somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জিয়াউল শিমুল
.. তবুও আমি আঁধার পথিক, আঁধারের অতিথি হয়েছি আজ বিনা নোটিশে। ঘুম নেই চোখে, ক্লান্তি নেই চরণে... জানি না চলছি কোন্ মেঠো পথ ধরে! *facebook.com/shimulzia *facebook.com/ziaulshimul *ziaulshimul.blogspot.com

চন্দ্র ।। পর্ব - ১৯

২৩ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরদিন খুব সকালেই চাচাতো ভাই আরিফ এবং রুমমেট আবুলকে নিয়ে নার্সের বাড়িতে উপস্থিত হলো রুদ্র। সুন্দরি নার্সের নাম তাহমিনা। এক ছেলের জননি। ছেলের বয়স চার বছর। স্বামি বাড়িতে নেই, সকালে উঠেই বাজারে গেছেন।। নার্সের বাড়ি শহরের পুর্ব পার্শ্বে। ছিমছাম দুই রুমের বাসা। রুদ্রদের পরিচয় পেয়ে বসতে দিলেন তিনি। তারপর বললেন- চন্দ্রকে আমি চিনতাম না। পুলিশ যখন আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তখন ওর নাম শুনি।

রুদ্র সরাসরি আক্রমন করার কৌশল বেছে নিলো। অনেক সময় সরাসরি আক্রমন করলে ভিকটিম অপ্রস্তুত হয়ে যায়। তখন ভিকটিমের চোখের দৃষ্টি এবং বডি ল্যাংগুয়েজ দেখে বোঝা যায় সে সত্যি বলছে কিনা। তাই আক্রমনাত্বক ভাবে চড়া গলায় বললো- চন্দ্রকে কেন কিডন্যাপ করেছেন? ওকে কার হাতে তুলে দিয়েছেন?

রুদ্র ক্ষনিকের জন্য তাহমিনার মুখের রঙ পাল্টে যেতে দেখলো। সেই সাথে তাহমিনার চোখের মনিও যেন একটু কেপে উঠলো। সেটা অল্প সময়ের জন্য। নিজেকে দ্রুত সামলিয়ে নিয়ে তাহমিনা বললেন- কি বলছো এ সব? আমি কেন চন্দ্রকে কিডন্যাপ করবো?

- চন্দ্রকে মেলার যেদিকে নিয়ে যাওয়া হয় আপনাদের ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পটা সেদিকেই ছিলো। আপনাদের সাথে একটা গাড়িও ছিলো। খুন হওয়ার পর চন্দ্র যখন হারিয়ে যায় আপনারা ঠিক তখনই অ্যাম্বুলেন্সে করে মেলা থেকে চলে যান। চন্দ্রকে কিডন্যাপের পিছনে আপনাদের হাত আছে।

তাহমিনা এবার রেগে গিয়ে বললেন- আমাদের হাত আছে মানে? তোমার কি ধারনা ওকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আমরা কিডন্যাপ করেছি?

- সেটাই তো বলছি। তবে ওকে কিডন্যাপের সাহস আপনাদের নেই। কেউ আপনাদেরকে দিয়ে কাজটা করিয়ে নিয়েছে। কে সে?

- তুমি কিন্তু বাড়াবাড়ি করছো। তুমি যা বলছো সেটা তুমি কখনোই প্রমান করতে পারবে না। আমরা যদি চন্দ্রকে কিডন্যাপ করতাম তাহলে কেউ তো দেখতো। আর ওকে কেনই বা আমরা কিডন্যাপ করতে যাবো!

- আপনারা নিজেদের প্রয়োজনে ওকে কিডন্যাপ করেন নি। কিন্তু কারো হাতে ওকে তুলে দিয়েছেন। কে সে?

- আমরা কাউকে কিডন্যাপ করি নি। আর কারো হাতে তুলেও দেই নি।

- আগে না চিনলেও এখন নিশ্চয়ই চেনেন চন্দ্র কে? ওকে কিডন্যাপে সত্যিই যদি সহযোগিতা করে থাকেন তাহলে আপনাকে কিন্তু কঠিন শাস্তি পেতে হবে।

- দেখো, আমি কিছুই জানি না। আর আমাকে ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই। তোমরা ভদ্রতার সিমা ছাড়িয়ে যাচ্ছো। পুলিশও এভাবে আমার সাথে কথা বলে নি।

