অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।
.jpg)
--------------------------------------------------
''একটি কক্ষে নিয়ে দুই পা বেঁধে পুলিশ আমাকে ফ্যানে ঝুলিয়ে পিটিয়েছে।' তার উরুতে পিটিয়ে গর্ত করে ফেলা হয়। এরপর পুলিশ বলে, 'যদি না বলিস তাহলে তোকে মেরে ফেলা হবে।' এরপরও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করায় শিশুটিকে আরো বেশি নির্যাতন শুরু করেন এসআই নূরুল ইসলাম। তিনি তাকে বলেন, 'তুই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করলে আর নির্যাতন না করে তোকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে।'
--------------------------------------------------
-দীর্ঘ ৯ মাস পর টঙ্গীর শিশু-কিশোর সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে ১০ বছরের শিশু সুমন। মুক্তির পর শিশুটি জানিয়েছে তার ওপর চকবাজার থানার পুলিশের নির্মম নির্যাতনের কথা। শিশু সন্তানের ওপর এমন নির্যাতনের ঘটনা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবা নূর ইসলাম।
সুমন জানায়, তাকে গ্রেফতার করে চকবাজার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এসআই নূরুল ইসলাম তাকে বলে, আকলিমাকে ধর্ষণ শেষে হত্যার কথা তাকে স্বীকার করতে হবে। কিন্তু সুমন বেঁকে বসে। পুলিশকে সে বলে, 'আমি হত্যা করিনি। কেন আমি তা বলব? এরপর একটি কক্ষে নিয়ে দুই পা বেঁধে পুলিশ আমাকে ফ্যানে ঝুলিয়ে পিটিয়েছে।' তার উরুতে পিটিয়ে গর্ত করে ফেলা হয়। এরপর পুলিশ বলে, 'যদি না বলিস তাহলে তোকে মেরে ফেলা হবে।' এরপরও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করায় শিশুটিকে আরো বেশি নির্যাতন শুরু করেন এসআই নূরুল ইসলাম। তিনি তাকে বলেন, 'তুই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করলে আর নির্যাতন না করে তোকে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে।'
সুমন গতকাল সোমবার মুক্তি পাওয়ার পর তার বাবা ও মামাকে এসব কথা জানায়। সুমনের মামা আবদুল আজিজ বলেন, সুমন নির্যাতন সইতে না পেরে পুলিশের কথামতো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়। এরপর পুলিশ তাকে আদালতে নিয়ে যায়। পুলিশ যা শিখিয়ে দিয়েছে সে অনুযায়ীই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় সে। এরপর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পুলিশ তাকে টঙ্গীতে শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে নিয়ে যায়। সেখানে ঢোকানোর সময় সুমন জানতে চায়, তাকে বাড়িতে না পাঠিয়ে এখানে আনা হয়েছে কেন। জবাবে পুলিশ ধমক দিয়ে ওকে বলে, 'এখন থেকে এটাই তোর বাড়ি।'
রাজধানীর চকবাজারের জয়নাগ রোডে ২২/খ নম্বর বাড়িতে ২০১১ সালের ৩০ জানুয়ারি রাতে রহস্যজনভাবে মারা যায় শিশু গৃহকর্মী আকলিমা। গৃহকর্তা বরকত মুন্সী আকলিমা বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মৃত্যুর আট মাস পর ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বেরিয়ে আসে যে তাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ফলে গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর অপমৃত্যু মামলা হত্যা মামলায় রূপ পায়। আর সেই হত্যা মামলায় ১০ বছরের সুমনকে আসামি দেখিয়ে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। সুমনও বরকত মুন্সীর বাসায় কাজ করত।
গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর চকবাজার থানার এসআই শেখ আবদুল মোতালেব বাদী হয়ে আসামি অজ্ঞাত উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় চকবাজার থানার এসআই নূরুল ইসলামকে। তিনি তদন্তে নেমে গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঈশ্বরগঞ্জের চরনওপাড়ার দিনমজুর নূর ইসলামের ছেলে সুমনকে গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে আসেন।
পরিবারের দাবি, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিরপরাধ সুমনকে হত্যা মামলার আসামি করেছে পুলিশ।
অবশেষে রবিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক নূর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর সুমনকে জামিন দেন। গতকাল দুপুরে সুমন মুক্তি পায়।
গরম গরম খবর পেতে লাইক দিতে পারেন..
