somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

***একটি নীতি বর্জনে যার মহাকীর্তি***

১১ ই এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৩:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আশা করছি আজ দিনটাতে আপনি কাউকে বর্জন করেননি।
বর্জন! নামটা ছোট হলে কি হবে কাজটা অনেক গুরুত্বের।কিভাবে?

আরে; সারাদিনি তো আপনি অনেক বর্জনই করে থাকেন এই ধরুন- পেন, খাতা,শার্ট,ঘড়ি,গাড়ি, কাজ,পড়ালেখা ইত্যাদি জড় থেকে শুরু করে প্রেমিক/প্রেমিকা নামক জীবিত জিনিসের ও দিনে-মাসে-বছরে-যুগে-(না, শতাব্দীতে যাওয়া একটু বেশিই হয়ে যাবে) কয়েকবার বর্জন ঘটান। তাই না ??

হ্যালো হ্যালো মাননীয় পাঠকবৃন্দ ,এতো গম্ভীর হওয়ার দরকার নেই।আপনি ইচ্ছেমতো যা খুশি তাই বর্জন করতে পারেন এমনকি প্রেমিক/প্রেমিকাকে ও বর্জন করুন তাতে আমার কিছুযায় আসে না।(আপনি ছাড়া কারোই কিছু যায় আসে না ঃপ )
আপনার বর্জনের যায়-ই তুলকালাম নীতি থাকুক না কেন এই নীতিটা কেবল আপনারি।তবে আপনি যদি একটু খুচিয়ে খুচিয়ে বর্জন জিনিসটার মর্মাত এমনভাবে নিরুপন করে করতে চান যেখানে ‘ইচ্ছেমতো’ শব্দটার জায়গায় ওই যে ইংরেজীতে বলে “law and Order” আনবেন তবে কিছুটা গৌতম-গম্ভীর হতে হবে।

এই ধরনের এক বর্জন চিন্তা ভাবনায় এক অস্ট্রিয়ান ব্যাক্তির তখন রাতের ঘুম হারাম। ‘থ্যাক, থ্যাক কি করে যে এই জিনিসটা ব্যাখ্যা করি’ এমন ভাবনায় তার দিন বিভোর।
সেই ব্যাক্তি কিন্তু হেলা-ফেলা কোন কিছুর ক্রিয়া নীতি বুঝতে চাচ্ছেন না। তিনি ‘পরমাণু’র গঠন নিয়ে ভাবছেন।(হুমমমম...) কিভাবে এই চিন্তা তার মাথায় এল??

গত ১৯০০ শতাব্দীতে পদার্থজগতে(অপদার্থ জগতগুলো বর্জনই করলাম :P )তোলপাড় কান্ড ঘটানো দুই জামেলার এক হলো এই পরমাণু বিদ্যা যাকে পদার্থ বিজ্ঞানের জামেলা ভাষায় সাবলিল ভাবে ডাকা হয় ‘কোয়ান্টাম(বিচ্ছিন্ন শক্তির/বস্তুর)বিদ্যা’।
এর শুরু বোর করেছিলেন এক এমন ধারণা দিয়ে যা কিছুটা এমন, ‘ পরমাণু-যা আমি দেখি নাই; জিন্দেগিতে দেখার সৌভাগ্য ও নাই তবু ও আমি বলছি রাদার ভাইয়ের (রাদারফোর্ড, জামেলা বিদ্যায় নোবেল জয়ী জামেলাবিদ যিনি এই পরমাণু বিদ্যা্র ভিত্তি স্থাপক)সৌর নামক উদ্ভট মডেলকে একটু পাল্ঠিয়ে যে, “ হুম, পরমাণু(বৃত্ত) কেন্দ্র ধন চার্জিত নিউক্লিয়াসের চারদিকে ঋণ চার্জিত ইলেক্ট্রন কিছু নির্দিষ্ট কক্ষপথে(বৃত্তের পরিধি বরাবর কল্পনায়) ঘুরতে থাকে এবং তারা এই ঘুর্ণনের সময় কোন শক্তি বিকিরন করে না।তবে প`যাপ্ত শক্তি পেলে এরা এক কক্ষপথ হতে অন্যটাতে লাফাতে পারে। ”
এতে জামেলা হলো ইলেক্ট্রন কি শুধু কেন্দ্রের চারপাশে ঘুরে?
এই ইলেকট্রনের কি অক্ষ বরাবর কোন ঘুর্ণন থাকতে পারে না?

ব্যাস পাউলি (ওই যে ভাবুক অস্ট্রিয়ান )পেয়ে গেলেন রহস্য।

১৯২৫ সালে এই রহস্যময় জিনিসের কথা প্রকাশ করলেন ঠিক শ্রোইংগার(Schrodinger, নামের ১ম o এর উপর দুটা লিগান্ড আছে :P) এর তরংগ বলবিদ্যা প্রকাশের আগে(আরে ছাগল কোন জিনিসটার কথা প্রকাশ করেছে তা তো বলো নাই?ওহহ,দুঃখিত (crying) জিনিসটা হল ওই আক্ষিক ঘুর্ণন মানে স্পিনের ধারনা) । এ থেকেই পাউলি পেলেন তার বর্জন নীতি। কেমনে বল?