আরিফ রেগে গিয়ে বললো- আমাদেরকে ভদ্রতা শিখাচ্ছো? সত্যি কথাটা বলে দাও। তা না হলে তোমার মুখ দিয়ে কিভাবে কথা বেড় করতে হয় সেটা আমাদের জানা আছে।

তাহমিনা এবার ভয় পেয়ে গেলো। এদের বিষয়ে পুলিশ ওকে একটা ধারনা দিয়েছে। এরা যদি কিছু করে তবে পুলিশ এদের কিছুই করতে পারবে না।

রুদ্র বললো- পুলিশ আর আমরা এক নই। পুলিশ যা পারে না সেটা আমরা পারি। আর আমি ভয় দেখাই নি। বাস্তবতা বলেছি। আপনাদের উপরে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আপনার চোখ এবং বডি ল্যাংগুয়েজ বলছে আপনি কিছু জানেন। সেটা যদি সত্যি হয় এবং আপনি এখনই যদি সেটা স্বিকার না করেন তাহলে আপনার অবস্থা খুব তাড়াতাড়ি শোচনিয় হবে।

তাহমিনা জানে এদেরকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। তারপরেও বললো- তোমাদের কথা আমি পুলিশকে জানাবো।

- যাকে ইচ্ছে জানাতে পারেন। আপনাকে আমি সতর্ক করে দিচ্ছি, যদি কিছু জানেন তবে সেটা বলুন। আপনি নিজেকে বাচানোর জন্য কারো চাপে পড়ে যদি চন্দ্রকে কিডন্যাপে সহযোগিতা করে থাকেন তাহলে আমরা আপনার কোন ক্ষতি করবো না। কিন্তু যদি এখন কিছু না বলেন এবং পরে যদি প্রমানিত হয় আপনি চন্দ্রকে কিডন্যাপের জন্য সত্যিই দায়ি সেক্ষেত্রে তথ্য গোপনের জন্য আপনি কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হবেন। চন্দ্রকে কিডন্যাপের বিষয়ে তথ্য গোপন করা কোন ছোট খাটো অপরাধ নয়, আমাদের কাছে এটা খুনের চেয়েও বড়।

তাহমিনা এবার গলা চড়িয়ে বললেন- আমাকে এসব কেন শোনাচ্ছো? বলেছি তো আমি কিছু জানি না।

- না জানলে ভালো, বেচে যাবেন। কিন্তু জানলে মাটির নিচে লুকালেও আপনাকে আমরা টেনে বেড় করবো। আমি জানি চন্দ্রকে মেলা থেকে সবার অলক্ষ্যে বেড় করা হয়েছে। আপনাদের ক্যাম্প ছিলো মেলার সাথে লাগা। এক দল লোক চন্দ্রকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে রেখে আপনাদের মাইক্রোতে তুলে দেয়। আর আপনারা সাথে সাথে মাইক্রো নিয়ে কেটে পড়েন। এবং সুযোগ বুঝে কালো বাদুর অথবা অন্য কারো হাতে ওকে তুলে দেন।

তাহমিনা ধিরে ধিরে নিজেকে সামলে নিয়েছেন। তাই এবার চিতকার করে বললেন- আগে প্রমান করো তারপর এ সব বলতে আসো। তোমরা এখন চলে গেলে খুশি হবো আমি।

- ঠিক আছে, চলে যাচ্ছি। তবে আবার আসবো। সেবার কিন্তু প্রমান নিয়ে আসবো। আর হ্যা, সেবার সাজাটাও দিবো।

রুদ্ররা উঠতে যাবে এমন সময় মিজুর বড় ভাই সোহেল বাজারের ব্যাগ হাতে রুমে ঢুকলেন। মিজু লক্ষিপুর স্কুলের পশ্চিম হোস্টেলে থাকে আর রুদ্র থাকে দক্ষিন হোস্টেলে। মিজু রুদ্রের এক ক্লাস উপরে পড়ে, ক্লাস টেনে। সোহেল অনেক বারই মিজুর সাথে দেখা করার জন্য হোস্টেলে গেছেন। সে সুত্রে সোহেল এবং রুদ্র পরস্পরের পরিচিত। আবুলকেও উনি চেনেন। সোহেলকে দেখে রুদ্র আশ্চার্য হয়ে বললো- সোহেল ভাই আপনি!

