মানুষ অনুরোধে ঢেঁকি গিলে,আমি গিল্লাম কারখানা।বাংলা সিনেমা আনার সময় সবাই আমারে চিড়িয়া জ্ঞান কইরা দেখতে লাগল।মানইজ্জতের পারদ ০ এর কথায় নামাইলাম।
ব্যাটারা শুরুই করলো নকল কইরা...'ডার্ক নাইট' এর স্টার্টিং সিন দিয়ে।
প্রথমেই বাংলাদেশ সিক্রেট সার্ভিসের বিল্ডিং এর রূপ দেখাইল। পরে হুশ-হুশ কইরা এমন তিন-চারেক শট দেখাইল...মনে হইল সাউথের কম্পুটার শিখার বিজ্ঞাপন…...
বিশিষ্ট কোটওয়ালা চিবুকে বুড়া আঙ্গুল দিয়া টিপতে টিপতে চিবুক ভ্যানিশ করার চেষ্টা করতেছে...এমন সময় সোহেল রানার আগমন...চেহারা হইসে থাপ্পড় খাওয়া বখাটের মতন... সোহেল রানারে দেখতেই বুড়োআঙুল ওয়ালা খট্টাশ কইরা স্যালুট দেয়। সোহেল রানা আইসাই তার মিতারে...মানে আরেক রানাকে খুঁজে...উত্তরে শুনে রানা ছুটিতে...তারপর এই আজাবের প্রযোজকের দেখা পাইলাম...confusing ঘটনা...ব্যাটা বাথরুমের দরজা খোলা রাইখাই গোসল করে......????
এরপর আবেদনময়তার ইজ্জত মারা একটা সাঁতারের সিন দেখা গেল......তারপর সুইমিং পুল থেকে অনন্ত সাহেব সোজা হেলিকপ্টারে... আর কিছু ভুং-ভাং শেষে বড় ভুং-ভাং দেখলাম...... গাড়ি থেকে দুই foreign মাল খটখট কইরা অনন্তর কাছে যায়..আর গিয়েই মধুর কুশল বিনিময়......কথা শুইনা ইংলিশ সেকেন্ড পেপারের dialogue writing এর কথা মনে পরল...নায়কের দুইটা গুন চোখে পড়ল...১। সুরেলা গলা, আর ২। কথায় কথায় ধন্যবাদ দেয়...Foreigner দুইটা কিপ্টুশ তাইপের...পিচ্চি একটা প্যাড দিয়ে বলে এই নাও information....অতি জঘন্য উচ্চারণের জন্য নিনোকে খুঁজে কই আনতে বলল সেইটা বুঝিনাই ।
প্যাড পাইয়া মাহমুদের কি হইল...সে হাটা ধরল উল্টাপাল্টা দিকে...মনে হইল কোন এক বুড়া যেন তারে তারায় দিল......তারপর উনি হোটেলে পায়ের ধুলা দিলেন,...।
এবার ক্যামেরা গেলো নিনো শাহেবের দিকে...তার মোবাইলে ফোন আসে তিনি চিল্লান মাইরা বলেন...স্টপ দা লিমো......আমি ভাবি সুপারহিরইন মিমো......নিনো ইংলিশে বাংলা সিনেমার সংলাপ অনুবাদ করল……আরো ২ সেকেন্ড ভুং-ভাং শেষে তার দুই সাগরেদ অনন্তর হোটেল রুম পাইয়া গেলো...এত তাড়াতাড়ি ক্যামনে possible আই ডোন্ট নো !পরিচালক ভাইয়া নায়করে উচাইতে গিয়া দুনিয়া ডাউন খাওয়ায় দিসে। বললাম কেন,সেইটা পুরা সিনেমা না দেখলেও বুঝা যায়।ইতালিয়ান ভিলেনরা জোড়াতালিয়ান সিস্টেমে 'মাহমুদ হাসানের' ঘরের তালার ইজ্জত নিলো,মানে তালা ভাঙল আর কি!দরজা খোলার শব্দ শুনিয়া মাহমুদ চাচা জং ধরা ক্যামেরার মতন নিজেই স্লো-মোশন দেয়ার চেরেশটা করলেন।ভিলেনরা ঢুইকা দেখে ঘরে ধু-ধু মরুভূমি,কেউ নাই।অমন সময় মাহমুদ চাচা ৫ কদম দৌড় দিয়া,হাল্কা শর্ট ভার্সন জাকি চান সাজিয়া ধরাশায়ী করিলেন। ভিলেনের হাড্ডি পাতলা,একবার ঠেস মারতেই অবস্থা খারাপ...নায়ক খুব অল্পেই তুষ্ট...নিনো লস আঙ্গেলেসে থাকে শুনাই আর শুনার দরকার মনে করে নাই...
