প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের মূল্য রয়েছে। এমনকি যে ৩ সেকন্ডের জন্য পৃথিবীতে আসে তারও জীবনের মূল্য রয়েছে। তবে আমরা মানুষের জীবনকে মূল্য দিতে পারছি না কেন? প্রত্যেকটা মানুষের সমান অধিকার রয়েছে বাঁচার। তবে আমরা সেই অধিকারকে অস্বীকার করছি কেন? আজ আমরা মানুষের জীবনটাকে সব দিক থেকে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলেছি। ধনী-গরীব, নারী-পুরুষ, বয়স্ক-শিশু, শাসক- শোষিত প্রভৃতিভাবে নিজেদেরকে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলেছি। এই দুই ভাগই সবচেয়ে ভয়ংকর। এই দুই ভাগই আমাদের সমাজকে অধিকার দিয়ে দিয়েছে সবকিছুকে বাঁকা দৃষ্টিতে দেখার। এইযে হানাহানি, রেষারেষি, অত্যাচার, রাহাজানি, নারী অধিকারের জন্য আর্ত চিৎকার, শিশু নির্যাতনের আক্ষেপ ততদিন পর্যন্ত বন্ধ হবে না যতদিন পর্যন্ত না আমরা এই দুই ভাগ ভাঙব, যতদিন পর্যন্ত না ভাবব আমরা মানুষ। মানুষ হিসেবে উপরওয়ালার কাছে আমরা সবাই সমান তাহলে নিজেদেরকে আমরা মানুষ হিসেবে সমান ভাবতে পারছি না কেন? আমরা কি বুঝতে পারছি, আমরা একজনের অধিকার অস্বীকার করতে গিয়ে নিজেদের মানুষ হিসেবে অধিকার নিজেরাই অস্বীকার করছি। অন্যের পায়ে শেকল পরাতে গিয়ে নিজেদের পায়ে নিজেরাই শেকল পরাচ্ছি, অন্যকে ছোট দেখাতে গিয়ে নিজেদেরই ছোট দেখাচ্ছি। যখন আমি অন্যের জীবনকে মূল্য দিতে পারছি না, অন্যকে মানুষ হিসেবে সম্মান জানাতে পারছি না তখন নিজেকে মানুষ হিসেবে সম্মান জানাই কি করে?
আমাদের সমাজের বাঁকা দৃষ্টিকোণের অন্যতম কারণ আমাদের সমাজে পুরুষরাই শুধু মানুষ আর বাকিরা মানুষের পর্যায়ে পড়েই না। তাদের ইচ্ছা, বোধশক্তি থাকতে পারে না। আর তাইতো দুর্বলের প্রতি সবলের অত্যাচার আজও বিরাজমান। তারা যদি জানত গরিবরা তাদের জীবনের সঞ্চারদাতা, নারীরা তাদের চলার পথের সঙ্গী, আর শিশুরা উপরওয়ালার আমানত তবে হয়তোবা তারা জীবনের মূল্য দিতে জানত।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১৮ রাত ৯:০৪