বিগত ২০ বছরে কোন রোজা পার করতে পারিনি কাজ ছাড়া।সেদিক বিবেচনা করলে এবারের পুরো রোজার সময়টা ছিলো আমার জন্য একেবারেই ব্যতিক্রম।টানা প্রায় দুই মাসের গৃহ বন্দি থাকার ক্লান্তি,সংক্রমনের ভয় ,অনাগত ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা নিয়ে কেটেছে দিন গুলো।সবকিছুর পরে চলে এসেছে মুসলিমদের সর্বোচ্চ আনন্দের দু'টো দিনের একটি।ঈদ মানেই হলো উৎসবের দিন।বিশেষ করে রোজাদারদের জন্য যে কি আনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করার কোন শব্দই যেনো নেই অভিধানে।
চাঁদ রাতের সময় যখন " ও মোর রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ " এই গানটি বেজে উঠে বেতারে বা টেলিভশনের পর্দায়।ঠিক তখন থেকেই আনন্দের জোয়ারে ভাসতে থাকে প্রতিটি বাঙালীর হ্রদয়।শুরু হয় হিসেব নিকেশ কোন জামাতটা কোথায় গিয়ে পড়বো।আমার প্রেফারেন্স থাকে যে কোন ইদগাহ ।সেটা যত দুরেই হোক আর যত সকালেই হোক।পৃথিবির যে প্রান্তেই থাকিনা কেনো।এটা আমার জিবনের একটা খুব পরিকল্পিত বিষয়ের মত।অন্য কোন সময়ে আমার ছুটি না থাকলেও এই সময়ে আমাকে কোন কিছুর বিনিময়েই কাজে নিতে পারেনা।অথচ এবারের ঈদে ঘরের কোনে একা একা নামাজ পড়ে শুরু হলো আমার ঈদ।প্রতিদিন চার অংকের সংখ্যায় মৃত্যুবরণ করছে যে দেশে ।যে শহরে বাঙালীরা প্রাণ দিলো স্বদেশের পরেই।সেখানে অবস্থান করে ঈদের উৎসব করা আমার কাছে এক ধরনের অপরাধ বলে মনে হোচ্ছে। এমনকি টেলিফোনে বা সোস্যাল মিডিয়া অথবা ভিডিও কলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে সংকোচ বোধ করছি।বিগত তিন মাসে অনেক মুখচেনা মানুষ চলে গেছে না ফেরার দেশে।তাদের কথা যখন ভাবনায় আসে তখন শুধুই শোকাবিভুত হয়ে পড়ি।
ঈদের দিনে স্বরণ করছি পৃথিবির যে প্রান্তেই হোকনা কেনো করোনার কাছে হেরে যাওয়া মানুষেরা যেনো ভালো থাকে.।আল্লাহ যেনো তাদের ক্ষমা করে দেন।আম্ফানে মৃত্যু বরণ করেছে যারা তাদের আত্মারও মাগফেরাত কামনা করছি।
যদিও জানি মৃত্যুটা জিবনেরই অংশ।এক সেকেন্ডের গ্যারান্টিও কেউ দিতে পারবেনা জিবনের।তবুও মনের কোনে খচ খচ ভাবটা উকিঝুকি দিতেই থাকে অনবরত।আমার ঈদটা না হয় তোলা রইলো করোনা মুক্ত সময়ের কাছে।কামনা করি সবাই যেনো খুব দ্রুতই ফিরে যেতে পারি বিগত ঈদের মত অনাগত ঈদ উৎসবে।
এবারের ঈদের প্রার্থণায় শুভ কামনা থাকলো সামনে থেকে যারা যুদ্ধ করে যাচ্ছে সেই প্রকৃত যোদ্ধাদের জন্য।সবাই মিলে এই যুদ্ধটা জয় করুক। ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো ।ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে অপারগতার জন্য।কি লিখবো, শব্দগুলোও খুজে পাচ্ছিনা । ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০২০ সকাল ৭:১৩