তারপর অদ্ভুত আজাইরা শট । ঘাড়ে ব্যথা ঠ্যাঙে মালিশ! নিনো এল.এ তে শুইনা নায়ক ভাগা দিসে হলিউডে, gfরে নিয়া মউজ-ফুর্তি কইরা পরে সে জিগাইল, টেল মি আবাউত নিনো,পরে এইসব উ-চুং-ভাচুং শুইনা আমার মাথা নষ্ট,......
এদিকে মেজর কামরুলের ইংলিশ আর চেহারা দুইটাই মন খারাপ কইরা দিল!ব্যাটা দেখি উসাইন বোল্টের গতিতে ইংলিশ কয়...প্রাকটিস করতে গিয়ায় মনে হয়...দারি কামানর টাইম পায়নাই।সুজা বাংলায় কইলেই হয়...কাপ্তেন ববি অপেখখা করতেছে……..
জাই হোক...এরপর দেখলাম ববি আনটির ক্যাটওয়াক...তাই করে করে তিনি অফিসে হাজির...মজার জিনিস হইল...মেজর কামরুল একটা সুইচ টিপতেই আনটি হাটা দিল। অসাধারণ !!
আইটেম গানের উপযোগী দেহসম্পন্ন ববিরে দেখিয়া সোহেল রানার আল-পাচিনো টাইপ ভং,সত্যি প্রশংসার যোগ্য !
পরে দেখি ববি আনটি ছাড়া আর কেউ নিনোর ব্যাপারে কিছুই জানে না। বাংলাদেশ সিক্রেট সার্ভিস যে সরকারি, তা ফাঁকা অফিস দেখেই বুঝা গেল। সোহেল রানা খুব ভদ্র, সবখানেই কামরুলের অনুমতি নেন। তার অনুমতি নিয়েই তিনি মাহমুদ চাচাকে বাংলার মাটিতে আসতে বললেন। চাচা ক্যান খালি হাতাহাতি করে সেইটা বুঝলাম না! খানিক পরেচাচার আরেকখান স্লো-মোশন। ভুঁড়ির দুলুনি ঢাকার জন্যই মনে হয় এই ব্যবস্থা!
তাঁর সুরেলা গলায় শুনি, “i have to go back to bangladeshsh..."
এরপর আসলেন বর্ষা আপা...ওনার কথা শুনলে আসলেই চক্ষে বর্ষা নামতে চায়...উনার সিমকারডও মনে হয় চাইনিজ...গাড়ি থেকে নেমে ফোন ধরা লাগে। উনার আবার কয়েকটা টয়-বয়ও আছে। কথা শুনলে যে কেউ ভিরমি খাইয়া পেট ভরাইতে পারবেন। এরপর চাচা স্ক্রিনে তাঁর ধামাকা স্টার্ট দিলেন...এক দৌড়ে usa থেকে গ্রামের বাড়ি ! গিয়েই তিনি নারকেল গাছে ঘুসি দিতে লাগলেন।সাথে লাথি ফ্রি।চাচার চিকন হাত নিয়া বুকডনের সিক্রেট বুঝতে পারিনাই ।উনার আম্মাজান আসলে আরো কিছু বিস্ফোরক কথা শুনলাম...যেমন 'ম্মাহ,খুদা পেয়েচে,খেতে দাও না' !!পরে সোহেল দাদুর কাছে গিয়ে ছাড়লেন,'ইপ ইউ ডোন্ট মাইন্ড...'!
চাচার ব্রিফিংস লাগে...তো ববি আনটি হাজির।চাচার স্লো মোশন এবারো দেখলাম।পরে আর কিছু ভং-চং শেষে, চাচারে গলফ খেলতে দেখা গেল,পরনে সাদা প্যান্ট,তা থেকেই আনটি আত্মহারা। নিনোর খবর জানাতে উনি জমকালো শাড়ি পরে এসেছেন।২-৩টা লুলামি আলাপ করে,চাচা ববিরে ধন্যবাদ দিয়ে(চাচা আসলেই ভদ্র) উঠলেন।চাচার মনে হয় জায়গাটা পছন্দ না।।মাথার উপর খালি মরা পাতা পড়ে।যাওয়ার সময় এবার উনি ঘাড় ঘুরাইতেই তোলপাড় হয়া গেল...গান শুরু !