সোহেল বাসায় ঢোকার সময়ই স্ত্রি তাহমিনার চিতকার শুনেছিলেন। তিনিও আশ্চার্য হয়ে বললেন- তোমরা! কি করছো এখানে?

- আমরা একটা কাজে এসেছি সোহেল ভাই।

তাহমিনা তার স্বামিকে বললেন- তুমি এদেরকে চেনো?

- হ্যা। রুদ্রকে চিনি। আবুলকেও চিনি। মিজুর সাথে হোস্টেলে থাকে।

তাহমিনা ফুসে উঠে বললেন- এরা আমাকে অপমান করছে। আমি নাকি চন্দ্রকে কিডন্যাপ করেছি!

সোহেল রুদ্রকে বললেন- কি ব্যাপার রুদ্র? কি হয়েছে?

রুদ্র সবিস্তারে সব কিছু বললো। কেন তাহমিনাকে ওর সন্দেহ হয়েছে সেটাও জানালো। সব শুনে সোহেল বললেন- তাহমিনা কিছু জানে না রুদ্র। যখন পুলিশ ওকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তখন আমিও সাথে ছিলাম। পুলিশ তোমাদের বিষয়েও আমাদেরকে মোটামুটি ধারনা দেয়। সাবধান করে দিয়ে বলে, যদি তাহমিনা কিছু জানে তাহলে সেটা যেনো গোপন না করে। গোপন করলে আমরা কেউই বাচবো না। পুলিশ ছাড়লেও তোমরা আমাদের ছাড়বে না। পরে তাহমিনাকে আমিও বলেছি, সত্যিই ও কিছু জানে কিনা? ও আমাকে ছেলের কসম দিয়ে বলেছে, ও কিছুই জানে না। তুমি যে চন্দ্রের স্বামি এটা জানলে তোমার সাথে আমিই দেখা করতাম।

রুদ্র অনুতপ্ত হয়ে বললো- সরি, সোহেল ভাই। উনি আপনার স্ত্রি জানলে আমি এভাবে কথা বলতাম না। তারপর তাহমিনার দিকে তাকিয়ে বললো- সরি ভাবি, ক্ষমা করবেন। স্ত্রি হারিয়ে যাওয়ায় আমি সবাইকেই সন্দেহ করছি, কাউকে বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার অবস্থাটা নিশ্চয়ই আপনি বুঝবেন।

তাহমিনা এবার কিছুটা নরম হয়ে বললেন- তোমাদের বিষয়ে পুলিশ যা বলেছে তাতে কোন কিছু গোপন করার সাহস আমার নেই। জানলে পুলিশকেই সব বলে দিতাম।

- আমার বিশ্বাস ছিলো অ্যাম্বুলেন্সটা চন্দ্রকে কিডন্যাপের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। তাই আপনার সাথে কঠোর হয়েছিলাম। এতোটা কঠোর হওয়া আমার উচিত হয় নি। আবারও ক্ষমা চাইছি। এবার তাহলে উঠি।

সোহেল ওদেরকে না খেয়ে ফিরতে দিলেন না। ওদের বাসা থেকে বেড় হয়ে ব্লাড ডোনেশনের ছেলেটার সাথে দেখা করতে চাইলো রুদ্র। আবুল বললো- ছেলেটার সাথে দেখা করে আর কি হবে? মিজুর ভাবি তো বলেই দিলো তারা কিছু জানে না।

- তারপরেও দেখা করতে হবে। যদি কোন তথ্য যাচাই করার উপায় থাকে তবে সেটা যতই সত্য মনে হোক না কেন তবুও যাচাই করে দেখা উচিত। যদিও জানি ছেলেটাও একই কথা বলবে তারপরেও যাচাই করা দরকার।

রুদ্রের মাথায় ঘুরছে, তাহমিনার চোখের মনি ওভাবে কেপে উঠলো কেন? আর কথার সাথে বডি ল্যাংগুয়েজটা কি সন্দেহ জনক ছিলো না? অবশ্য হঠাত করে এভাবে আক্রমন করায় হয়তো অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলেন। সে জন্যও এমনটা হতে পারে।

রিদয় ক্লিনিকের ল্যাব টেকনিশিয়ানের নাম রনি। ক্লিনিকের পাশে একটা মেসে থাকে। সেও চন্দ্রের বিষয়ে কোন তথ্য দিতে পারলো না। পুলিশ ওকে থানায় নিয়ে পিটিয়েছিলো। তখন থেকেই ও ভয়ে আছে। আজ রুদ্রদের জেরায় আরো ভয় পেয়ে গেছে।