বলছি দয়া করে শান্ত হন তবে ক্ষান্ত হবেন না। এই নীতির মূল বিষয়ই হল কোয়ান্টাম বিদ্যার জয়জয়কার।আর আইন স্যারের শিরে ভর যদি ও তিনিই পাউলিকে নোবেল এর জন্য মনোনীত করেন!
কারণ এই ঘুর্ণন ক্ল্যাসিক্যালি ব্যাখ্যা করা কখনোই সম্ভব নয়। তবে ওই সময়কার ক্ল্যাসিক্যাল পন্ডিতরা এই ধারনার জমসে সমালোচনা করেন।
লোরেন্টয দাদু তো এত সব ভুল বের করেন যে বেচারারা যারা এই ধারনা মাথায় এনেছিল তারা যেন বেশ বড় ছেলে-খেলা করে ফেলেছিল। তবে ওই যুগটা কোন সাধারণ যুগ নয় ওই কালে দামাল সেনাপতি বোরের নেতৃ্ত্বে যে বিপ্লবী তরুণ জামেলা বাহিনী গড়ে ওঠে তারা এই ক্ল্যাসিক্যাল ধারণাকে একেবারে উধাও করে দিয়ে অনিশ্চয়তার জামেলা মানে কোয়ান্টাম যুগ শুরু করেন।

পাউলির নীতি বলে ‘সকল কোয়ান্টাম বস্তুই(ইলেক্ট্রন,প্রোটন ও নিউট্রন) স্বকীয় গুণের অধিকারী অর্থাৎ কারো সাথে কারো মিল নেই।এবং দুটি ইলেকট্রন তখনি একসাথে এক কক্ষে ঘুরতে পারে যদি তাদের শক্তি অভিন্ন তবে স্পিন বিপরীত হয়।’
এতে বর্জন কোথায়???
বেচারা ইলেকট্রন ভায়েরা একসাথে এক অরবিটালে থাকলে ও তারা শত ইচ্ছায় ও একই দশাই থাকতে পারে না। আর কারণ হল ওই পাউলির নীতি।শুধু ইলেকট্রনই নয় প্রোটন, নিউট্রন ও এই নীতি মেনে চলে।তাই তারা ফারমিওন।
আর না মানলে বোজন যেমন ফোটন (জাস্ট বর্জন থেকে রেফ তুলে ও-কার)

তবে ব্যাপার আছে। যদি আমরা এই বিষয়টাকে একটু ম্যাগনিফাই করে দেখি তবে এর মহাকীর্তির একটা স্বাদ পাওয়া যাবে।
অনেক ভারী বস্তু অস্থিতিশীল হয়ে যখন মহাকর্ষের টানে সংকুচিত হয় তখন তারা প্রোটন-ইলেকট্রনের স্বাভাবিক মডেলের চেহারা বদলে দেয়। দেখি কিভাবে?

ভারী বস্তু বলতে আপনার ভর না আমি নক্ষত্রদের বুঝাচ্ছি(আমরা আগেই বুঝেছি)।আমাদের সানের জীবনাবসান মানে জ্বালানী ফুরানো কালে এর মহাকর্ষিক চাপ একে এমনভাবে ভিতরেরে দিকে চুপসিয়ে ফেলে তখন ঘনত্ব এতই বেড়ে যায় যে এর পরমাণুর ইলেকট্রন গুলো প`যন্ত এই চাপ অনুভব করে ফলে তারা উচ্চতর শক্তির কক্ষে যেতে চায় তবে পাউলি নীতি মেনে তারা সবাই একই দশায় অবস্থান করতে পারে না। ফলে তাদের এক সংকুচিত আয়তনের জায়গায় গাদাগাদি করে অবস্থান করতে হয়। ফলে হাইজেনবার্গ নীতি del x delp>h মতে ইলেকট্রন এর অবস্থান অনিশ্চয়তা অনেক কম হবে তবে ভরবেগ অনেক বেড়ে যাবে। এই অবস্থায় নতুন করে গাদাগাদি করা থাকা ইলেকট্রনগুলো ‘হাইজেনবার্গ বেগ’ এ ঘুরতে থাকবে। এই অবস্থাকে Electron Degeneracy বলে। এটা তখনি ঘটে যখন ঘনত্ব অনেক বেশি হয়।
আর ভর যদি চন্দ্রশেখর সীমা(১.৩৮ সান ভর) অতিক্রম করে তবে তবে পদার্থ এমনভাবে সংকুচিত হবে যে পাউলি নীতি আর ইলেকট্রন-নিউক্লিয়াস সিমেট্রি কোনটাই মানা হবে না।
তখন পরমাণু তার অস্থিত্ব হারাবে এবং e- +H+ = neutron + gama ray
তখন এটা হয়ে উঠবে নিউট্রন তারকা।
আর ভর বাড়ালে অসীম ঘনত্বের সুপার ডেন্স এই পদার্থ এর ক্ষেত্র কোন পদার্থ বিজ্ঞানের নিয়মই খাটে না। মানে Black Hole হয়ে যাবে।

পাউলি নীতি এতেই ক্ষান্ত নয়। এই নীতিই পুরো প`যায় সারণীর মৌলের গঠন ও কা`যনীতি ব্যাখ্যা করে। তাই হয়তো পাউলিকে বলা হত, “ পারমাণবিক দুনিয়ার ভীটা-জমির অফিসার”।

এমন নীতি হয়তো মানব ইতিহাসে আর নাই যা একই সাথে মাইক্রোস্কোপিক ও ম্যাক্রোস্কোপিক(মানে টেলেস্কোপিক আর কি) উভয় বিষয়ে অসাধারণ বর্জনতা বজায় রাখে।


১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×