পরে চাচারে দেখি পানির মধ্যে...জঙ্গলে জাইতেসেন উনি,মুখে মনে হয় মেনয একটিভ লাগানো। শেখানে আরেক দফা কমেডি হইল,গার্ড মাত্র দুইজন থাকে বিল্ডিং এ ,আর বাকিরা জঙ্গলে।মাহমুদ চাচা কোন গ্রহের বাইনোকুলার ইউজ করেন জানি না!গুলি করলে উনার বন্দুক কার্টুন হয়ে যায়।গার্ডদের গুলি খেলেও রক্ত বের হয় না(টিকটিকি নাকি?) এক গার্ড গুলি খাইয়াই সাঁতার দিল। অ্যাকশন শেষে টপ কইরা নিনো আংকেল কথা থেকে আসলো জানি না,মনে হয় গাছে বইসা ছিল।প্পিচ্চিদের নারকেল পাতায় খেলার মত করে এরপর চাচারে একটা ছয় ফুটি আফ্রিকান টাইনা নিয়া গেল। চাচার সিগন্যাল পায়না দেখে আনটির মাথা নষ্ট।
এরপর যা দেখলাম,দেশের ডাক্তারদের জন্য তা লজ্জার!ড.এজাজ সাদা এপ্রন পইরা,হাতে ডাণ্ডা নিয়া খাড়ায় আসে।ওনার সামনে আমাদের প্রযোজক চাচা মিয়া,উনি আবার চেয়ারে বান্ধা । দেখিয়া মার্ডার-২ এর জাকুলিনরে মনে পড়ে(কারণ অনন্ত আর জাকুলিন দুইজনের গায়েই সাদা গেঞ্জি কিনা!!) এক চমক শেষ না হইতেই আরেক চমক!স্ক্রীনপ্লে রাইটার মনে হয় 'মাঝে মধ্যে' স্টার মুভিজ দেখেন,সেইজন্যে শুধু ভং-চং গুলাই দেখছেন বেশি। এজাজ মিয়া চাচারে হাতের পিগমি ডাণ্ডা দিয়া বাড়ি দিলে চাচার মুখ দিয়া রক্ত ছলকায়,আবার গ্রামের বারিতে চাচার মাও উশটা খায়!উনার বুক ধড়ফড় করে! টোটাল হ্যানককিয় ব্যাপার!!!এজাজ মিয়া এরপর তিন-চারটা বাড়ি দিয়া ঘেমে যান,আর রাহুল দ্রাবিড়ের ভঙ্গি নকল করেন।মাহমুদ অরফে অনন্তর হাতে হাত..সরি হাতুড়ি দিয়ে বাড়ি দিলে উনার আম্মার হাত থেকে পানি ছলকায়,কলসি ভাঙ্গে!উনার 'দমফুটা' লাগে!! মারহাবা!!!মারহাবা!!
''বাংলার আল-পাচিনো'' সোহেল রানা মেজর কামরুলকে বল্লেন,মাহমুদের মাকে খবর দিয়ে আসতে হবে।ববি আনটি বলল, ''আমিও যাব আমিও যাব...'' তারপর ঢাকা থেকে তিন-চার সেকেন্ডেই তারা ওয়াইমাক্স গতিতে গ্রামের বাড়িতে চলে যায়।মেজর কামরুল, মনে হয় ভ্রুণে থাকতেই ইংলিশ শিখসেন, তাই বাংলা তাঁর জিব্বায় আসে না। এবার অনন্ত চাচার দৃশ্য । ড. এজাজ অনন্তরে তিন বাড়িতেই সম্মোহিত কইরা ফালাইলেন।দেইখা আমি ভাবলাম,তাহলে ত স্যারদের মাইর খায়া আমি কবেই হিপ্নো হয়া যাইতাম!!দেশ ত তাইলে মেধাবী দিয়া ফাইটা যাইত!!!
