একটা সমিকরণ দেখুন, না ইহা কোন অংকের সমিকরণ নয় বরং ছাত্র জীবনের সমিকরণ।
সরকার বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এর উপর ১০% ভ্যাট আরোপ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের তাতে কিছু যায় আসে না, কারণ টাকাটা দিতে হবে ছাত্রছাত্রীদের (পকৃত পক্ষে অভিভাবকদের) তো তাদের গায়ে লাগছে, এই জন্য তারা ছোট ছোট আন্দোল করার চেষ্টা করছে, কিন্তু বৃহৎ কোন আন্দোলনে যেতে পারছে না, কারণ তাতে আবার সরকারের গায়ে লাগবে,তারা মোটা অংকের ট্যাক্স থেকে বঞ্চিত হবে, আর সেই জন্য আমাদের রক্ষক বাহিনী (পুলিশ) ত আছেই সেই সাথে আছে ইস্যু। যেই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে তাকেই জামাত-শিবির, হেফাজতে ইসলাম, অথবা, কোন জঙ্গি সংঘঠনের নামে চালান করে দাও। তো ফলাফল কি? ছাত্রছাত্রীরা এবং তাদের অভিভাবকরা আন্দোলন করতে পারছে তো না এ-ই বরং আরো সন্তানকে না করছে বাবা বেচেঁ থাকলে টাকা অনেক আসবে সুতরাং তোমরা এই সবের মধ্যে যেও না। সুন্দর সমিকরণ ছাত্র, সরকার মাঝে ভার্সিটি কতৃপক্ষ,আর পুলিশ।
আমি এতদিন জেনে আসছি, সরকার সব থেকে বেশি ভর্তুকি দেয় শিক্ষা খাতে কিন্তু এখন ত দেখছি তার উল্টোটা হচ্ছে। যেখানে বহিঃবিশ্বগুলো শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ ছাড় দিচ্ছে, যেখানে লেখাপড়ার করার জন্য ভাতা দেওয়া হচ্ছে, উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে সেখানে আমাদের দেশে করা হচ্ছে উল্টোটা।
না মনে হয় একটু বেশি বলে ফেললাম, কারণ সরকার উপবৃত্তি দিচ্ছে, বিনা মূল্যে বই বিতরণ করছে, মেয়েদের জন্য আরো বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা করছে, শিক্ষার সকল সুযোগ সুবিধা প্রধান করছে সেখানে অামার কথা বেমানান। কিন্তু একটা কিন্তু আমার কাছে থেকে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এর সেপ্টেম্বর 2014 এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এর সংখ্যা ৩২ টি আর বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এর সংখ্যা ৭৯ টি। (মেডিকেল বাদ দিয়ে এই হিসাব)
আর এই ৭৯ টি বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ত্রিশ লাখের উপরে। তার মানে হল দেশের শিক্ষা খাতে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক বড় একটা ভুমিকা রাখছে। ( 2014 বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এর রির্পোট অনুযায়ী।)
আচ্ছা এত ছাত্র বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তি হয় কেন? কঠিন প্রশ্ন, চলুন উত্তর খুজি।
দেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যাল এর সংখ্যা ৩২ আর এর সিট সংখ্যা কত? পঞ্চাশ হাজার বা তার থেকে একটু বেশি।
আচ্ছা গত বছর অথাৎ ২০১৪ সালে এইচএসসি পাশ করেছিল কত জন?
২০১৪ সালে ১০টি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষায় মোট অংশ নিয়েছিল ১১ লাখ ২৯ হাজার ৯৭২ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৭০ জন। পাশের হার ৭৫.৭৪%।
জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৭০ হাজার ৬০২ জন।
(সুত্রঃ ১৪ আগষ্ট ২০১৪, যুগান্তর, প্রথম আলো, ইত্তেফাক)
লক্ষ্য করুন, সরকারী বিশ্ববিদ্যলয় এর সীট সংখ্যা মাত্র ৫০ হাজার অথচ A+ পেয়েছিল ৭০ হাজার এর উপরে।
ধরে নিলাম ৫০ হাজার A+ গেল সরকারী ভার্সিটিতে তাহলে বাকী ২০ হাজার যাবে কোথায়?
