somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব১৩ )

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীর আজকের বায়মন্ডল, জীবমণ্ডলের জন্য এক বিস্ময়কর কৃপা। বায়ুমণ্ডল জীবনকে বাঁচিয়ে রেখেছে এক অপূর্ব মহিমায়। প্রতি মুহূর্তে সূর্যে হাজার হাজার বিস্ফোরণ সংঘটিত হয়। এক একটি বিস্ফোরণ প্রায় এক বিলিয়ন হাইড্রোজেন বোমার শক্তিতে উৎক্ষিপ্ত হয়ে সূর্য করোনাতে সৌর গ্যাস, ধূলিকণা নিক্ষেপ করে। “করোনা” হল সূর্যের প্রান্তসীমায় অব্যহতির প প্রসারিত বিশাল শূন্য যা প্লুটো বা তারও পর পর্যন্ত বিস্তৃত। নিক্ষিপ্ত গ্যাস-ধূলিকণায় অধ্যুষিত করোনায় উৎক্ষিপ্ত সৌর ধূলি সূর্যের অন্তঃস্থ বিস্ফোরণ হতে প্রাপ্ত শক্তি ও করোনার অবিশ্বাস্য তাপের ফলশ্রুতিতে প্রসারিত হয়। এ ধাবমান গ্যাস-ধুলিকে সৌর বায়ু বা Solar Wind বলে। এই সৌর বায়ু জীব দেহের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকারক, যা ক্যান্সারের মত প্রাণঘাতী রোগের সৃষ্টি করে। একটি সৌর বিস্ফোরণের কমপক্ষে ১০ দিনের মধ্যে সৌর বায়ু পৃথিবীর তলে প্রচণ্ড শক্তিতে আঘাত হানে। কিন্তু আমাদের বায়ুমণ্ডল তা প্রচণ্ড প্রতাপে ফিরিয়ে দেয়। নিশ্চিত মৃত্যু প্রতিদিন প্রতিক্ষণ পৃথিবীর চারপাশে খেলতে থাকে, কিন্তু বায়ুমণ্ডল তা আমাদের বুঝতে দেয়না। বেঁচে থাকে জীবন।
বায়ুমণ্ডল জীবনকে বাঁচিয়ে রেখেছে এক অপূর্ব মহিমায়। এর সৃষ্টি, অবস্থান, ব্যাপ্তি ও গুনাগুণের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় এক বিরাট সমন্বয়। গাণিতিক বিজ্ঞতায় জীবন রক্ষাকারী এই পৃথিবী ও তার মহাজাগতিক পরিবেশ সৃষ্টির মুলে ফ্রেড হোয়েলের সেই “ Enormous intelligence” এবং “ Super calculating intellect” এর মত কোন স্রস্টার হস্তক্ষেপ যে প্রয়োজন তার অযুত প্রমাণ মিলে।

আল্লাহ, পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের জন্যে বাসস্থান, আকাশকে করেছেন ছাদ এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক। তিনি আল্লাহ, তোমাদের পালনকর্তা। বিশ্বজগতের পালনকর্তা, আল্লাহ বরকতময়। ( ৪০:৬৪)
অতএব, তোমরা উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে? (৫৫:১৩)


মহাশূন্য হতে প্রতিদিন ২০ লক্ষ উল্কা পৃথিবীতে আঘাত হানার জন্য ছুটে আসে। কিন্তু আমাদের বায়ুমণ্ডলের গঠন এমনি যে, সে তার সুদীর্ঘ প্রসার ও বায়বীয় বস্তু ধারণ দ্বারা সেকেন্ডে ৩০ মাইল বেগে পতনশীল উল্কার উপর সৃষ্টি করে এক অদৃশ্য প্রতিরোধ। উল্কাটি ঘর্ষণের ফলশ্রুতিতে নিঃশেষে ভস্মে পরিণত হয়।

মহাশূন্য মূলত অসংখ্য শক্তি কণা বা অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার এক বিশাল সমুদ্র। আপনি যদি বায়ুমণ্ডলের শক্তিশালী আবরণ ভেদ করে কখনো বেড়িয়ে যেতে সক্ষম হন তবে সেখানে প্রতি সেকেন্ডে ৪ থেকে ৫ টি কসমিক কণা আপনার দেহের প্রতি বর্গ ইঞ্চি তে আঘাত হানবে। এই কণা আপনার দেহে কোটি কোটি ক্যন্সার কোষ তৈরি করে ফেলবে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই। যদি আমাদের বায়ুমণ্ডল এইসব কণাকে বাধা দিয়ে শোষণ বা প্রতিফলন না করত তাহলে বহু আগেই পৃথিবী হয়ে পড়ত প্রাণশূন্য। হাবার্ট ফ্রেডম্যান বলেন “ The streams of invisible radiation and immense clouds of solar gas strike the high atmosphere above us. Shielded by protective blanket of air, our sense receive no inkling of strom above. ”


“ তিনি আকাশকে নির্মাণ করেছেন সুরক্ষিত ছাদ স্বরূপ” (৪০:৬৪)
“ অতএব, তোমরা উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে?” (৫৫:১৩)

জীবনের জন্য যতটুকু প্রয়োজন কেবল ততটুকুই ইনফ্রারেড বা অবলোহিত রশ্মি বায়ুমণ্ডলীয় ছাকুনি পেরিয়ে আমাদের জীবন্ত করে যায়। এ ব্যবস্থাটি না থাকলে পৃথিবীর জীবমণ্ডল সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির উত্তাপে পুড়ে ছাই হয়ে যেত। আবার যেটুকু রশ্মি পেয়ে থাকি তার চেয়ে কম হলে জীবন মৃত্যু শীতলতার দিকে এগিয়ে যেত আস্তে আস্তে। নিরক্ষীয় অঞ্চল ছাড়া সর্বত্র পানি জমাট বেঁধে বরফ হয়ে যেত।

বিজ্ঞান আমাদের আরো জানতে সাহায্য করছে যে, বায়ুমণ্ডল জীবনকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য পালন করছে অনেক প্রতিরক্ষা দায়িত্ব। দিনের বেলা সূর্য তাপ পৃথিবী পৃষ্ঠে যে উত্তাপ সৃষ্টি করে পৃথিবীর কোন পৃষ্ঠ যদি রাতের বেলা তা সম্পূর্ণ হারিয়ে বসে তবে সে পৃষ্ঠটি দ্রুত চলে যাবে বরফ জমে যাওয়ার তাপাঙ্কে। এ পরিস্থিতি যাতে না সৃষ্টি হতে পারে তার জন্য বায়ুমণ্ডলকে পালন করতে হয় এক অনন্য সাধারণ ভুমিকা। পৃথিবী হতে বিকিরিত তাপের ২০% ভাগ বায়ুমণ্ডলের ওজন স্তরের কারনে আতকা পরে যায়। আর এ উত্তাপ আমাদের জানবার বা বুঝবার অজ্ঞাতে জীবনকে বাঁচিয়ে রাখে।

“ নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে এবং নদীতে নৌকাসমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। “ (২:১৬৪)

“ আকাশ পৃথিবী এতদুভয়ের মধ্যে যা আছে, তা আমি ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।“ (২১:১
৬)

পূর্বের পূর্ব:
মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব১২) মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব১১)
মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব১০)
মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব০৯)
মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব০৮)
মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব০৭)
মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব ০৬)
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×