তো বাস্তবের অনন্ত পর্দায় অনন্ত হইলেন।এজাজা মিয়া অনন্তরে দিয়া কিছু পাতিল,আর বরফের চাই ভাঙ্গাভাঙ্গি করাইলেন, বরফকলে চাকরি করতেন নাকি বুঝলাম না। তারপর কিছু পিটি করানর পর পিস্তন দিয়া গোলাপ ফুটা করতে বললেন(গাধা নাকি!!)অনন্ত একটা পাপড়ি ফালায়া এজাজরে খুশি করলেন।জিমে(নামেই জিম,ভিতরে সদরঘাট)অনন্ত লোহার চাক্তি নিয়ে খেলেন।তার খেলায় বাদ সাধেন এজাজ,দুইটা স্বনামধন্য পালোয়ান(দেখতে অপরূপ!)এনে বলেন এদেরকে শুয়াইতে পারলে ''ট্রেনিং'' শেষ(বাঁচলাম)।এরপর ''ইয়া!'' ''আই'' ''উই'' করে চাচা শুয়াইলেন,পড়ে এজাজের সাথেও একটু, ''ওপেনটি বায়স্কোপ'' খেলে ট্রেনিং শেষ করলেন। এরপর অনন্ত কাজ পাইলেন,''রইসুদ্দিন শেখকে খুন করতে হবে।তিনি ট্যাক্সিক্যাব দিয়ে জায়গামত গেলেন,গায়ে রবিন্দ্রনাথী আলখেল্লা!! সেই আলখেল্লা আর কাধে স্কুলব্যাগ নিয়ে তিনি ছাদে উঠে স্নাইপার দিয়ে ঢং করেন এবং মিশনে ফেইল মারেন। ফেইল কইরা তিনি পলান্তি মারেন।
এরপর তাঁরে দেখা গেল দড়ির দোলনায় দুলতেসেন,নিজের বিল্ডিঙের ভিতরেই।বরলক মানুশ তো,মাথা একটু ৬৯-৯৬ আছে।এজাজ ভাই ফোন করলে অনন্ত তাকে মাস্টারপিস উপহার দিলেন,''আমার পখখে কোন শিশুকে মারা সম্ভব নয়।'' তার বাচনভঙ্গি সুনলে মানুষ এম্নিতেই খুন হবে!!উপহার পেয়ে এজাজ আশীর্বাদ করলেন,''গো টু হেল''।
হুট কইরা চাচার ঘরে দুই মস্তান হান্দায় যায়। সাথে সাথে বিসাল বপু নিয়া অনন্ত হাল্কা গড়াগড়ি দিতেই তাঁর হাতে পিস্তল আইশা পড়ে।চাচারে গুলি মারলে, উনার ডিগবাজিই এনাফ !!অনন্ত বামে ,ভিলেন গুলি করে ডানে।একজন আবার গুলি খাইলে ঝাপ মারে।অনন্তর রবিন্দ্রনাথী আলখেল্লায় জাদু আছে।সেইটা ঝাপ্টা মারতেই পিস্তল দিয়া তাশ-তুশ কইরা গুলি বের হয়। পড়ে খালিপায়ের অনন্ত আর জিপে বসা ভিলেনদের একচন।অনন্ত মনে হয় বদ গন্ধ ছাড়েন,তাই তিনি সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়,আর রাস্তায় দউরানর টাইমেও মুখশপরা ভিলেনের সাথে লড়লেন। এরপর তিনি ফশ কইরা ব্রিজের কাছে গেলেন,আর গিয়া গ্রেনেড খাওয়ার চেষ্টা করলেন।তাঁর চেষ্টা সফল,তিনি গ্রেনেড ফুটতেই তিনি পানিতে লাফ দেন(খুশির চোটে নাকি???)