পাশ করেছিল কত জন মনে আছে, সাড়ে আট লাখ এর উপরে।
আচ্ছা হিসাব করি,
৮,৮৫,০৭০-৫০,০০০= ৮৩৫০৭০ এই ছাত্রছাত্রীগুলো যাবে কোথায়?
উত্তর আছে, জাতীয় ভার্সিটি এবং তার আন্ডারের কলেজগুলো ত আছেই, এছাড়াও আছে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিগ্রিকোর্স।
এত বিশাল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী যখন সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এ চান্স না পেয়ে যাবে কোথায়? জাতীয় ভার্সিটিতে। কিন্তু কয়েকবছর আগেও জাতীয় ভার্সিটির অবস্থাটা কি ছিল?
গতকাল আমার এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল, সে ২০০৬-২০০৭ সেশনের মাষ্টাস এর ছাত্র, আর পাশ করে বের হয়েছে ২০১৪ সালে।
আমার আরেক বন্ধু, ২০০৯ সালে ভর্তি হয়েছিল অনার্স এ এখনো পাশ করে বের হতে পারেনি।
অথাৎ জাতীয় ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার আগে চোখের সামনে ভাসে অনিশ্চিত শিক্ষার কথা।
তবে ইদানিং এই বিষয়টা অনেকাংশে কমে গেছে কিন্তু সেখানেও আছে সীমিত সীট। আমি ধরে নিলাম সারা দেশে বিভিন্ন বিষয়ে পাচঁ লাখ ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়। বাকী থাকে কত? সাড়ে তিন লাখের কিছু কম। ( জাতীয় ভার্সিটির সীট সংখ্যার সঠিক হিসাবটা কোথাও খুজে পেলাম না।)
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কত জন ভর্তি হয়? আমার ধারণা মতে সেই সংখ্যাটা এক লাখের বেশি নয়। বাকী থাকল কত? দুই লাখ পয়ত্রিশ হাজার সত্তর জন।
এদের মধ্যে আবার ধরুন অনিচ্ছা সত্তেও এক লাখ ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয় ডিগ্রি কোর্সে।
অনিচ্ছা কেন বললাম বুঝতেই পারছেন,তাও বলি, ডিগ্রি কোর্সটাকে আমাদের দেশে মুল্যায়ন একটু কমই করা হয়।
মেডিকেল এর কথা মনেই ছিল না, ইদানিং মন ভুলা হয়ে যাচ্ছি কেন বুঝতেছিনা।
আচ্ছা এখান থেকে মেডিকেল এর পয়ত্রিশ হাজার বাদ দিলাম।
বাকী থাকল এক লাখ । এরা কি করবে? পঞ্চাশ হাজার দ্বিতীয়বার চেষ্টা করবে আর বাকীগুলো ভর্তি হবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে।
( এই ভর্তির হিসাবটা অামার মনগড়া, আমি শুধু বুঝানোর জন্য কাল্পনিক ভাবেই এটা সাজিয়েছি, আর সবনিন্ম সংখ্যাটাই ধরেছি।)
আরো কিছু অভাগা আছে যারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে বাধ্য হয়। আমার নিজের কথাই ধরুন, একটা দূর্ঘটনার কারণে আমার জীবনের মূল্যবান দুইটা বছর হারিয়ে যায়, মেট্রিক আর ইন্টার এর মাঝামাঝি সময়ে। যখন আমি ইন্টার পাশ করে বের হই তখন আমাকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তোমার জন্য সরকারী শিক্ষার পথ বন্দ তুমি অন্য ভাবে চেষ্টা কর। একরকম বাধ্য হয়েই আমাকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয়েছে। আমার মত এমন অভাগার সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়।
এত ত গেল ভর্তির পরিসংখ্যান এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির কারণ। আচ্ছা এই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রছাত্রীর সবাই কি উচ্চ বিত্ত পরিবার থেকে এসেছে?
