somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চারদিকে শুধু বঞ্চিত, নিপীড়িত আর নির্যাতিত মানুষের দীর্ঘশ্বাস,হাহাকার আর আর্তনাদ । কীভাবে বন্ধ করবেন দুর্নীতি, শোষণ আর নির্যাতন? । যে পুলিশ বেডরুমও পাহাড়া দিবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আর চিন্তা করতে হবে না। ভালো মন্দ নির্ণয়ের মাপকাঠি-১

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

بسم الله الرحمن الرحيم

সকল প্রশংসা আল্লাহর। অসংখ্য দরুদ নাযিল হোক তাঁর নবীর উপর বারবার।
ভালো মন্দের চূড়ান্ত মাপকাঠি হলো একমাত্র ধর্ম


১-এই কাজটা ভালো। এই কথার কি অর্থ ? উত্তর এলো, ভালো মানে হলো এটা একটি উত্তম কাজ।
২-উত্তম কাজ ! এর মানেই বা কি? উত্তর এলো, আরে উত্তম মানে আবার কি? মানে হলো এটা ন্যায়।
৩-এ্যা! ন্যায়! এই ন্যায় মানে কি? উত্তর এলো, ন্যায় মানে,... ন্যায় মানে এটা করা উচিৎ।এটা ভালো।
৪-আরে ভাই আপনি ঘুরে ফিরে এক কথাই বলছেন। বাদ দেন সংজ্ঞা। আসল কথা জিজ্ঞাসা করি।এটা করা উচিৎ , এই কথা আপনাকে কে বলেছে? আপনি বা অন্য কেউ বললেই আমাকে সেটা মানতে হবে কেন? আর ধরেন মানলাম উচিৎ, তো, তাতে কি হয়েছে? উচিৎ হলে করতে হবে ,অনুচিত হলে করা যাবে না, এই বাধ্যবাধকতা কে আরোপ করলো? আপনি বা সমাজ বললেই আমাকে মানতে হবে কেন? ........................
এই এক ঝগড়া, ভালো খারাপ নিয়ে, চলে আসছে অনেক আগে থেকে। ভালো খারাপ কাকে বলে? কিভাবে আমরা বুঝবো যে কোন কাজটা ভালো আর কোন কাজটা খারাপ? কি হবে এর মানদণ্ড ? কে নির্ধারণ করে দিবে এই মানদণ্ড?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যাই হোক, তার আগে আসেন আমরা দেখি মানুষ মোট কয়ভাবে ভালো খারাপ নির্ণয় করে। কোন কিছু ভালো বা খারাপ আমরা বিবেচনা করি মোটামুটি চারভাবে।(কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক সে প্রশ্ন আপাতত থাক।)

১।ধর্মীয় মানদণ্ডঃ বিশ্বাসীরা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ভালো মন্দ বিবেচনা করে । ধর্ম যেটাকে ভালো বলেছে তারা সেটাকে ভালো বলে,এবং ধর্ম যেটাকে খারাপ বলেছে সেটাকে তারা খারাপ বলে।