তিন মাশ পর,অনন্তরে দেখলাম গ্রামে।হাইব্রিড গ্রাম, কাঁচা রাস্তার মধেই রাজপথ!!সাইকেল থেকে হেলিকপ্টার পর্যন্ত আসে!!!তবে ফ্লাইওভার থেকে গ্রামের বাড়িতে কেমনে আশা গেল বুঝিনাই।
অনন্তকে অজ্ঞান অবস্থায় সোহেল খান উঠায় নিয়া আসছিলেন।তিনি বলেন “খালি নাম কয় অনন্ত,বেক্কল নিহি!!!” তার বক্তব্বে সর্বদাই অনন্তর প্রতি তার অগাধ বিরক্তি প্রকাশ পায়।
খানিক পরেই "The Red Lipstick Murder".সিনেমায় লাল টুকটুকে লিপস্টিক মেখে জাভেদের আগমন।উনি একজনকে ফোনে বলছেন ,নিনোর কাছ থেকে চট্টগ্রাম পোর্ট থেকে আর্মস নিতে।তারপর কিছু মারফতি কথাবার্তা শেষে,পোর্টে নামতে গিয়া তিনি নাম্লেন ডিস্কো ক্লাবে।এদিক-উদিক চাইতেই উমা-ধুমা কোমর বেকানি গান।চিকনি চামেলি স্টাইলে ববি আনটির আগমন।তবে সোহেল রানা আসলে জমত। জাভেদ খালি মদ খায়া গেল। বিনা পারিস্রমিকে কাজ করসে মানে হয়।
এবার অন্ন গ্রহের একখান একশন। ঈদের চাদের মত বাঁকা একটা নৌকা নিয়া নিনো আর এক মাইয়ামানুসের ভুচুং-ভাচুং দেখলাম,টোটাল কমপ্লেক্স!!চারজনের পিস্তলে মোট গুলি দুইটা,হাত দিয়া এক্স-মানের মতন গ্রেনেড বের । সিনেমাটারে এই কারনেই জঙ্গি-জঙ্গি লাগে।
নতুন চরিত্রের আগমন-জাভেদের বোন বর্ষার বয়ফ্রেন্ড পাভেল। উনি ছেলে না মেয়ে সেইটা বুঝতে মাত্র ২ মিনিট লাগসে! উনি আসলেন গানের মাঝখান দিয়া।গানের লাইন, "পিরিতি ভাল না!"টোটাল মারফতি!!নিউকামার হয়েই যে নাইচ দেখাইলেন পাভেল আপা......থুড়ি ভাই, কুদ্দুস বয়াতির দিন শেষ!!!প্রেমিকার সাথে ডিনারে উনার মানিব্যাগ আনতে মনে থাকে না।তবে দারুণ ঢেঁকুর দিতে পারেন । স্লিপ অব টাঙের দোষে উনি আংকেলকেই বাবা বলে বসেন!!!উনারে দেইখা আমারো স্লিপ অব মাইন্ড হইসে।
মনে হয় রিভিউ বেশি বড় কইরা ফেলতেসি । অল্প কথায় বলি।পাভেলরে এরপর জাভেদের অনুগত লোক ধরে নিয়ে পিটটি দেয়।জনাবের নাম ফিফটী-ফিফটী।জাভেদ আদর করে ফিফটী বলে ডাকেন।উনার জামা-একদিকে পুরা সাদা,আর আরেকদিকে পুরা কালো । ব্যাটম্যানের হারভে ডেন্টের মত।
ঘটনার পরে বর্ষা খুউব সেজেগুজে বাসা থেকে ভেগে যান।এদিকে অনন্তও ভাগা দেন।গ্রামে থাকা অনন্ত আর শহরে থাকা বর্ষা একই বাসে উঠেন। উঠেই তিনি অনন্তর গা ঘেঁষে বসেন। নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর চিন্তা নাই,তিনি ফ্রিলি বলতে থাক্লেন,তার কাছে অনেক টাকা আছে। ফিফটীর মাথায় হয় স্যাটেলাইট আছে,আর নাইলে তিনি কুকুরের ক্ষমতা পাইসেন । বর্ষা যেখানেই যান,তিনি হাজির । তো বাসের সামনে আইসাও তিনি হাক দিলেন, আর বর্ষা উপহার দিলেন তাঁর মাস্টারপিস,"ও মাই গট, ওরা আমাকে ধরে নিয়ে যাবে,ও মাই গট!!!"ব্যাপক বিনোদন পাইলাম!(তবে উনার এভরি কথা ইজ মাস্টারপিস!)।তারপর একটা ক্লাসিক মারপিট শেষে অনন্ত বর্ষাকে নিয়ে হাইব্রিড গ্রামে যান।এরই মাঝে একটা একশন শেষ হইল,আর পুরাটা টাইম বরসা,সিন্দাবাদের ভুতের মতন চাচামিয়ার ঘাড়ে চাইপা থাকলো ।
যাই হোক,অনন্ত-বরষা , হাইব্রিড গ্রামে গিয়া আবার সোহেল খানের বাড়িতে গিয়া উঠে । পুরা সিনেমায় সোহেল খানই একমাত্র ভাল অভিনয় করছেন। তাঁর বউ যেই অভিনেত্রী উনার নাম জানি না।
অনন্ত-বর্ষা একই ঘরে ঘুমাইলেন......উইটাপাল্টা ভাইবেন না,বর্ষা বিছানায় , আর অনন্ত মাটিতে।ওইখানেও বর্ষা আপার লুলামি যায় না । ঘুমন্ত অনন্তরে উনি ট্যাংট্যাং কইরা প্রশ্ন করেন । জবাব না পেয়ে রাগ করে বলেন"একজন সুন্দরী মেয়ের প্রশ্নের জবাব দেয়াটা ভদ্রতা। আর ভয়ে আমি লুঙ্গি পইরা নিলাম প্যান্টের বদলে ,কখন আবার কাপড় নষ্ট হয়ে যায় হাসতে হাসতে !!