দুপুরে বাড়ি ফিরে এলো রুদ্ররা। বাড়িতে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, স্থানিয় এমপি এবং পুলিশ সুপার, বোরহান উদ্দিনের সাথে দেখা করতে এসেছেন। কাচারি ঘরে বসেছেন ওনারা। নানার সাথে দেখা করার জন্য কাচারি ঘরের দিকে এগিয়ে গেলো রুদ্র। কাছাকাছি যেতেই নানার কঠিন গলা শুনতে পেলো- আপনারা আজো চন্দ্রের বিষয়ে কোন তথ্য দিতে পারলেন না। কি করছেন আপনারা? আপনাদেরকে দিয়ে দেশের কি হবে?

একজন বললেন- আমাদেরকে আর কয়েকটা দিন সময় দিন।

- কয়েক দিনে কি করবেন আপনারা? যে কয়েক দিন গেলো সে কয়েক দিনে কি করেছেন?

এমন সময় কাচারি ঘরের দরজায় উপস্থিত হলো রুদ্র। রুদ্রকে দেখে বোরহান উদ্দিন বললেন- কোথায় গিয়েছিলি?

- শহরে একটা কাজ ছিলো।

- আয়, ভিতরে আয়।

রুদ্র ভিতরে ঢুকলে বোরহান উদ্দিন সবার সাথে ওর পরিচয় করিয়ে দিলেন। চেয়ারম্যান ওকে আগে থেকেই চিনতেন। এমপি ও পুলিশ সুপারকে লক্ষ্য করে তিনি বললেন- রুদ্রের আরেকটা পরিচয় আছে। ও চন্দ্রের স্বামি।

এমপি বললেন- তোমার নাম শুনেছি বাবা। চন্দ্রকে খোজার জন্য আমরা সর্বোচ্চ শক্তি লাগিয়ে দিয়েছি। তুমি কোন চিন্তা করো না।

রুদ্র বললো- যতোক্ষন খুজে পান নি ততোক্ষন তো চিন্তা করতেই হয়।

পুলিশ সুপার বললেন- আমরা প্রতিটি এলাকা চিরুনি তল্লাশি করছি। চন্দ্রকে কেউ কোথাও লুকিয়ে রাখতে পারবে না। আশা করছি ওকে খুব শিঘ্রই পাবো।

- এখন পর্যন্ত তো পান নি। চিরুনি তল্লাশি করেও বহুকাল ধরে কালো বাদুরকেও তো আপনারা ধরতে পারেন নি। ধরা তো দুরের কথা, কালো বাদুরের অস্তিত্ব আছে কিনা, সেটা নিয়ে আপনাদের নিজেদের ভিতরেই সন্দেহ আছে! আমরা আপনাদের উপরে কি করে আস্থা রাখি? তবে আপনারা আপনাদের মতো খুজুন কিন্তু আমাদের কেউ যদি আপনাদের কাছে কোন রকম সহযোগিতা চায় তবে সেটার জন্য বিলম্ব না করলে খুশি হবো।

- এ বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারো।

- আরেকটা কথা, আপনাদের কাছে যদি কখনো মনে হয় আমাদের কেউ আইন ভঙ্গের মতো কাজ করছে তবে সেটা না দেখার ভান করে এড়িয়ে যাবেন। আপনারা যদি সফল হতে পারেন তাহলে আমাদের কাউকে সে রকম কিছু করতে হবে না। যদি আমাদেরকে সে রকম কিছু করতে দেখেন তাহলে মনে রাখবেন, সেটা আপনাদের ব্যর্থতার কারনেই হবে।

- যদি তোমাদের সে রকম কিছু কখনো করতে হয় তবে সেটা আগে আমাদেরকে জানালে ভালো হয়। প্রয়োজনে সেটাকে আমরা আমাদের নিয়মের ভিতরে ফেলে দেবো।

- চেষ্টা করবো। আর যদি আগে সেটা জানাতে না পারি সেক্ষেত্রে আশা করবো পরেও আপনারা সেটাকে আপনাদের নিয়মের ভিতরে ফেলতে পারবেন। যেটা আগে পারবেন সেটা নিশ্চয়ই পরেও পারবেন।

- আগে জানালে ভালো হয়।

- ঠিক আছে আংকেল, চেষ্ঠা করবো।

বোরহান উদ্দিন রুদ্রকে বললেন- আমার সাথে তোর কি কোন জরুরি কথা আছে?