২।নাস্তিকদের মানদণ্ডঃ নাস্তিকরা নাস্তিক্যবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে ভালো মন্দ বিচার করে। তারা যেহেতু ধর্মকে মানে না,তাই ধর্মীয় আদেশ নিষেধের কোন মূল্য তাদের কাছে নেই। আর সামজিক দৃষ্টিকোণকে তারা একেক জন একেক হিসাবে দেখে।একেক সামাজিক প্রথার ক্ষেত্রে তারা একেক রকম আচরণ করে। বরং সামাজিক অনেক প্রথাকেও তারা যুক্তি ও বিজ্ঞানের মাপকাঠিতে যাচাই করে। নাস্তিকদের দৃষ্টিকোণটা মনে হয় এরকম যে,যে যেটা ইচ্ছা করতে পারে, তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে করে অন্যের কোন ক্ষতি না হয়। সুতরাং বিবাহপূর্ব প্রেম, যৌনতা, মদপান, গান-বাজনা, বিবাহ ছাড়া এক সাথে জীবন যাপন ইত্যাদি তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে কোন অন্যায় নয়। (((আসলে নাস্তিকরা যেহেতু সৃষ্টিকর্তাকে মানেনা, সেই হিসাবে তাদের এই ভিত্তি ঠিকই আছে মনে হয়। ইসলামপন্থীরাও মনে হয় অনেকটা এরকমই বলে যে, আল্লাহ মানুষকে ঐ সকল কাজ করার আদেশই করেছেন যেটা তে মানুষের নিজেরও মঙ্গল, অপরেরও মঙ্গল, দুনিয়ার জীবনেরও মঙ্গল, আখেরাতের জীবনেরও মঙ্গল। অন্যদিকে আল্লাহ মানুষকে ঐ সকল কাজ করতেই নিষেধ করেছেন যেগুলো করলে মানুষের নিজের ক্ষতি বা অপরের ক্ষতি বা দুনিয়ার ক্ষতি বা আখেরাতের ক্ষতি।কিন্তু যেহেতু মানুষ নিজে বিবেক,বুদ্ধি,যুক্তি খাটিয়ে সবসময় এবং নির্ভুলভাবে এটা বুঝতে পারে না যে কোন কাজে তার মঙ্গল আর কোন কাজে তার অমঙ্গল, তাই আল্লাহ যুগে যুগে নবী পাঠিয়ে এটা জানিয়ে দিয়েছেন ।)))

কোন গোঁরা নাস্তিক বলতে পারে যে, আমার কোন কাজে কারো কোন ক্ষতি হলে সেটা খারাপ, সেটা করা যাবে না এটা কে নির্ধারণ করলো? কোন ভিত্তিতে নির্ধারণ করলো? কারো মন চাইলে সে এই বাধ্যবাধকতা মেনে চলুক, কিন্তু সে আমার উপর এটা চাপিয়ে দিতে পারেনা। আমার দরকার হলে আমি অবশ্যই চুরি, ডাকাতি, খুন করবো, রাস্তাঘাটে মেয়েদের জোর করে ধর্ষণ করবো , ঘরবাড়ি , দোকানপাঠ, যানবাহন ভাংচুর করবো ইত্যাদি ইত্যাদি যা খুশী তা করবো। দরকার না হলেও করতে পারি , আবার বিরত থাকতেও পারি । আমার সোজা কথা হলো ভালো খারাপ বলে কিছু নাই। যেটা মন চায় সেটাই আমি করতে পারি। মন চাইলে ভালো থাকতে পারি মন চাইলে খারাপ থাকতে পারি।

তখন সাধারণ নাস্তিক বলতে পারে যে, মানুষ যেহেতু সমাজবদ্ধ জীব, তাই আমাদেরকে সমাজবদ্ধ হয়ে একসাথে থাকতে গেলে, এবং পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে এই আইন মেনে চলতেই হবে যে অপরের ক্ষতি হয় এমন কাজ করা যাবে না।

এবার গোঁরা নাস্তিক বলতে পারে যে, হ্যাঁ, এটা বলো যে আমাদের নিজেদের স্বার্থে আমাদেরকে অপরের ক্ষতি হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। এখানে ভালো খারাপ বলে কোন কথা নাই।

৩।সামাজিক মানদণ্ডঃ আবার আমরা অনেকে সমাজের প্রথা বা চল হিসাবে ভালো মন্দ বিচার করি। সমাজের মানুষের মাঝে কোন একটা বিষয় খারাপ বা অনুচিত বা বেয়াদবী বলে গণ্য হলে আমরাও সেটাকে খারাপ হিসাবে দেখি। সমাজের মানুষ কোন একটা কাজকে ভালো বা খারাপ বললে আমরাও সেটাকে ভালো বা খারাপ বলি।

সমাজের এইসব প্রথা গড়ে উঠার পিছনে অনেক কিছুর প্রভাব থাকে, সেগুলোর মধ্যে ধর্মও একটি শক্তিশালী প্রভাবক। অনেক সময় ধর্মের রীতি আর সমাজের রীতির মধ্যে সংঘর্ষও হয়।সেক্ষেত্রে প্রকৃত ধার্মিকরা ধর্মীয় রীতি তথা সৃষ্টিকর্তার আদেশ নিষেধকে অগ্রাধিকার দেন।