অনন্ত চেইতা ফায়ার! চেইত্তা গিয়া বললেন ,তিন মাস উনি কোমায় ছিলেন।উনি নিজের নাম ছাড়া অন্য কিছুই মনে করতে পারেন না।দুঃখে বর্ষা আপা (এখন চাচি বলা লাগবে মনে হয়) কাতর হয়া গেলেন।
ভোরের দিকে চাচার গজিনী সিনড্রোম হইল, তিনি আহা-উহু করতে লাগলেন । বর্ষা লাফ দিয়া অনন্তর পাশে গেল,তারপর মাথায় পানি দেয়ার বদলে দুইজনেই আচমকা জলপ্রপাতের নিচে চইলা গেল,মানে গান শুরু হয়া গেল।প্রতিটা গান একটা করে কমেডি প্যাক। অনন্ত ক্যান্ট ড্যান্স সালা......বর্ষাই খালি ফাল পারল,আর অনন্তর হাত ধইরা টানল।
নাস্তা অনন্ত বর্ষারে ছাড়া খাবে না, তাই সে তারে আনতে গেল । ফাঁকা মাঠে অনন্তরে দেইখা বর্ষার লুলামি চেগায়া উঠলো......যুগপৎ আহ্লাদে ও উচ্ছ্বাসে তিনি বললেন তিনি কখনও গ্রামের বাড়ি যাননাই(সিনেমায় প্রথমেই বলছিলেন,তিনি গ্রামের বাড়িতে আসছেন)। এরই মধ্যে ফিফটি মিয়া হাজির হেলিকপ্টার নিয়া। বা……থুড়ি……হেলিকপ্টার ফালায়া তিনি দৌড়ানো শুরু করলেন, তাঁর স্পীডও বাইড়া গেল।উনি অলটাইম শটগানে দুইটা গুলি রাখেন । হাল্কা একশন শেষে যথারীতি অনন্ত পলান্তি দিলেন । কিছুদুর গিয়ে উনার মোটরগাড়ি বিকল হইল । ঠিক করতে গিয়া উনি ব্যাথা পাইলেন, আর বর্ষা হাতে ফুঁ দিতে ছুটে গেলেন, আর ফিল্মের আরেকটা গান শুরু হইল । গানের মাঝে অনন্ত শেভ করা বগল দেখাইতে দেখাইতে ভাঙ্গা নৌকার উপর লাফান।দুর্দান্ত কোরিওগ্রাফি ।
গান শেষে তারা পাভেলের বাসায় যান । পাভেল চেত-মেত দেখাইলে অনন্ত পাভেলরে ধমক দিয়ে বলেন,''সুন্দরী মেয়েদের সাথে ভদ্রভাবে কথা বলতে হয়(??)।"জানি না উনি এই তত্ত্বকথা কই শিখলেন।পাভেলও কম যান না,তিনি বর্ষাকে বলেন, "এই মালটারে কোত্থেকে জোগাড় করলা!!"
