somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জিয়াউল শিমুল
.. তবুও আমি আঁধার পথিক, আঁধারের অতিথি হয়েছি আজ বিনা নোটিশে। ঘুম নেই চোখে, ক্লান্তি নেই চরণে... জানি না চলছি কোন্ মেঠো পথ ধরে! *facebook.com/shimulzia *facebook.com/ziaulshimul *ziaulshimul.blogspot.com

চন্দ্র ।। পর্ব - ১৫

২৩ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মেলা কমিটির সভাপতি রাজেন্দ্র ঠাকুরের বাড়ি মেলা থেকে একটু দুরে। চুনসুরকির পুরনো দোতালা বাড়ি। বাড়ির উঠোনে শান বাধানো একটি তুলশি গাছ। মেলার জায়গাটা ওনাদেরই। মেলার মন্দিরটাও ওনাদের তত্বাবধানে। এই এলাকার হিন্দুদের মধ্যে রাজেন্দ্র ঠাকুর ভালোই প্রভাবশালি। রাজেদ্র ঠাকুরের খোজ করায় বৈঠক খানায় রুদ্রদের বসানো হলো। একটু পরে রাজেন্দ্র ঠাকুর এলেন। রুদ্রদের দেখে মলিন গলায় বললেন- কেমন আছো বাবারা? চন্দ্রের খোজ পাওয়া গেল?

জবাব দিলো আরশাদ, রুদ্রের বড় মামার ছেলে। বললো- এখনো কোন খোজ পাই নি কাকা। আর চন্দ্রকে না পাওয়া পর্যন্ত আমরা ভালো থাকি কি করে?

রাজেন্দ্র ঠাকুর একটা দির্ঘশ্বাস ফেলে বললেন- চন্দ্র আমাদের সবার কাছেই মেয়ের মতো। ও হারিয়ে যাওয়ায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে, কারো মুখেই হাসি নেই। এতো সতর্ক থাকার পরেও আমরা কিছু করতে পারলাম না। নিজেকে বড় অপরাধি মনে হচ্ছে।

রুদ্র রাজেন্দ্র ঠাকুরের কথায় কিছু একটার ইঙ্গিত বুঝতে পেরে বললো- সতর্ক ছিলেন মানে? আপনারা কি আগে থেকেই জানতেন চন্দ্র সেদিন হারাবে!

- চন্দ্র হারাবে সেটা জানতাম না। তবে মেলার মাঝে কিছু একটা যে হতে পারে সেটা মেলা শুরু হওয়ার আগেই জানতে পেরেছিলাম। যদি জানতাম সেই কিছু একটা চন্দ্র মার হবে তাহলে কালো বাদুরদের কথাই শুনতাম।

কালো বাদুরের নাম শুনে সবাই ভয়ে নড়ে উঠলো। রুদ্র অতংকিত গলায় বললো- কালো বাদুর!

রাজেন্দ্র ঠাকুর বলে চললেন- মেলা শুরুর কয়েক দিন আগে মন্দিরের ভিতরে আমরা একটা চিরকুট পাই। চিরকুটে লেখা ছিলো- 'মেলায় কোন রকম জুয়ার আসর বসানো যাবে না। অন্যথায় চরম বিপদে পড়বে।' এ চিরকুটটা ছিলো কালো বাদুরের।

- কালো বাদুরের নাম লেখা ছিলো ওটাতে?

- না।

- তাহলে কিভাবে বুঝলেন ওটা কালো বাদুরই দিয়েছে, অন্য কেউ দেয় নি?

- চিরকুটটা ছিলো কালো কাগজের। লেখা ছিলো সাদা। এমন চিরকুট কালো বাদুররাই দেয়।

- থানায় জানিয়েছিলেন?