না আসেনি, বরং অধিকাংশ ছেলেমেয়ে মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়ে। আচ্ছা ধরে নিলাম সবাই উচ্চবিত্ত তাই বলে একটা বৈষম্য সৃষ্টি করা হবে কেন?
শুরুতেই বলেছিলাম, ২০১৪ সালের বিশ্ববিদ্যালয় এর মঞ্জুরি কমিশন এর রির্পোট অনুযায়ী প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ত্রিশ লক্ষ।
এই ত্রিশ লক্ষ্য ছাত্রছাত্রীর উপর কেন অন্য ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় বৈষম্য করা হবে? এমনিতেই এরা বাপের লক্ষ্য লক্ষ টাকা ব্যায় করছে সেই তারউপরে কেন এইটা করতে হবে? এরা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের পেট ভরাচ্ছে, এটা সরকারের হজম হচ্ছেনা, তাই এই ভ্যাট।
আবার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র নাম শুনলেই একটা নাক ছিটকানী ত আছেই সব ক্ষেত্রে। চাকুরী, পাড়াপ্রতিবেশি, সমাজ সব জায়গায় কথা শুনতে হয়। আমি স্বিকার করি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সমস্যা আছে কিন্তু সবগুলোর মান সমান নয়। এখানেও সরকারের ব্যর্থতা। সরকার কঠোর হলে এমন হত না।
তো এই দূভাগা ছাত্রছাত্রীর দোষ কোথায়? যে তাদের ১০% বেশি ভ্যাট দিতে হবে? দোষ এদের কপালের। আমরা এই জিনিসটা খুব ভালো পারি, অন্যের উপর দোষ চাপাতে।
আমার পরিচিত কিছু বন্ধু আছে যারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। তাদের কিছু কথা বলি।
একজনের বাবা তার অল্প সম্পদ থেকে একটা অংশ বিক্রি করে ছেলেকে পড়াচ্ছেন, এই টাকাটা শেষ হয়ে গেলে তার পড়াশোনাও বন্ধ হয়ে যাবে।
আরেকজনের বাবা তার সহায় সম্পতি বন্ধক রেখে ছেলেকে পড়াচ্ছেন।
এই দুইজনের বাবার আশা ছেলে অর্নাস শেষ করে একটা চাকুরি পাবে, আর সেটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ততই মঙ্গল।
আংকেলরা হয়ত জানেনা, চাকুরির বাজারে চাকুরি এখন সোনার হরিণ। যে বৃক্ষ ফল দেয়না তার পাশে বসে কেদে বণ্যা বানিয়ে ফেললেও ফল হবে না, এদের অবস্থাও যে এই বৃক্ষের মত হবে না তার কোন গ্যারান্টি আমি দিতে পারছি না।
আমার ব্যাক্তিগত কথাই বলি, আমরা দুই ভাইবোন অর্নাস এ পড়ছি, একজন সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে আর আমি ত দুভাগা। অন্য আরেকজন পড়ছে, ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে।
আমার বাবা হারে হারে টের পাচ্ছেন সন্তানের লেখাপড়ার খরচ বহন করাটা কত কঠিন। যখন ছুটিতে যাই তখন বাবার মুখের দিকে আমি তাকাতে পারি না, রাতে যখন সবাই ঘুমায় আমি দেখেছি আমার বাবা ঘুমায় না, বরং তার মুখে চিন্তার ছাপ, সকাল হতে না হতেই যে ছেলেমেয়ে হাত পেতে দাড়ীয়ে থাকবে।
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিও আমার ক্ষোভ কম নয়, এরা এমন ভাবে ক্লাস আর পরিক্ষার সিডিউল করে যাতে একটা ছাত্রছাত্রী পার্টটাইম কিছু করবে তার সুযোগ থাকে না।