আবার অনেক সময় কোন ধর্মীয় রীতি সমাজেরও রীতি হয়ে যায়। যেমন ঈদ, শবে বরাত ইত্যাদি । তখন প্রকৃত ধার্মিকরা সেটাকে ধর্মীয় নীতি হিসাবেই পালন করেন, দুর্বল ঈমান, বংশ সূত্রে মুসলমান যারা তারা সেটাকে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে হয়তো সমাজের রীতি হিসাবেই পালন করে।সবাই করছে ,না করলে কেমন দেখা যায়, লোকনিন্দার ভয়, পাছে লোকে কিছু বলে।

এখানে একটি অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে যে, আমি এক সমাজের রীতি দিয়ে কখনো অন্য রীতির সমাজের কোন মানুষকে মন্দ বলতে পারিনা।বর্তমানের সমাজের বা আমার নিজের সমাজের কোন প্রথার উপর অন্ধ ভক্তির কারণে অতীতের কোন সমাজের বা বর্তমানেরই ভিন্ন কোন সমাজের মানুষকে আমি খারাপ বলতে পারিনা। যেমন ধরেন আমাদের দেশের কোথাও কোথাও এই প্রথা আছে যে ঈদের দিন বা কোথাও বেড়াতে গেলে মুরুব্বীদের পা ধরে সালাম করতে হয়, না করলে বেয়াদবী মনে করা হয়, বলা হয় যে, আদব কায়দা কিছু শিখেনি। এখন এই কদমবুসির রীতির সমাজের মানুষ কিন্তু ভিন্ন রীতির আরেক সমাজের কাউকে কদমবুসি না করার কারণে বলতে পারেনা যে, আদব কায়দা কিছু শিখেনি বা অভদ্র ইত্যাদি। এরকম আরো অনেক রীতি আপনারা খুঁজলেই পাবেন। কথায় বলে এক দেশের গালি আরেক দেশের বুলি।এই বিষয়টি আর একটু ভালো করে বুঝতে হলে সামুর প্রখ্যাত নাস্তিক ব্লগার জনাব পারভেজ আলমের এই লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন

আবার আপনি আপনার সমাজের কোন রীতিকে ভিন্ন সমাজের রীতির চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলতে পারেন না এই হিসাবে যে এটা আপনার সমাজের রীতি। তাহলে ভিন্ন সমাজের লোকেরাও তো একই কথা বলবে। তেমনিভাবে আপনি বর্তমানের কোন রীতিকে অতীতের সমাজে প্রচলিত কোন রীতির চেয়ে ভালো বলতে পারেন না। সবার কাছেই তো নিজেরটা ভালো লাগবে। আপনার সমাজের রীতি তো অতীতের সমাজের রীতিকে ভেঙ্গেই তৈরী হয়েছে। অথচ তখন সেটাই ভালো ছিলো সমাজ হিসাবে।তাহলে ভালোকে ভেঙ্গে যেটা আসলো সেটা কি ? আবার বর্তমানের রীতিও পাল্টে যাবে একসময়।

এখন আপনি যদি বলেন যে, এমনি এমনি তো আমার সমাজের রীতিকে শ্রেষ্ঠ বলবো না , কোন যুক্তির ভিত্তিতেই বলবো। তাহলে কিন্তু আপনি আর এই ৩নং গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত রইলেন না ,যারা নাকি সামাজিক প্রথাকেই ভালো খারাপ নির্ণয়ের মানদণ্ড বা ভিত্তি মানে। আপনি তাহলে যুক্তির ভিত্তিতে ভালো খারাপ নির্ণয়কারীদের গ্রুপে পরবেন।

এখন ধরেন যদি আপনি কদমবুসি রীতি পালনকারী সমাজের পক্ষে যুক্তি দেন যে, এই রীতিটা ভালো, কেননা এতে করে বড়দের প্রতি বেশী সম্মান প্রকাশ পায়। তখন ঐ সমাজের মানুষ বলবে, বড়দের সম্মান করা বা একটু বেশী সম্মান করা যে ভালো এটা আপনি বললেন কোন যুক্তিতে। এখন যদি আপনি বলেন যে, আরে ভাই এটা সাধারণ বিবেকেই বুঝা যায়, আপনাদের বিবেক কি বলে ? এই কথা বললে তো আপনি যুক্তিবাদী গ্রুপের থেকে লাফ দিয়ে বিবেককে ভালো খারাপের মানদণ্ড নির্ধারণকারী গ্রুপের সদস্য হয়ে গেলেন। এখন তাহলে কথা হলো বিবেক কি ভালো খারাপের মানদণ্ড হতে পারে কিনা । এ ব্যাপারে সামনে আলোচনা আসছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে আপনি ভালো খারাপ নির্ধারণ করার কোন ভিত্তি বা মানদণ্ড খুঁজে পাচ্ছেন না।

৪।বিবেকের মানদণ্ডঃ অনেকে বলেন বিবেক দিয়ে ভালো মন্দ নির্ণয় করতে হবে। বিবেক কি? সহজ ভাষায় বলা যায়, মানুষের ভিতর একটি শক্তি এমন আছে যেটা তাকে ভালো কাজ করতে বলে, খারাপ থেকে বিরত থাকতে বলে। এটাকে আমরা বিবেক বলি।(বা সু প্রবৃত্তিও বলি। ভুলে গেলে চলবে না যে মানুষের মাঝে কিন্তু খারাপ কাজের প্ররোচনা দানকারী কু প্রবৃত্তিও আছে) কিন্তু কথা হলো ভালো কাজ করতে আর খারাপ কাজ না করতে বলার আগে, ভালো খারাপ, উচিত অনুচিত নির্ধারণও কি বিবেকই করে? নাকি পূর্বের তিন ভিত্তির আলোকে মনের মধ্যে আগে থেকে নির্ধারিত ভালো খারাপকে বিবেক করতে বলে বা বিরত থাকতে বলে? যদি বলি বিবেক ভালো খারাপ নির্ধারণও করে তাহলে প্রশ্ন আসবে বিবেক ভালো খারাপ নির্ধারণ কিসের ভিত্তিতে করে ? বিবেক যে সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত দিবে সেটার কি নিশ্চয়তা? বিবেকে বিবেকে তো মতভেদ হয়। এখন এক বিবেক সঠিক হলে অন্য বিবেক ভুল। তাহলে তো বুঝা গেলো কারো কারো বিবেক ভুল করতে পারে। এখন কার বিবেক সঠিক সিদ্ধান্ত দিলো আর কারটা ভুল সিদ্ধান্ত দিলো এই ফায়সালা কে করবে? কোন ব্যাক্তি বা গোষ্টি কি বিনা যুক্তিতে বিনা বিচারে নিজেদের বিবেকের সিদ্ধান্তকে অন্য কারো উপর চাপিয়ে দিতে পারে? নিজের বিবেকের ফায়সালা মতো সে কি অন্য কারো কোন কাজকে খারাপ বলতে পারে? এখন যদি উভয় দল, এটা ফায়সালা করার জন্য বসে যে, কাদের বিবেকের সিদ্ধান্ত সঠিক ; তাহলে যেটার উপর ভিত্তি করে ফায়সালা করবে সেটাইতো ভালো মন্দের মাপকাঠি হয়ে গেলো, বিবেক আর মাপকাঠি রইলো না।(যদি ফায়সালার ভিত্তিটা যুক্তি হয় তাহলে আবার সেই আগের ৩নং পয়েন্টের চক্করে পরতে হবে, অনেকটা ডিম আগে না মুরগী আগে সেরকম অবস্থা আরকি) তাই আমার মনে হয় বিবেক কোন ভালো মন্দ নির্ণয়ের মাপকাঠি নয়, বরং ধর্ম, সমাজ, শিক্ষা, যুক্তি ইত্যাদির প্রভাবে একটা মানুষের মনে ভালো মন্দের যে একটা মোটামুটি লিস্ট তৈরী হয় সুস্থ বিবেক তাকে সেই লিস্ট থেকে ভালোটা করতে বলে আর মন্দটা থেকে বিরত থাকতে বলে। আবার এই বিবেকটুকুও কিন্তু খুব দুর্বল বা প্রায় মৃত হয়ে যেতে পারে, বারবার বিবেকের অবাধ্য হয়ে মন্দ কাজ চালিয়ে যেতে থাকলে। (বা কথাটা এভাবেও বলা যায় যে- এবং এভাবে বলাটাই অধিক শুদ্ধ মনে হচ্ছে- সুস্থ বিবেক ভালো মন্দ নির্ণয় করতে পারলেও, মতভেদের জায়গায় এটা ফায়সালা করা যায় না যে কার বিবেক সুস্থ আর কারটা অসুস্থ, কার বিবেকের সিদ্ধান্ত সঠিক আর কারটা ভুল। এই ফায়সালা একমাত্র তিনিই করতে পারেন যিনি ভালো মন্দকে সৃষ্টি করেছেন, সৃষ্টি করেছেন বিবেককে। তাই ধর্ম তথা আল্লাহর আদেশ নিষেধই হতে পারে ভালো মন্দ নির্ধারণের একমাত্র স্থির মাপকাঠি; ধর্মকে মাপকাঠি বিশ্বাস করলেই যে কেউ খারাপ কাজ করবে না এমন নয়। এই বিশ্বাস অনুযায়ী জীবন চালানোর জন্য লাগবে আল্লাহ্‌র শাস্তির ভয় , এবং এই পরিমাণ ভয় যে, যেসব জিনিষ (যেমন, রাগ, হিংসা, অহংকার, লোভ ইত্যাদি)মানুষকে খারাপ কাজের দিকে চালিত করে সেসবের উপর যেন তার ভয় জয়ী হতে পারে। )

আবার দেখুন, বিবেক বা সু প্রবৃত্তি শুধু ভালোর দিকে আপনাকে আহ্বান করতে পারে কিন্তু বাধ্য করতে পারেনা। সেই সাথে মানুষের মাঝে রয়েছে কু প্রবৃত্তি, যেটা মানুষকে খারাপ কাজের দিকে প্ররোচনা দেয়। মানুষ অভাবে পরলে টাকার জন্য , বিপদে পরলে তা থকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য, এক কথায় দুঃখকষ্ট , বিপদ আপদ থেকে বাঁচার জন্য এবং সুখ শান্তি, আরাম আয়েশ, ভোগ বিলাসের জন্য শতভাগের কাছাকাছি মানুষ নিজের বিবেকের কথা না শুনে নিজের কু প্রবৃত্তির কথা শুনে অনৈতিক কাজ করে, অপর মানুষের ক্ষতি করে। তাই সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য, এক মানুষকে অপর মানুষের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য পুলিশ আদালত,জেল জরিমানা ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়েছে; যাতে করে মানুষ এসবের ভয়ে সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী কোন কাজ না করে। কেননা, দুনিয়াতে খুব কম মানুষই শুধুমাত্র বিবেকের কথা স্বেচ্ছায়, কোন ধর্মীয় বা রাষ্ট্রীয় বা বৈষয়িক ভয় ও প্রলোভন ব্যতীত শোনে। আর যদি এমন হয় যে বিবেকের কথা শুনলে বরং দুনিয়াবী কোন ক্ষতি হতে পারে বা লোভনীয় কোন কিছু হাত ছাড়া হতে পারে ,তাহলে তো আর কথাই নেই ।অবলীলায় তখন মানুষ রাষ্ট্রীয় , সামাজিক, পারিবারিক ইত্যাদি সকল আইন পদদলিত করে। দুর্বল বিশ্বাসের সাধারণ মানের ধার্মিক, এবং যে নাকি ধর্মকে আল্লাহ্‌র হুকুম হিসাবে মানে না বরং সামাজিক প্রথা হিসাবে মানে এরা তখন সহজেই বিবেকের কথা অমান্য করে আল্লাহ্‌র আইন লঙ্ঘন করে ফেলে। বেশীরভাগ মানুষ নিজের ক্ষতি করে , লস করে বা নিজের সুবিধা, আরাম ত্যাগ করে শুধু বিবেকের কথায় সৎ পথে চলবে না, রাষ্ট্রের আইন মানবে না, সমাজের রীতি মানবেনা। কোন কিছুর ভয় বা আশা তার সামনে থাকতেই হবে।এই জন্য সর্ব যুগেই আইন ছিলো, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ছিলো। কিন্তু পুলিশ তো প্রত্যেক ঘরে ঘরে, অফিসে অফিসে পাহাড়া দিতে পারে না। যার ফলে খারাপ লোকেরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঠিকই অবৈধ কাজ করে যাচ্ছে। দিন দিন বাড়ছে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অনাচার,খুন-রাহাজানি-ব্যভিচার,নির্যাতিত হচ্ছে মানবতা, নিষ্পেষিত হচ্ছে মানবাধিকার।বাতাসে ভাসে ক্ষুধার্ত, আহত শিশুদের ভয়ার্ত আর্তনাদ, বেদনার হাহাকার। নিয়ত ঘটছে শত অন্যায়-অত্যাচার, দুঃশাসন-ব্যভিচার, আর লুটপাট-রাহাজানি ; নিপীড়িতের হাহাকার কেউ নাই শুনিবার। এখন তাহলে কি উপায়? একটাই উপায় আছে, আর সেটা হলো মানুষের মাঝে আল্লাহ্‌র ভয় সৃষ্টি করা। আর আল্লাহর ভয় পুলিশের চেয়ে অনেক বেশী কার্যকরী, আইন শৃঙ্খলা রক্ষায়। কেননা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারো বেডরুমে পুলিশী প্রহরা বসাতে না পারলেও আল্লাহর ভয় কিন্তু বেডরুমে, রাতের অন্ধকারে, নির্জন প্রান্তরে সব জায়গায় পুলিশ হিসাবে কাজ করবে, যদি অন্তরে আসলেই আল্লাহর ভয় থাকে। এখান থেকেই আপনি বুঝুন ধর্মের তথা আল্লাহ ভীতির কি প্রয়োজনীয়তা। যেই কারণে পুলিশের, জেলখানার প্রয়োজন সেই কারণেই ধর্মেরও প্রয়োজন এবং তুলনামূলক বহুগুণে বেশী প্রয়োজন। আল্লাহ্‌র ভয় কিভাবে মানুষকে খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে তা জানতে হলে এখান থেকে একটু ঘরে আসুন। নীচে ৫নং কমেন্টেও এই লিংকের বক্তব্য দিয়ে দিলাম।