- হ্যা। কালো বাদুরের চিরকুটের কথা সবাই জানলে মেলাতে কেউ আসতো না। মেলাটাই পন্ড হয়ে যেতো। তাই পুলিশের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, চিরকুটের কথা প্রকাশ করা হবে না। কালো বাদুরকে ধরার জন্য পুলিশ অনেক বছর থেকেই চেষ্টা করছে কিন্তু কখনো সফল হতে পারে নি। এবার তারা আশা করেছিলো, মেলায় কালো বাদুর হামলা করলে তারা ধরতে পারবে। এজন্য এবার মেলার দিনগুলোতে অনেক পুলিশ সাদা ড্রেসে থাকতো। কিন্তু এতো সতর্কতার পরেও আটকানো গেলো না। তারা যে সর্বোনাশ করেছে সেটার চেয়ে বড় সর্বোনাশ আর কিছু হয় না। এরপর থেকে জুয়া এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। হয়তো মেলাটাও ধ্বংস হয়ে যাবে। লোক জন এখনও কালো বাদুরের চিরকুটের কথা জানে না। যখন জানবে তখন ভাববে আমাদের কারনেই চন্দ্র হারিয়েছে। এ এলাকার প্রতিটি লোকের কাছেই মেলার চেয়ে চন্দ্র প্রিয়। তারা যখন জানবে তখন আমার মানসম্মান নিয়েও হয়তো টানাটানি হবে।

- চিরকুটের কথা কি নানু জানে?

- তোমার নানাকে পুলিশ জানিয়েছিলো।

- নানা কি বলেছিলো?

- উনি জুয়ার বিপক্ষে। জুয়ার আসর না বসানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন।

আরশাদ ক্ষেপে গিয়ে বললো- তাহলে জুয়া বসালেন কেন?

রাজেন্দ্র ঠাকুর অপ্রস্তত হয়ে বললেন- কে জানতো ওরা চন্দ্রকে অপহরন করবে? যদি জানতাম তাহলে তো জুয়া বসাতাম না। চন্দ্র আমাদের কাছেও মেয়ের মতো। আর পুলিশও কালো বাদুরকে ধরার সুযোগ খুজছিলো। তারাও চেয়েছিলো জুয়া বসুক। মেলাতে কালো বাদুর আসুক।

রুদ্র সন্দেহ প্রকাশ করে বললো- এটা যে কালো বাদুরই করেছে তার কি নিশ্চয়তা? কালো বাদুর হয়তো অন্য কিছু করতে চেয়েছে আর চন্দ্রকে অন্য কেউ কিডন্যাপ করেছে।

- পুলিশেরও ধারনা চন্দ্রকে কালো বাদুরই অপহরন করেছে? গত বছর পাশের গ্রাম থেকে একটা ছেলে আর আরেক গ্রাম থেকে একটা মেয়ে হারিয়ে গেছে। তাদেরকে আর পাওয়া যায় নি। সবার ধারনা এ দুজনকেও কালো বাদুরই অপহরন করেছে।

রুদ্র অবাক হয়ে গেলো। এ তথ্যটা ওর জানা ছিলো না। বললো- ওদের জন্য মুক্তিপন চাওয়া হয় নি?

- না।

- আশ্চার্য! কালো বাদুর তাদেরকে অপহরন করলো কিন্তু মুক্তিপন চাইলো না! দস্যুরা মিছেমিছি কাউকে অপহরন করবে কেন?

- হয়তো তাদের অন্য উদ্দেশ্য আছে যেটা আমরা জানি না।

- তাহলে আপনার দৃঢ় বিশ্বাস চন্দ্রকেও কালো বাদুরই অপহরন করেছে?

- চন্দ্রকে অপহরনের সাহস কালো বাদুর ছাড়া আর কার হবে?

রুদ্র আনমনা হয়ে বললো- কালো বাদুরের সাহসও বা কি করে হয়? ওরা দস্যু দল। চন্দ্রকে অপহরন করে নিজেদের বিপদ ডেকে আনবে কেন? আর মেলায় জুয়া বন্ধ হলে ওদের কি লাভ?

- পুলিশের ধারনা চন্দ্রকে অপহরন করে ওরা নিজেদের শক্তির পরিচয় দিতে চাইছে। সবাই যাতে বোঝে ওদের অসাধ্য কিছু নেই। জুয়া বন্ধ করতে বলা ওদের একটা বাহানা।

- কিন্তু চন্দ্র তো মেলায় আসতো না। সার্কাস পার্টির কারনে এবার এসেছে। ওরা কিভাবে জানতো চন্দ্র সেদিন মেলায় আসবে?

- চন্দ্র মেলায় না আসলে ওরা হয়তো অন্য কিছু করতো। কিংবা ওদের হয়তো অন্য কিছু করার প্লান ছিলো কিন্তু চন্দ্রকে পেয়ে প্লান পাল্টায়।

- চিরকুটটা কোথায়?