যাইহোক এই অবস্থায় যদি এই ১০% ভ্যাট গুনতে হয় তবে আমাদের মত ছাত্রছাত্রীর কি হবে? আমার মত পরিবারের বাবাদের গলায় ছুড়ি চড়ানোর নামান্তর মাত্র।
সরকারের এই দিকগুলো বিবেচণা করার প্রয়োজন ছিল বলেই আমি এবং দেশের সচেতন সব নাগরিক মনে করে।
আচ্ছা সরকারের যেহেতু টাকার প্রয়োজন, তাই এই খাতে ভ্যাট আরোপ করেছে। আমি সরকারকে অন্য একটা পথ দেখাচ্ছি, তৈরি পোশাক আমদানীর উপর বেশি কর আরোপ করা হোক, বিলাবহুল পণ্যের উপর কর আরোপ করা হোক, আরো কিছু খাত কি আমাকে দেখিয়ে দিতে হবে? প্রত্যেকটার উপরে যদি ১% করেও বৃদ্ধি করা হয় তাহলে দশটা জিনিসের উপর ধায্য করলেই হয়।
অন্য বিষয়ে একটা কথা বলি, দেশের প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে নির্দেশ দিয়েছেন, রাস্তা পিচ দিয়ে করা যাবে না বরং বিটুমিন দিয়ে করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার নয় তবু উনি বুঝতে পারছেন যে পিচের রাস্তা সহজেই নষ্ট হয়ে যায়, বিটুমিন হয় না। আমাদের দেশে ইঞ্জিনিয়াররা কি তাহলে আঙ্গুল চোষে নাকি? এরা কি এর সমাধান দিতে পারে না? আসলে পারে কিন্তু করবে না, কারণ একটা রাস্তার জন্য যা বাজেট হয় তার ২৫% কাজ হয় বাকীটা কিছু পকেটে ঢুকে হাওয়া হয়ে যায়। এখন যদি ইঞ্জিনিয়াররা সমাধান দেয় তাহলে এই বছর বছর টাকা হাওয়া করার রাস্তা যে বন্ধ হয়ে যাবে। আর ইঞ্জিনিয়ারদেরও ত কিছু বিষয় আছে, এত এত টাকা পয়সা খরচ করে পড়াশোনা করছে সেই টাকাটা তুলতে হবে না?
বিষয়টা বুঝতে পারছেন? কোন কথা কথায় গিয়ে ঠেকল? হা হা হা
আমার পাঠকদের মন্তব্য হল, ভাই আপনি লেখার শেষে আশা দেখান, তো আজকে বাদ যাবে কেন, আজকেও দেখাব আশা।
আচ্ছা এই ভ্যাট দেওয়া নেওয়ার মাঝে আছে কারা? প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। এদের ত কিছুই না, সরকার টাকা চাইবে আর তারা ছাত্রদের গলায় ছুড়ি দিয়ে সেই টাকা আদায় করে সরকারকে দিবে। কিন্তু যদি এই ৭৯টা ভার্সিটির কতৃপক্ষ বলে আমরা কোন ভ্যাট দিব না তাহলে সরকার কি করতে পারবে? ভার্সিটি বন্দ করে দিবে? দিয়েই দেখুক কি হয়? আমাকে তখন আর কিছু বলতে হবেনা।
সবাইকে দিয়ে সব কিছু হয় না,আমাকে দিয়েও তাই। আমি লিখতে পারি কিন্তু সংঘঠন গড়ে তোলা বা পরিচালনা করা আমার পক্ষে কঠিন। কিন্তু আমি সংঘঠনের হয়ে কাজ করতে পারি। আজকে একটা স্বাক্ষর করে আসলাম এই ভ্যাটের বিরুদ্ধে আন্দোলন এর।
আরো অনেক লিখা যায়, কিন্তু যদি লিখি তখন আনিছ হয়ে যাবে পাগল নয়ত বেশি জ্ঞানী। ভাই আমি সাধারণ আছি সাধারণই থাকি।
দেশের তরুণ সমাজ যখন রাজনিতী নিয়ে কথা বলা শুরু করেছে, তাহলে আমি ধরেই নিতে পারি দেশ পরিবর্তন এর দিকে যাচ্ছে।
ধন্যবাদ সবাইকে। আমার এই লেখাটা যদি কতৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয় তাহলে আমি বলব লেখাটা সফল হয়েছে নয়ত নয়।।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪১