শারমিন: ভাল আছেন? বেশ কিছুদিন পর আপনাকে ফেসবুকে দেখলাম ।
নোমান: হ্যালো, শারমিন, কেমন আছো?একটু ব্যস্ত ছিলাম ।
শারমিন: কানাডায় পড়তে যাবার পর আপনার লেখা পত্রিকায় খুব একটা দেখিনি ।
নোমান: আসলে লেখা হয়ে ওঠেনি, পড়াশুনার ব্যস্ততা ।
শারমিন: আর ওয়েদার?
নোমান: ওয়েদার এখন ভাল । সবে মাত্র সামার শুরু হয়েছে ।
শারমিন: কানাডার সামার নিশ্চয়ই আমাদের এখানকার মতো না । এখানে তো সেদ্ধ হবার মতো অবস্থা । তারওপর আবার ইলেকট্রিসিটির বেহাল দশা ।
নোমান: এখানকার সামার ওতোটা হার্স না । এই ধর পুরো সামারে দুই একদিন টেম্পারেচার ফোর্টি সেলসিয়াস ক্রস করে । আর ইলেকট্রিসিটি-- হুম--এখানে আসার পর লোড শেডিং-এর কথা ভুলতেই বসেছিলাম । সেদিন অনলাইন পত্রিকায় পরছিলাম সারা দেশে তীব্র বিদু্ৎ সংকটের কথা । আচ্ছা সেই কুইক রেন্টাল বিদু্ৎকেন্দ্র গুলোর কি অবস্থা?
শারমিন: তেলের অভাবে সবগুলোই বন্ধ । জনশ্রুতি আছে এগুলোতে হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে ।
নোমান: এখন বিদু্ৎ মন্ত্রি কে?
শারমিন: আমি ঠিক জানি না । কে যেন সেদিন বলছিল প্রধানমন্ত্রি নিজেই ।
নোমান: তারপরও এ অবস্থা ?
শারমিন: অবস্থা তো ভালই --
নোমান: কেন?
শারমিন: কিছুদিন আগে বিদেশী এক সমীক্ষা তথ্য দিয়েছে প্রধানমন্ত্রির ওপর দেশের ৭৭% মানুষের আস্থা আছে ।
নোমান: বল কি? চারিদিকে এত সমস্যা, অসন্তোষ, তারপরও--ঠিক বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না ।
শারমিন: সেজন্যই সরকার সমর্থক পত্রিকাগুলোকে বিষয়টা নিয়ে খুব একটা উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করিনি । হয়ত তারাও সমর্থনের এই বিশাল হারটি নিয়ে কিছুটা বিব্রত । অবশ্য যারা এই সমীক্ষাটি করেছে তারা জানিয়েছে এই তথ্য এক বছর আগের । এক বছর আগের তথ্য হঠাৎ করে এখন কেন প্রকাশ করা হলো এটাও একটা প্রশ্ন ।
নোমান: ঠিক, বিশেষ করে যখন প্রচন্ড গরমে বিদু্ৎ বিহীন মানুষ সরকারের উপর প্রচন্ড ক্ষুদ্ধ তখন এই ধরনের সমীক্ষা প্রকাশ অনেকটা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো লাগতে পারে । আওয়ামী লীগ যখন ২০০৮ সালে পরিবর্তনের শ্লোগান নিয়ে এসেছিল তখন অনেকের মতো আমিও কিন্তু তাদের ওপর বিশ্বাস করেছিলাম । যদিও আমার ভোট দেয়ার সৌভাগ্য হয়নি ।
শারমিন: কেন?
নোমান: আমাকে একটা কেন্দ্রে ডিউটি দিতে হয়েছিল ।
শারমিন: তাই নাকি? কোথায়?
নো্মান: ঢাকাতেই, বাড্ডা এলাকায় ।
শারমিন: তাহলে তো আপনি ভাল বলতে পারবেন, অনেকে যে অভিযোগ করে ২০০৮ সালের ইলেকশনে ব্যাপক কারচুপি করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে ।
নোমান: আমি মাত্র একটি কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলাম । পুরো দেশে কি হয়েছে আমি বলতে পারব না । তবে আমার কেন্দ্রের ভোট গনণা পর্যন্ত আমি ছিলাম এবং সেখানে আওয়ামী লীগ বিএনপির প্রার্থী থেকে প্রায় দু'শ ভোট বেশি পেয়েছিল । গ্যালোপের মতো সমীক্ষা না করেও পপুলার ভোট কোন দিকে তার একটা আঁচ কিন্তু আশে পাশে রাস্তা ঘাটে মানুষের সাথে কথা বলেও অনেকটা অনুমান করা যায় । সেই সময় পপুলার ভোট আওয়ামী লীগের দিকেই ছিল । অবশ্য বিএনপির মাত্র ৩০ সিট অনেকের মতো আমাকেও কিছুটা অবাক করেছে ।
শারমিন: এখন পপুলার ভোট কোন দিকে?
নোমান: আওয়ামি লীগের দিকে যে না সেটা এই বিদেশের মাটিতে বসেও বলে দেয়া যায় । লাস্ট ইলেকশনে তুমি কাকে ভোট দিয়েছিলে?
শারমিন: আমি তখনও ভোটার ছিলাম না ।
নোমান: তাই নাকি? তোমার কথা বার্তাতেও বোঝা যায় না তুমি অতটা ছোট ।
শারমিন: এখন অবশ্য অতটা ছোট নই । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে অনার্স করছি ।
নোমান: খুব ভাল। তাহলে তো তোমার সাথে অর্থনীতির বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যায় ।
শারমিন: প্লিজ না ।
নোমান: কেন?
শারমিন: সারাদিন ক্লাস করে এখন আর এসব ভাল লাগবে না । তারচেয়ে বরং অন্যকিছু নিয়ে আলোচনা করা যাক । আপনি তো বিয়ে করেননি, করবেন না?
নোমান: করার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু এখন আর বোধহয় করব না ।
শারমিন: কেন?
নোমান: সম্প্রতি এখানে একটা বই বেরিয়েছে । বইটির লেখিকা হলেন পামেলা হ্যাগ, নাম- ম্যারেজ কমফিডেনশিয়াল । সেই বইয়ে তিনি লিখেছেন গত কয়েকশ বছরে পৃথিবীতে ব্যাপক পরিবর্তন হলেও ম্যারেজ নামক এই প্রতিষ্ঠানটি এখনও আগের মতোই রয়ে গেছে যা তার মনে বর্তমান যুগের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় ।
শারমিন: তাই নাকি?
নোমান: হ্যা । তিনি তার বইয়ে লিখেছেন এখন বিবাহ হওয়া উচিৎ পাঁচ বছর, সাত বছর কিংবা দশ বছর মেয়াদী । এই সময়ে দম্পতিরা যদি নিজেদের সান্নিধ্যে থাকতে পছন্দ করে তাহলে তারা আবার রেজিস্ট্রি করে বিবাহ কালে মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারে ।
শারমিন: অদ্ভুত !
নোমান: হ্যা ।
শারমিন: আপনিও কি সে রকম কোন সঙ্গী খুঁজছেন নাকি?
নোমান: হা- হা- হা । না । আমি এখন 'ব্লাইন্ড ডেট' পর্যায়ে আছি ।
শারমিন: সেটা কি?
নোমান: মনে করিও দিও পরের বার ফেসবুকে দেখা হলে বলব । আজ যেতে হচ্ছে ।
শারমিন: ওকে । ভাল থাকবেন ।
নোমান: তুমিও ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


