আর্থিক অস্বচ্ছতা: স্বতপ্রণোদিত হয়ে আন্দোলনের শুরুর দিকে বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন আর্থিক সহায়তা দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চকে। কয়েকহাত ঘুরে হলেও অর্থ ইমরান এইচ সরকারের হাতেই গিয়েছে।
বেশ কয়েকদিন আগ পর্যন্ত পত্র পত্রিকায় তিনি কোনো ধরণের আর্থিক লেনদেনের কথাই স্বীকার করেন নি। মঞ্চের কর্মীরা নিজেরাই নিজেদের অর্থের সংস্হান করেছে বলে জানিয়েছেন।
যখন অভিযোগগুলো তীব্রতর হতে থাকলো, তখন তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তি জোর করে তাঁর কাছে টাকা দিয়ে গেছে। কিন্তু এর কোনো হিসাব তিনি রাখেন নি।
সর্বশেষ এক ইন্টারভিউতে তিনি স্বীকার খেতে বাধ্য হয়েছেন, সব কিছুর হিসাব লিপিবদ্ধ করা আছে, যা শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই অর্থ সম্পর্কে হিসাব নিতে ইতোমধ্যে একটি কমিটি হয়েছে। দেখা যাক, কতদূর কি হয়।
বর্তমান সমস্যার সূত্রপাত: আন্দোলনের কোনো কর্মসূচি না থাকলেও গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা শাহবাগ জাদুঘরের সামনে সান্ধ্য আড্ডায় বসেন। সেখানে ইমরানবিরোধী পক্ষটিও বসে প্রতিদিন। শাহীন, মেহেদী, কামাল পাশারাও আসেন।
গণজাগরণ মঞ্চের নিজস্ব অর্থায়নে কেনা গোটা পঞ্চশেক চেয়ার সবসময় শাহবাগে থাকে। কিন্তু ৩ এপ্রিল শুক্রবার সেগুলো পান নি গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা। উল্টো পক্ষের নতুন কয়েকটি চেয়ার দেখে তাদেরকে প্রশ্ন করেন নিজেদের চেয়ার প্রসঙ্গে। তখন বাক বিতন্ডা শুরু হয়। শেষমেশ মারামারিতে গড়ায় দুই পক্ষের বিবাদ। দীর্ঘদিনের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে মঞ্চের কয়েকজন কর্মীকে মেরে বসেন এক পক্ষ।
ইমরান এইচ সরকার বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলও নই, কোনো অফিসও নেই আমাদের। গণআন্দোলনের কর্মী হিসেবে রাজপথেই বসি আমরা। কোনো ঠিকানা নেই, এজন্য সবাই মিলিত হওয়ার জন্য শাহবাগকে বেছে নিয়েছি।
মামলাটামলা শেষে দেখা গেলো মেহেদী ছাড়া পাওয়ার পর ধীরে ধীরে শাহবাগে তারা নিজেরা দখল করে নিতে থাকে। ইদানীং লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, গণজাগরণ মঞ্চের যে মিডিয়া সেল ছিল, সেটা পুরোটাই মেহেদীর সংগঠনের দখলে চলে গেছে। গণস্বাক্ষর অভিযান চালাচ্ছে তারা।
আরও লক্ষ্য করলে দেখবেন, কর্মসূচি ছাড়া এখন আর ইমরান এইচ সরকার বা সঙ্গের কেউ শাহবাগ মাড়ান না। পুরো শাহবাগ চত্বর জুড়েই চলে ইমরানের বিরোধিতা। তবে সবাই যে এক পক্ষেরই তা নয়। বিভক্তির মাঝেও আছে বিভক্তি।। সেগুলো ক্রমাগত বাড়ছেই।
দ্বিখন্ডিত নয়, কয়েক খন্ড: মোটা দাগে ইমরান এইচ সরকারের পক্ষের একটি পক্ষ ও বিপক্ষে একটি পক্ষ দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু এর পরও ভাগ আছে গণজাগরণ মঞ্চে। এই তো সংবাদ সম্মেলন করে একদল ব্লগার তাদের অনাস্থার কথা জানিয়ে দিয়েছে। এর আগেও ৫ বাম সংগঠন তাকে বয়কট করেছে। এখন আবার আলোচনার মাধ্যমে ইমরানকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। সামনে আরও একটা বড় অংশ তাকে ত্যাগ করবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে। যারা ছিলেন ইমরানের ছায়া। ভাবুন তো, কারা হতে পারে ??
গণজাগরণ মঞ্চের গ্রুপিং কেন? পর্ব-১
গণজাগরণ মঞ্চে গ্রুপিং কেন? পর্ব-২
গণজাগরণ মঞ্চে গ্রুপিং কেন? পর্ব-৩