somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই বিশ্বে একমাত্র জাপান কেন যুদ্ধের বিপক্ষে থাকে ?

০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০০ অব্দের একটি পুরনো প্রস্তরযুগীয় সংস্কৃতি জাপানি দ্বীপমালায় প্রথম মানব জনবসতি গড়ে তুলেছিল বলে ঐতিহাসিকবিধরা ধারনা করেন। তারপর খ্রিস্টপূর্ব ১৪,০০০ অব্দ নাগাদ জামোন যুগের শুরুতে মধ্য প্রস্তরযুগ থেকে নব্য প্রস্তরযুগের মধ্যবর্তী সময়ে একটা সেমি-সেড্যানটারি শিকারী-সংগ্রাহক সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। আর তাদের মধ্যে সমসাময়িক কালের আইনু জাতি এবং ইয়ামাতো জাতির পূর্বপুরুষেরাও ছিলেন। সেই মানুষেরা গুহায় বস বাস করতেন এবং তাদের জীবিকা ছিল মূলত কৃষিকাজ।সেই যুগে নির্মিত চিত্রিত মাটির পাত্রগুলি বিশ্বের প্রাচীনতম অধুনা বর্তমান মৃৎশিল্পের কয়েকটি নিদর্শন। খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দ নাগাদ ইয়ায়োই জাতি জাপানি দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশ করে জোমনদের সঙ্গে মিশে যেতে শুরু করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দ নাগাদ শুরু হওয়া ইয়ায়োই যুগে ভিজে-চাল উৎপাদন, মৃৎশিল্পের একটি নতুন ধারার বিকাশ, এবং কোরিয়া ও চীনের অনুসরনে ধাতুবিদ্যার চর্চা শুরু করেন।চীনা বুক অফ হান-এ প্রথম জাপানের লিখিত ইতিহাস পাওয়া যায়। তিন রাজ্যের নথি অনুযায়ী খ্রিস্টীয় ৩য় শতাব্দীর জাপান দ্বীপমালার সবচেয়ে শক্তিশালী রাজ্যটির নাম ছিল ইয়ামাতাই-কোকু। কোরিয়ার বায়েকজে থেজে জাপানে প্রথম বৌদ্ধধর্মের আগমন ঘটেছিল। তবে জাপানি বৌদ্ধধর্মের পরবর্তীকালীন বিকাশ ঘটেছিল প্রধানত চীনা প্রভাবে।আর প্রথম দিকে জাপানে বৌদ্ধধর্ম বাধাপ্রাপ্ত হলেও পরে সেই ধর্ম জাপানের শাসকশ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে এবং অসুকা যুগে সর্বত্র মান্যতা পায়।৮ম শতাব্দীর নারা যুগে জাপানে শক্তিশালী রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। সে সময় রাষ্ট্রশক্তির কেন্দ্র ছিল হেইজো-ক্যো-র রাজসভা অর্থাৎ আধুনিক নারা। নারা পর্যায়ে জাপানি সাহিত্যের বিকাশ ঘটতে শুরু করে।সে যুগেই বৌদ্ধধর্ম-অনুপ্রাণিত শিল্পকলা এবং স্থাপত্যেরও বিকাশ ঘটতে শুরু করেছিল। ৭৩৫ থেকে ৭৩৭ খ্রিষ্টাব্দের বসন্তরোগ মহামারীতে সম্ভবত জাপানের এক-তৃতীয়াংশ অধিবাসীর মৃত্যু ঘটে।৭৮৪ সালে সম্রাট কাম্মু নারা থেকে নাগাওকা-ক্যো-তে রাজধানী সরিয়ে আনেন। এরপর ৭৯৪ সালে হেইয়ান-ক্যো-তে আধুনিক ক্যোটো রাজধানী অপসারিত হয়।সে সময় হেইয়ান যুগ শুরু হয়। সে যুগেই জাপানের স্বতন্ত্র সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটে।আর সে যুগ শিল্পকলা, কবিতা এবং গদ্য সাহিত্যের জন্য বেশ খ্যাত ছিল। মুরাসাকি শিকিবুর দ্য টেল অফ গেনজি ও জাপানের জাতীয় সংগীত কিমিগায়ো-এর কথা এই যুগেই রচিত হয়।হেইয়ান যুগ থেকেই প্রধানত দুটি প্রধান সম্প্রদায়ের,সাইচোর টেন্ডাই এবং কুকাইয়ের শিংগন এর মাধ্যমে বৌদ্ধধর্ম ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ১১শ শতাব্দীর শেষার্ধ্বে পিওর ল্যান্ড বৌদ্ধধর্ম,জোদ-শু, জোদ-শিংশু, খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।
জাপান বর্তমান সময়