- ওনাদের সাথে কথা শেষ করো, আমি পরে বলছি। সন্ধ্যার পরে কথা বলবো তোমার সাথে। তুমি আছো তো?

- হ্যা আছি।

- তাহলে আমি এখন যাচ্ছি।

-যা।

কাচারি ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো রুদ্র। গোছল না করেই আবুলকে সাথে নিয়ে দুপুরের খাবার খেতে বসলো ও। গোছল করতে আবুলকেও নিষেধ করেছে। আজ নদিতে গোছল করবে। খাওয়া শেষে জঙ্গলের মন্দিরে চলে এলো ওরা। এবার দুজন এক সাথেই গুপ্ত গুহায় ঢুকলো। রাজকিয় দরজার লকটা আজো রুদ্র খুলতে পারলো না। তবে দুজনে সুরঙ্গের রুমগুলো পরিস্কার করলো। তারপর ওরা জঙ্গল পেরিয়ে চলে এলো নদির ধারে। নদির এক জায়গায় শান বাধানো ঘাট আছে। এটা জমিদার আমলের। ঘাটটা এখন পরিত্যাক্ত। শুধু ঘাট নয় নদির দুধারেও অনেক দুর পর্যন্ত পাথরের ব্লক দেয়া আছে। ব্লকগুলো চুনসুরকি দিয়ে ঢালাই করা হয়েছে। ঢালাইয়ের ভিতরে লোহার পাতও ব্যবহার করা হয়েছে। নদি এখানে শান্ত। এ নদিটা বর্ষা কালেও ভাঙ্গে না। দুই ধারে ব্লক দেয়ার কারনে জমিদার আমল থেকেই নদিটা একই জায়গায় আছে। এদিকে কেউ আসে না। জমিদারের রাজবাড়ি যখন ধ্বংস হয়ে যায় তখন থেকেই এই জায়গাটাকে অভিশপ্ত মনে করা হয়। নদির ওপাশেও গভির জঙ্গল। নদির পানিতে নামলো ওরা। বেশ কয়েকবার সাতার কেটে এপাশ থেকে ওপাশে গেলো। পানির নিচে দির্ঘক্ষন ডুবে থাকলো। রুদ্র এক পর্যায়ে আবুলকে বললো- তুই ঘাটে গিয়ে বসে থাক, আমি দেখি পানিতে কতোক্ষন ডুবে থাকতে পারি।

- মাঝে মধ্যে তোর পাগলামি আমি বুঝতে পারি না। তোর এই ডুবে থাকা, নদিতে সাতার কাটা, সবই কি চন্দ্রকে খোজার সাথে যুক্ত?

- এখন আমার প্রতিটি পদক্ষেপই চন্দ্রের সাথে যুক্ত। তোর কাছে কোন কিছু যদি কখনো অযৌক্তিক মনে হয় তবে ভেবে নিবি সেটারও কোন কারন আছে। এবার ঘাটে গিয়ে কাপড় পাল্টিয়ে বসে থাক। আমি ডুব দিয়ে আধা ঘন্টার আগে আর উঠবো না।

আবুল অবাক হয়ে বললো- কি বলিস! আধা ঘন্টা পানির নিচে কিভাবে ডুবে থাকবি!

- শুধু আধা ঘন্টা নয়, কয়েক ঘন্টাও আমি ডুবে থাকতে পারবো।

- কিভাবে? কয়েক ঘন্টা কিভাবে নিশ্বাস বন্ধ করে থাকবি?

- আমি ডুব দিচ্ছি। তুই বসে বসে ভাব কিভাবে থাকতে পারি?

রুদ্র ডুব দিলো। আবুল ঘাটে বসে ভাবতে লাগলো, কিভাবে এটা সম্ভব? একটা মানুষ কিভাবে পানির নিচে কয়েক ঘন্টা নিশ্বাস বন্ধ করে ডুবে থাকতে পারে! রুদ্র কি মানুষ নাকি অন্য কিছু! রুদ্র যেখানে ডুব দিয়েছে সে দিকে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকলো আবুল। সময় বয়ে চললো তার আপন গতিতে।

চলবে.........

চন্দ্র উপন্যাসের ভুমিকা ও পর্ব সমুহের সুচিপত্র
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:০৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×