তাহলে আমরা একদম উপরের ৩নং ও ৪নং মানদণ্ডের আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম যে, ধর্মই হতে পারে ভালো খারাপ নির্ণয়ের একমাত্র স্থির মাপকাঠি।

এরপর আমরা বুঝতে পারলাম সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় ধর্মের কত প্রয়োজন। (ধর্মের সত্যতার কোন প্রমাণ যদি কেউ নাও পায় , তবুও তাকে সমাজের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একটি সঠিক ধর্মের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করতে হবে)

এরপর আমরা নাস্তিকদের এ সম্পর্কীয় কিছু অযৌক্তিক প্রশ্নের উত্তর জানতে পারব কমেন্টে। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ্‌র দয়ায় ১ম পর্ব শেষ হলো।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৩৩
৭টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রোএক্টিভিটি এবং কম্পাউন্ড ইফেক্ট: আমার গুরুত্বপূর্ণ দুইটি শিক্ষা

লিখেছেন মাহদী হাসান শিহাব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১১



আমার গুরুত্বপূর্ন দুইটা লার্নিং শেয়ার করি। এই দুইটা টুল মাথায় রাখলে দৈনন্দিন কাজ করা অনেক সহজ হয়। টুল দুইটা কাজ করতে ও কাজ শেষ করতে ম্যাজিক হিসাবে কাজ করে।

এক.

স্টিফেন কোভের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

লিখেছেন সায়েমার ব্লগ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৩

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ
ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

১।
যৌন প্রাকৃতিক, জেন্ডার নয়।জেন্ডার মানুষের সৃষ্টি (social, cultural construction)। যৌনকে বিভিন্ন সমাজ বিভিন্ন সময়ে যেভাবে ডিল করে, তাঁকে ঘিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্মৃতির ঝলক: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুভূতি এবং মনের শান্তির খোঁজে

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০১



সরল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে একটি ঘূর্ণায়মান পথ জুড়ে ঘুরে বেড়ানোর অবস্থানে আমি খুব শান্তি অনুভব করি। নদীর জল ছুঁয়ে পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সঙ্গে এক আন্তরিক সংযোগ অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×