এদিকে জাভেদ মাষ্টারকে পাঠাইলেন অনন্তকে মারার জন্য। আর ফিফটি অনন্তরে রোবট কইতেই এজাজ নায়করে চিনে ফেলেন। পরে অনন্তের ছবি হাতে নিয়া অনন্ত বেঁচে আছে টাইপ কথাবার্তা বলেন।
এদিকে অনন্ত আবার ঢং দেখান । গোসলের সময় মাথার চুল পরিষ্কার করতে গিয়ে উনার অনেক কিছু মনে পড়ে।পরে পাভেল,বর্ষা আর অনন্ত(তিন নাডা!) চেয়ারে বসা।পাভেল কোত্থেকে একটা ফাইল এনে জাভেদকে,মানে বর্ষার ভাইকে সন্ত্রাসী প্রমাণ করলেন । মনে হইতেসে "খোকাবাবু" দেখতেসি।
হঠাৎ মাষ্টার এসে তাণ্ডব চালান।অনন্ত লুকান ফ্রিজের দরজার পিছে।আর মাষ্টার গুলি কইরা ডিম ভাংলেন, পপকর্ণ উড়াইলেন । ঠিকমতো গুলি মারতে চান না । ছাদে কিলঘুসি খায়া মাষ্টার ছাদ থেকে পইরা গেল ।
অনন্ত ফোনে এজাজকে থ্রেট দিলে এজাজের প্যান্ট খারাপের যোগাড় । জাভেদকে তিনি খবর দিলে জাভেদের উক্তি "আমি কি তোর মত হিজড়া নাকি?আমার কিছুই হবে না"।
এজাজ যে বিল্ডিঙের ভিতর বসা,সেই বিল্ডিঙে লিফট দিয়ে ৫তলায় উঠে জটিল একশন দৃশ্য দেখাইলেন চাচা । মারামারির সেসদিকে তিনি খালি গা হয়ে গেলেন। তাঁর থ্রি-প্যাক বডি(বুকে ২,আর ভুঁড়িতে ১)মুগ্ধ করার মত।
পরে চেম্বারে গিয়ে,এজাজের মাথায় এলইডি লাইট লাগান পিস্তল ঠেকাইয়া, এজাজকে মুশফিকুর রহিমের মত গলায় অনন্ত জিগাইলেন, "অনন্ত কে?"আরো অনেক প্রশ্ন । পরে এক পাক ঘুইরা এজাজকে গুলি মারলেন ।পাক খাওয়ার পর পুরাটা সময় তিনি ইচ্ছা করে খুড়ায় খুড়ায় হাঁটলেন । খুড়াইতে খুড়াইতেই তিনি লিপ্সটিকওয়ালা জাভেদের বাড়ির সামনে আইসা পড়লেন । বাইনোকুলার দিয়ে গার্ডদের দেহে টাইম নষ্ট করার পর তাড়াতাড়ি সবগুলারে স্নাইপার দিয়া শুয়ায় দিলেন । ইতোমধ্যে ধানক্ষেত,মাইক্রবাস এসব থেকে টিশার্ট পরা ভিলেনরা আসতে লাগ্ল,আর অনন্ত তাঁর ক্লাসিক ডিগবাজী চালু করলেন, এবং যথারীতি সবাই শেষ ।
জাভেদের রুমে আবার নিনো আঙ্কেল ঢুইকা পরসেন । ঢুইকাই ধাতানি দিলেন জাভেদকে।জাভেদ চিল্লাইলো,"অনন্ত ইজ হিয়ার!" নিনোর প্রস্ন,"আ-নান-থও???" তারপর নিজেই তাঁর মোকাবিলা করতে নামলেন । নিনো ভালই ঘুষি মারেন...আর বারবার নিজের ঘাড় মটকামটকি করেন।অনন্ত নিনোকে একটা করে লাথি আর গুলি দিয়ে ছুট মারেন।লাথি লাগে চাপায়,আর গুলি হাতে।জাভেদও ভাগা দেন।আর নিনো কেউ নাই দেইখা হাতের গুলি খাওয়া জায়গা থেইকা রক্ত নিয়া চাটা দিলেন!!!
মোটরসাইকেল চালাইতে চালাইতে অনন্তর খায়েশ হইল,ইয়ট চালাবেন। তাই তিনি ইয়টের দিকে ছুটলেন।মাঝপানিতে গিয়া তিনি পাক খাওয়া শুরু করলেন ইয়ট নিয়া।জাভেদ তা দেইখা অনন্তরে জ্বালাইতে আসলেন।অনন্তর ড্রাইভিং দেখে তিনি হেসে কুটিকুটি।এমন সময় ইয়ট আর জাভেদের হেলিকপ্তার,দুইটাই একসাথে ধ্বংস হইয়া গেল । টোটাল কমপ্লেক্স!!
ততোক্ষণে পাভেল আর বর্ষা আপা হাজির।বর্ষা কিছুক্ষণ ভাউয়া ব্যাঙের কান্না দিলেন । অনন্তর খুড়ানি আর থামে না।
পরে মোটরসাইকেল করে তিনি মায়ের কাছে যান,আর গিয়ে দর্শকদের ইমোশনাল অত্যাচার করেন।
পাভেল আর বর্ষা এদিকে ডিসকাশন করতেসেন । পাভেল ভাইয়ের মুখে প্রেম-পিরিতি নিয়া মারফতি কথাবার্তা।তিনি বর্ষাকে বলেন জে,সিনেমার নায়িকাদের মতন বর্ষা ডায়লগ দেন । এমন সময় নিনো এসে তাকে গুলি করে চলে যান,সাথে বর্ষাকে নিয়ে। বর্ষা কাইত-কুইত পারলেন বহুত , লাভ হইল কচুটা!