- ওটা পুলিশের কাছে।

- পুলিশের এত সতর্কতা সত্বেও চন্দ্রকে কিভাবে ওরা মেলা থেকে বাহিরে নিয়ে গেলো? কেউ দেখলো না কেন?

- এটা আমরা বুঝতে পারছি না।

- আপনাদের নিরাপত্তার মাঝে কোন দুর্বলতা ছিলো না?

- না।

- কিভাবে না বলেন! মেলার ভিতর থেকে একজন কিডন্যাপ হলো আর বলছেন, দুর্বলতা ছিলো না!

রাজেন্দ্র ঠাকুর আমতা আমতা করে বললেন- না মানে, আমরা বুঝতে পারছি না।

একজন নাস্তা নিয়ে এলো। রাজেন্দ্র ঠাকুর সবাইকে নাস্তা নিতে বললেন। রুদ্র একটা লাড্ডু তুলে নিয়ে রাজেন্দ্র ঠাকুরের চোখে সরাসরি তিক্ষ্ণ ভাবে তাকিয়ে বললো- কিডন্যাপের সাথে আপনি যুক্ত নন তো?

রুদ্রের কথায় রাজেন্দ্র ঠাকুর ভেঙ্গে পড়লেন। করুন সুরে বললেন- এটা কি বলছো বাবা! চন্দ্রকে আমি মেয়ের মতো ভাবি। আমি কি করে ওর ক্ষতি চাইবো!

রুদ্র প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে বললো- মেলাতে সার্কাস পার্টি এনেছে কে?

- মেলা কমিটির সিদ্ধান্তে আনা হয়েছে।

- কিন্তু সপ্তাহে দুদিন শো করে ওদের তো পোষানোর কথা না!

- ওরা আসতে চায় নি। কিন্তু আমরা ওদেরকে ক্ষতি পুষিয়ে দিতে চাইলে ওরা রাজি হয়েছে।

- আপনারা ওদেরকে আলাদা ভাবে টাকা দিতে চাইলেন কেন?

- আমরা চেয়েছিলাম মেলাটা আরো জাকজমক হোক। এর আগেও অনেক বার আনতে চেয়েছিলাম কিন্তু টাকার ব্যবস্থা না হওয়ায় আনতে পারি নি।

- এবার কিভাবে ব্যবস্থা হলো?

- মনিষ মুখার্জি পঞ্চাশ হাজার দিয়েছিলেন। আর মেলার জুয়া এবং দোকান থেকে যা আয় হয়েছে সেখান থেকে আমরা কিছু দিয়েছি। আবার অনেকে অল্প কিছু করে দিয়েও সাহায্য করেছে।

- মনিষ মুখার্জি কি শহরের সেই ব্যবসায়ি?

- হ্যা।

- এতোগুলো টাকা তিনি দিলেন কেন? তার লাভ কি?

- প্রতি মেলাতেই তিনি কিছু দান করেন। তাকে আগেও বলা হয়েছিলো একটু বেশি দেয়ার জন্য যাতে আমরা সার্কাস পার্টি আনতে পারি। কিন্তু তিনি আগে এতো টাকা দিতে পারেন নি। এবার তার ব্যবসায় লাভ বেশি হওয়ায় দিতে পেরেছেন।

- মনিষ মুখার্জি এর আগে কতো করে দিয়েছিলেন?

- কখনো বিশ, কখনো ত্রিশ দিয়েছেন?

- এবার একেবারে ডাবল!

- এবার আমরা একটু বেশি জোর করেছিলাম। আর ওনার ব্যবসাও ভালো চলছিলো।

- মনিষ মুখার্জি এমন কিছু কি করেছিলেন, যাতে আপনারা প্রভাবিত হয়ে তার কাছে বেশি করে টাকা চান? বা অন্য কেউ কি আপনাদেরকে সার্কাস পার্টি আনার জন্য প্রভাবিত করেছিলো। একটু ভালো করে ভেবে বলুন। কারন এটা খুব গুরুত্বপুর্ন।

রাজেন্দ্র ঠাকুর একটু ভেবে বললেন- মনিষ মুখার্জির গ্রামের বাড়ি আমাদের এখানে। উনি এই মন্দিরে নিয়মিত চাদা দেন। মেলাতে একটু বেশি দেন। উনি কোন বিষয়ে আমাদেরকে প্রভাবিত করেন নি। আর অনেকেই প্রতি মেলাতেই আমাদেরকে সার্কাস পার্টি আনার জন্য বলে। এবারেও অনেকে বলেছে।

- কেউ কি বিশেষ ভাবে বলেছে?

