কমিটিও কিছু দিন পর নিস্ক্রিয় হয়ে যায় বিভিন্ন অদৃশ্য কারণে। আবার কোন সাধারণ ছাত্র নিহত হলেও তাঁকে নিয়ে শুরু হয়ে যায় লাশের রাজনীতি। এ বলে তাঁদের কর্মী তো ও বলে ওদের কর্মী। আসলে দেখা যায় নিহত ছাত্রটি নিতান্তই সাধারণ শিক্ষার্থী। এর নমুনা আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক মেধাবী শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে দেখেছি। স্বাভাবিকভাবে যে দল ক্ষমতায় থাকবে সেই দলই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজত্ব করবে এমনটা দেখা যায়। তাই বলে আমরা বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিট দখল, আদিপত্য বিস্তার, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজি, হত্যা, বোমাবাজী কিংবা সন্ত্রাসীর রাজনীতিই দেখে যাব? তাহলে কেন এলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য! বছরখানেক আগে সৌমেন নামের আরেক ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করে ফেলে রেখে যায় ছাত্রলীগরই অপর গ্রুপের কর্মীরা। অথচ সে এখনও ফিরে পায়নি তাঁর স্বাভাবিক জীবন। আজ শুধুমাত্র এই নষ্ট ছাত্র রাজনীতির জন্য ঝড়ে যাচ্ছে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর প্রাণ, বেঁচে গেলেও পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে অনেকে। শিক্ষার্থীরা কি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য আসে নাকি রাজনীতি করার জন্য আসে তাও আবার অস্ত্রের রাজনীতি! আর মাঝখান দিয়ে জাতি হারায় কিছু সম্ভাবনাময় মেধাবী শিক্ষার্থী। তাছাড়া একেক বার একেক সংঘর্ষ বাঁধে ছাত্র রাজনৈতিক দল গুলোর মধ্যে আর ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে থাকে মাসের পর মাস। এতে করে সেশন জটের কারণে শিক্ষার্থীরা তাঁদের জীবন থেকে হারায় মূল্যবান অনেক সময়। যে কোর্স শেষ হওয়ার কথা ছিল ৪ বছরের মধ্যে তা আজ এই নষ্ট ছাত্র রাজনীতির জন্য গিয়ে গড়ায় ৬-৭ বছরে। আবার এই দিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো তাঁদের ছাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর লাগাম টেনে ধরে না বিভিন্ন কাজে তাঁদেরই ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করার জন্য। বর্তমানে ছাত্র রাজনীতি ক্ষতি ও ধ্বংস ছাড়া বিন্দুমাত্র জাতীয় উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে না। আমরা চাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হোক। যেদিন প্রয়োজন হবে সে দিন না হয় আবার শুরু করা যেতে পারে এই ছাত্র রাজনীতি যা তখন জাতীয় উন্নয়ন ও অধিকার রক্ষায় অবদান রাখবে।

Click This Link

লেখকঃ ছাত্র ও মানবাধিকার কর্মী
আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]

২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×