somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জেকিল এন্ড হাইড ( ড্রামা সিরিয়াল রিভিউ)

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ডঃ জেকিল এন্ড মিস্টার হাইড- আমার পড়া বই গুলির মাঝে অন্যতম ফেবারিট। রবার্ট লুই স্টিভেনসনের লেখা ১৮৮৬ সালের এই উপন্যাসটি নানা কারনেই ক্লাসিক হিসেবে বিচেচিত। রহস্য, রোমাঞ্চ,হরর, গোথিক – এসবের এমন মিশ্রন খুব একটা একসাথে পাওয়া যায় না। সেই কালজয়ী উপন্যাস থেকে আইডিয়া নিয়ে বানানো ব্রিটিশ সিরিয়াল “জেকিল এন্ড হাইড”।
অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃটেনের আইটিভিতে এই সিরিয়ালটির প্রথম সিজনের ১০ টি এপিসোড দেখানো হয়েছে। কানাডার সিবিসিতে সিজন প্রিমিয়ার ছিলো ১১ জানুয়ারী। দুই জায়গাতেই সিরিয়ালটি খুব বেশি সাড়া ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে।


নামে “জেকিল এন্ড হাইড” হলেও কাহিনী আসলে মূল বইয়ের ডঃ এডওয়ার্ড জেকিল এর নাতি রবার্ট জেকিলকে নিয়ে।
আবারো বলে নিই, মূল বইটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৮৬ সালে। বইটির পুরো নাম- “স্ট্রেঞ্জ কেইস অব ডঃ জেকিল এন্ড মিষ্টার হাইড”। গল্পটিতে মানুষের খুব বেসিক একটা বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। সব মানুষেরই আসলে আছে দুটি সত্বা। একটা ভালো, একটা মন্দ। ডঃ এডওয়ার্ড জেকিল তার ল্যাবরেটরিতে এমন একটা পোশন তৈরি করতে সক্ষম হন যা পান করলে ট্রান্সফরমেশন সম্ভব হয়। এভাবে ভালো মানুষ ডঃ জেকিল পোশন পান করে মন্দ মানুষ হাইড- এ ট্রান্সফরমড হতে পারেন, যে কিনা স্বার্থপর, জঘন্য একটা মানুষ। আবার অরেকটি পোশন পান করে তিনি জেকিল হিসেবে ফিরে আসতে পারেন। কিন্ত এক পর্যায়ে আস্তে আস্তে তিনি হাইডের উপর থেকে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলতে থাকেন। পোশন পান না করেই হাইডে ট্রান্সফরম হয়ে যেতে থাকেন। এভাবে একই মানুষ কিন্ত ভিন্ন সত্বার জেকিল আর হাইডের মাঝে টানা পোড়েনের মধ্য দিয়ে গল্পটি এগিয়ে যেতে থাকে।

এবার আসা যাক সিরিয়ালটির ব্যাপারে। সিরিয়ালটায় দেখা যায়, ডঃ জেকিলের এই ব্যারাম (হাইডে ট্রান্সফরম হয়ে যাওয়া) তার বংশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ১৯৩০ এর পটভূমিতে সিরিয়ালটির নায়ক ডঃ রবার্ট জেকিল, যে কিনা নিজেও মাঝে মধ্যে হাইডে পরিণত হয়ে যায়। প্রথম কয়েকটি এপিসোডে রবার্ট জেকিল তার নিজের পরিচয় জানতে আর তার মাঝে মধ্যে “হাইড” হয়ে যাওয়ার কারন অনুসন্ধানের চেষ্টা করে। রবার্ট জেকিলের ভূমিকায় আছে Tom Bateman যে কিনা দ্য ভিঞ্চি’স ডিমন এর ‘জুলিয়ানো দ্য মেদিচি”র ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। আনফরচুনেটলি, “জেকিল এন্ড হাইড” এ তার এক্টিং পুরাই প্যাথেটিক মনে হয়েছে।



জেকিল এন্ড হাইডের বড় সমস্যা এর ভয়ানক গাঁজাখুরি। কাহিনীকার যেভাবেই হোক একে একধরনের ‘সুপার হিরো’ সিরিয়াল বানানোর চেষ্টা করে গেছেন। এজন্য হাইডকে কাজে লাগানো ছাড়া তার উপায় নেই। মুল গল্পে স্পষ্টতই দেখানো হয়েছে, হাইড হচ্ছে সব খারাপ নিয়ে তৈরি একটা চরিত্র যার মাঝে ভালো কিছু নেই। আরো স্পেসিফিকালি, হাইড একটা সাইকোপ্যাথ যে কিনা ‘evil, self-indulgent, and utterly uncaring to anyone but himself’।
অথচ সিরিয়ালটায় হাইডকে দেখা যাচ্ছে মানুষের উপকার করে বেরাচ্ছে।খারাপের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে!কিছুই বুঝলাম না!
মূল গল্পে জেকিল আর হাইডের মাঝে ফিজিক্যাল পার্থক্যও দেখানো হয়েছে। হাইড কদাকার চেহারার কুজো লোক। আর সিরিয়ালটাতে জেকিল থেকে হাইড হয়ে গেলে শুধু চোখের চারদিকে কালি বা সুরমা লাগে, আর কোনো এপেয়ারেন্সে পার্থক্য নেই। গলার স্বর চেইঞ্জ হয়ে যায় আর গায়ে শক্তি চলে আসে। বিষয়টা পুরাই হাস্যকর।হাইডকে সুপার হিরো বানানোর অপপ্রয়াসের কারনে মূলকাহিনীর আবেদনটাই নষ্ট হয়ে গেছে।
এপিসোডগুলোও একটার উপর দিয়ে আরেকটা গাঁজাখুরি। তবে তারপরেও স্বীকার করতে হবে, কিছুটা গতিও আছে এপিসোডগুলোতে। গাঁজাখুরি দেখে বিরক্ত লাগলেও হয়ত বোরিং লাগবে না।
টেষ্ট নিতে দেখে আসতে পারেন putlocker বা অন্য কোনো স্ট্রিমিং সাইটে।
মানুষ সম্ভবত ধৈর্য ধরে দেখে (আমিও দেখছি) মূল কাহিনীর সুনাম আর স্মৃতি রোমন্থনের জন্য।
আইএমডিবিতে রেটিং ৭/১০। ৬ এ নেমে আসবে হয়ত সামনের সিজনে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৫
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড্রাকুলা

লিখেছেন সুদীপ কুমার, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১২

কোন একদিন তাদের মুখোশ খুলে যায়
বেরিয়ে আসে দানবীয় কপোট মুখায়ব।

অতীতে তারা ছিল আমাদের স্বপ্ন পুরুষ
তাদের দেশ ছিল স্বপ্নের দেশ।
তাদেরকে দেখলেই আমরা ভক্তিতে নুয়ে পড়তাম
ঠিক যেন তাদের চাকর,
অবশ্য আমাদের মেরুদন্ড তখনও... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×