একটু ভেবে রাজেন্দ্র ঠাকুর বললেন- না, তেমনটা মনে পড়ছে না। মানে আমাদেরকে কেউ প্রভাবিত করার মতো করে বলে নি। আমরা নিজে থেকেই কমিটির সিদ্ধান্তে এনেছি।

- কমিটির সদস্যদের মধ্যে কারো বিশেষ আগ্রহ ছিলো?

- আগ্রহ সবারই ছিলো। তবে সেটা সন্দেহ জনক পর্যায়ে নয়।

- আপনাকে কেউ ব্যবহার করছে, এমনটা কি কখনো মনে হয়েছে?

রাজেন্দ্র ঠাকুর ভেবে বললেন- না, তেমনটা কখনো মনে হয় নি।

- মেলায় যে খুন হয়েছে তার পরিচয় কি?

- তার বাড়ি রংপুরের হারাগাছে। নাম নগেন। এর আগেও মেলাতে এসেছে। পাকা জুয়ারি। নেশাও করতো।

- খুনির বিষয়ে কিছু জানা গেছে?

- না।

- কি জন্য খুন করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানেন?

- না। খুনের কারন এখনো জানা যায় নি? নগেন একটা ছয় গুটির ডাব্বুতে জুয়া খেলছিলো। যারা জুয়া বসিয়েছিলো তাদের সবাইকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। যারা জুয়া খেলেছে তাদেরও কয়েক জনকে ধরা হয়েছে। কিন্তু খুনির বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছে না। সবাই শুধু এটুকু বলতে পেরেছে খুনের সময় ভিড় অনেক বেড়ে গিয়েছিলো। বেশ কিছু অপরিচিত লোক নগেনকে মাঝে রেখে ঠেলাঠেলি শুরু করেছিলো। তারপর হঠাত কেউ এক জন খুন খুন বলে জোরে চিতকার করে ওঠে। এরপর মেলাতে ছোটাছুটি শুরু হয়। পুলিশ খুনের স্থানে যাওয়ার আগেই অপরিচিত লোকেরা পালিয়ে যায়। তখন সবে মাত্র সার্কাসের শো শেষ হয়েছিলো। তাই মেলাতে তখন প্রচন্ড ভিড় ছিলো। প্রচন্ড ভিড়ে ছোটাছুটির কারনে কেউ আর কারো দিকে খেয়াল রাখতে পারে নি।

- কি দিয়ে খুন করা হয়েছে?

- চাকু দিয়ে। বাম পাশ থেকে পেট কেটে ডান দিকে নিয়ে আসা হয়েছে। নাড়ি ভুরি বেড়িয়ে পড়েছিলো।

- আমাদেরকে আপনার কি বিশেষ কিছু বলার আছে? মানে এমন কিছু তথ্য যা চন্দ্রকে খোজার জন্য আমাদের কাজে লাগতে পারে। বা আপনার কাছে সেটা কাজের মনে না হলেও বলুন। যা মনে পড়ে তাই বলুন। শুধু শেষ মেলায় নয়, পুরো মেলায় যা ঘটেছে বলুন।

রাজেন্দ্র ঠাকুর কিছুক্ষন ভাবলেন। তারপর বললেন- পাড়ার ছেলেরা কিছু চাদা নিয়েছে, পুলিশকে কিছু দিতে হয়েছে, মন্দিরের পাশের কুয়োয় একটা ছেলে পড়ে গিয়েছিলো, তাকে উদ্ধারও করা হয়েছে, মাঝে মাঝে জুয়ার আড্ডায় কিছু গন্ডগোল হয়েছে, সার্কাসের একটা মেয়ে এক চাকার সাইকেল চালানোর সময় এক দিন পড়ে গিয়ে আহত হয়েছিলো। এ ছাড়া আর তেমন কিছু তো মনে পড়ছে না বাবা।

- জুয়ার আড্ডায় কি নিয়ে গন্ডগোল হতো?