এইদকে আবার মুখোশপরা ভিলেনেরা অনন্তকে মারতে ছুটে।কারন সম্ভবত অনন্তর বদ গন্ধই । অনন্তর মা অনন্তকে বলছিলেন নাস্তা রেডি।এই মহিলা খালি বিয়ে করা আর খাওয়াদাওয়ার কথাই বলে গেলেন পুরা ফিল্মে।হঠাৎ ভিলেনরা আসলো,আবার পিস্তল নিয়া অমিতাভের ডনের জিনাত আমানের মত ববিও আইসা পড়লো। তাঁর কাচ থেকে অনন্ত পিস্তল পাইলেন ।অনন্তর মা খুব বেশি উস্তা খান, তা খাইতে গিয়া তিনি কপালে রক্ত(আসলে লাল রঙ)নিয়া মারা গেলেন । অনন্ত মুহূর্তেই হাতের কাজ শেষ করে মা-আ-আ-আহ-হা-হা-হা চিৎকার দিয়া আকাশ-বাতাস দুই ফালটা কইরা ফালাইলেন । কান্নাকাটি শেষ করে,সোহেল রানার সাথে দেখা করতে যান । তাকে দেখে রানা হাল্কা শট খাইলেন । তারপর অনন্ত ক্যাপ্টেন ববির বাড়িতে উঠেন ।এইটা কিন্তু হাইব্রিড বাড়ি । বাইরে টিনের চাল দেওয়া আর ভিতরে এপার্টমেন্ট । ব্যাকগ্রাউন্ডে একটা কনকচাঁপা টাইপ গান ছাড়া,অসহ্য!
পরেরদিন মাহমুদ,মানে অনন্ত বেশ ভং ধইরা নিনোর আস্তানায় যান, আর তাঁর চেয়ে বেশি ভং ধরেন ববি। তাঁর চোখের সামনে কার্টুনের গোল্লা ভাসে……আয়রনম্যানের হাস্যকর নকল!! নিনো আর তার গার্লফ্রেন্ড ছাদে নাচানাচির সময় অনন্ত বাদ সাধেন।ভুঁড়িটা নিয়ে সারা এলাকা দৌড়াদৌড়ি করে তিনি নিনোকে অস্থির করে ফেলেন।গুলির খরচ কমাইতে তারা গ্রেনেড চুরেন,চাইনিজ গ্রেনেড,খালি ধুলা উড়ে।বর্ষার মাথায় পিস্তল দিয়া গুলি করল নিনোর গার্লফ্রেন্ড।বর্ষার "ব্রেভ হার্ট" অবস্থা।ব্রেইনে গুলি খাইল্লেও তিনি মরেন না।উনার মুখ দিয়ে রক্ত পড়ে!আজব মাল!!
নিনোর জন্য অনন্ত আবার ছুট মারেন।মেজর কামরুলকে দেখা গেল নিনোকে খবরটা জানিয়ে মীরজাফরগিরি করতে।অনন্তর মটরসাইকেল ভাল লাগে না, তিনি ঘোড়ায় চাইপা নিনোকে ধরতে যান । নিনো এদিকে বর্ডার ক্রস করতেসে, ট্রেনে ঝুইলা ঝুইলা(বিএসএফ আসে কি করতে!!)।অনন্ত ট্রেনের ভিতর গিয়া ভারচুয়াল কপ খেল্লেন।তারপর নিনোর সাথে তেলেগু মারপিত করলেন,(সাস্থের কারনে বলা)।এরপর ফাইনাল মাস্টারপিস দিলেন, "ইউ ওয়ানা ডিস্টয় মাই কান্টি, আই এম গনা ডিস্টয় ইউ""!!!
অতঃপর "হ্যাপি এন্ডিং""।বর্ষারে দেখলাম অনন্তর চলমান ভুঁড়িটা জরায় হাইটা যাইতেছে.........তারপর এই লেখাটা সেভ করলাম। প্রথম লেখা, বেশি বড় হইলে ডু নট মাইন্ড।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