জাপান অর্থনৈতিক থেকে শুরু করে তথ্যপ্রযুক্তি এমন কিছু নেই যা তারা জানেন না । শুধু তাই না তারা প্রতিটা ক্ষেত্রে মনে হয় এক নাম্বার
স্থানে আছে ।অস্র,গোলাবারুদ,বোমা,ক্ষেপানাস্র,এমন কিছু নাই তারা পারেনা । জাপানের প্রতিটা শহর উন্নত মানের শহর।
তবুও জাপান কোনো দেশের সাথে শত্রুতা করতে রাজী নয় ।তারা সবার মিত্র বা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায় । আর যুদ্ধ বিরোধ থেকে
জাপান কয়েক হাজার কিলো মাইল দুরে থাকতে চায় । আমাদের সকলের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এত উন্নয়নশীল বা ক্ষমতা সয়ংসম্পূণ্য একটা দেশ কেন তারা তাহলে যুদ্ধ থেকে দুরে থাকতে চান ? তার কথা নিচে দিলাম ।


আমাদের সকলেরি কম বেশি জানা আছে ১৯৪৫ সালের ৬ই আগস্ট সকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী জাপানের হিরোশিমা শহরের ওপর লিটল বয় নামের নিউক্লীয় বোমা ফেলে এবং তার তিন দিন পর নাগাসাকি শহরের ওপর ফ্যাট ম্যান নামের আরেকটি নিউক্লীয় বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।আর এটে অনুমান করা হয় যে ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বোমা বিস্ফোরণের ফলে হিরোশিমাতে প্রায় ১৪০০০০ লোক মারা যান।নাগাসাকিতে প্রায় ৭৪০০০ লোক মারা যায় এবং পরবর্তীতে এই দুই শহরে বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরো ২১৪০০০ জন।জাপানের আসাহি শিমবুন-এর করা হিসাব অনুযায়ী বোমার প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগসমূহের ওপর হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য গণনায় ধরে হিরোশিমায় ২৩৭০০০ এবং নাগাসাকিতে ১৩৫০০০ লোকের মৃত্যু ঘটে। দুই শহরেই মৃত্যুবরণকারীদের অধিকাংশই ছিলেন বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ।জাপানের আত্মসমর্পণের পেছনে সেই বোমাবর্ষণের ভূমিকা এবং এর প্রতিক্রিয়া এবং যৌক্তিকতা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে অধিকাংশের ধারণা সেই বোমাবর্ষণের ফলে যুদ্ধ অনেক মাস আগেই সমাপ্ত হয়, যার ফলে পূর্ব-পরিকল্পিত জাপান আক্রমণ সংঘটিত হলে উভয় পক্ষের যে বিপুল প্রাণহানি হত, তা আর বাস্তবে ঘটেনি।অন্যদিকে জাপানের সাধারণ জনগণ মনে করে এই বোমাবর্ষণ অপ্রয়োজনীয় ছিল কেননা জাপানের বেসামরিক নেতৃত্ব যুদ্ধ থামানোর জন্য গোপনে কাজ করে যাচ্ছিল।
সেই যে জাপান হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমাবর্ষণর এটা যাতা খেয়েছিলেন সেই ভয়টা আজও কাজ করছে,আজও
জাপান কোনো যুদ্ধের কথা শুনলে জাপান ভয় পান সেই হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমাবর্ষণের কথা মনে করে ।
আর এজন্য জাপান কখনো কারো সাথে কোনো যুদ্ধ,দণ্ড,বা বিরোধের আগে পিছে নেই । জাপান কারো সাথে কোনো সমস্যা হওয়ার
আগেই সেলেন্ডার করে ফেলেন । যদি ঠিক হিরোশিমা নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমাবর্ষণের মত কোনো ঘটনা ঘটাতে পারতো বড়
বড় যুদ্ধবাজ দেশগুলোর ওপরে তাহলে হয়ত তারাও কিছুটা সোজা হয়ে যেত । সে অ্যামেরিকা হোক আর ইরান,ইরাকই হোক ।





সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:১৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×