- যারা জুয়া খেলতো তারা মাঝে মাঝে অভিযোগ করতো তাদেরকে ঠকানো হচ্ছে। এমন অভিযোগ প্রতিদিনই হতো।

- অপরিচত কেউ অভিযোগ করেছিলো? মানে নগেন খুন হওয়ার সময় যারা সেখানে উপস্থিত ছিলো।

- না। তেমন কেউ অভিযোগ করে নি।

- আর সার্কাসের মেয়েটা কি জন্য সাইকেল থেকে পড়ে গিয়েছিলো?

- সার্কাসের ম্যানেজার আমাকে বলেছিলো ওটা অ্যাক্সিডেন্ট ছিলো। হঠাত করে সার্কাস দেখানোর সময় নাকি এমনটা হয়।

রাজেন্দ্র ঠাকুরের কাছে জিবন ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প, এ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রো, মেলায় পুলিশের অবস্থান, দোকান পাটের পজিশন ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য নিলো রুদ্র। তারপর বললো- ঠিক আছে কাকা, আমরা এবার উঠবো। পরে আবারও আপনার সাথে কথা বলতে পারি। আর আপনার যদি কখনো বলার মতো কিছু মনে পড়ে তাহলে সাথে সাথে আমাদেরকে জানাবেন। দয়াকরে একটুও বিলম্ব করবেন না। প্রতিটি তথ্যই আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপুর্ন।

- ঠিক আছে বাবা। আমি তোমাদেরকে সাহায্য করতে পারলে খুশি হবো। চন্দ্র মা তাড়াতাড়ি উদ্ধার হোক। সবার মাঝে হাসি ফুটে উঠুক। দুপুর তো গড়িয়ে গেছে। তোমরা একটু জল খাবার খেয়ে নাও।

- আজ না কাকা। আপনার দাওয়াত পরে কোন এক দিন রক্ষা করবো।

রুদ্ররা রাজেন্দ্র ঠাকুরের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এলো। মেলার ভিতর দিয়ে মেঠো পথ ধরে বাড়ির দিকে চললো ওরা। কিছু দুর পরে আউশ ধানের ক্ষেতের ভিতর দিয়ে হাটা শুরু করলো ওদের দল। জমিতে বিজ ছিটিয়ে আউশ ধান বপন করা হয়। কিছু দিন পরে ঘাসের মত গজিয়ে ওঠে আউশ ধানের চারা। মেলার সময় মানুষ যাতায়াতের জন্য ঘোরানো মেঠো পথ বাদ দিয়ে আউশ ধানের ভিতর দিয়ে সোজা পথ তৈরি করে নেয়। সে পথ ধরেই লাইন হয়ে হাটছে ওরা। আবুল এতোক্ষন চুপ করে ছিলো। কালো বাদুর নামটা শোনার পর থেকেই ও ছটফট করছিলো। এবার তাহলে চন্দ্রকে যে কিডন্যাপ করেছে তার পরিচয় জানা গেলো! কিন্তু কে এই কালো বাদুর? আবুলের সামনে ছিলো রুদ্র। রুদ্রর চিন্তিত ভাব দেখে কালো বাদুরের বিস্তারিত জানার কৌতুহলটা চেপে রাখলো ও। তবে রুদ্রকে সান্তনা দেয়ার জন্য বললো- কিডন্যাপারের পরিচয় তো জানা গেলো। চন্দ্রও এবার তাড়াতাড়িই উদ্ধার হবে।

রুদ্র আনমনা হয়ে বললো- মনে হয় না।

- কেন? দস্যু কালো বাদুরকে ধরতে পারলেই তো চন্দ্রকেও পাওয়া যাবে।

- আমার কাছে অন্য কিছু মনে হচ্ছে।

- কি সেটা?

রুদ্র আবুলের কথার জবাব না দিয়ে আনমনা হয়ে হাটতে লাগলো। ওর মাথার ভিতরে ঘুরছে- কালো বাদুর! অদৃশ্য কালো বাদুর!

চলবে......

চন্দ্র উপন্যাসের ভুমিকা ও পর্ব সমুহের সুচিপত্র
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৪৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×