সম্প্রতি ধর্ষণের ঘটনাগুলোতে একদল ব্যাক্তি ধর্ষণের জন্য ধর্ষককে নয় বরঞ্চ ধর্ষিতাকে দোষ দিচ্ছে। তার চলাফেরা, পোশাককে মূল কারণ হিসেবে ধরে নিজেদের নিকৃষ্ট মনের পরিচয় দিচ্ছে। আবার একদল মহিলা নারী অধিকারের জন্য গলা ফাটাচ্ছে নারীর সম্মানকে দূরে ঠেলে দিয়ে।
তারা দুভাগে বিভক্ত হয়ে একদল পরোক্ষভাবে ধর্ষণকে সমর্থন জানাচ্ছে আরেকদল উগ্র নারীবাদী হয়ে নারীর অধিকার নিয়ে গলা ফাটিয়ে যাচ্ছে। এই দুই পক্ষের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই, এরা চায়ই না ধর্ষণের বিচার হোক। এরা দুই পক্ষ ভার্চুয়ালি এবং নন-ভার্চুয়ালি ধর্ষণের পক্ষে বিপক্ষে তর্ক করে কাদা ছিটাছিটি করছে। তারা ধর্ষণকে হাস্যকর ব্যাপারে পরিণত করেছে। মাঝখান দিয়ে নারীর সম্মান কই? নারীর সম্মান সবার আগে। নারীর সম্মান যদি না থাকলো তবে সে অধিকার দিয়ে কি করবে? কিন্তু একদল ধর্ষণের সমর্থক এবং উগ্র নারীবাদী নারীর সম্মানকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ধর্ষণের মত ঘৃণ্য কাজকে বৈধতা দিয়ে দিয়েছে।
দুইপক্ষকেই বুঝতে হবে প্রশ্নটা পোশাকের নয়, প্রশ্নটা দৃষ্টিভঙ্গির। আপনি কিভাবে দেখেন বিষয়টাকে। আর ব্যাপারটা অধিকারের নয়, ব্যাপারটা সম্মানের। একজন নারীর অবশ্যই সর্বপ্রথমে সম্মানিত হবার অধিকার আছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনাগুলোতে দেখা যায় শিশুরাও ধর্ষণের বা হ্যারাজমেন্টের শিকার হচ্ছে। যারা এইসব ঘৃণ্য কাজ করে তারা হয়তবা এটা ভেবে করে, ও তো বাচ্চা! বুঝবেই না ওর সাথে কি হচ্ছে প্রতিবাদ করবে কি! কিরকম নোংরা মানসিকতা হলে এমনটা ভাবে। নারীরা ঘরে-বাইরে, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে সবজায়গায় হ্যারাজমেন্টের স্বীকার হচ্ছে। কাজেই ধর্ষণের মূলত নোংরা মানসিকতা দায়ী এবং এই বিষয়টাকে বাঁকাভাবে দেখবার জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি দায়ী। আর কিছু উগ্র নারীবাদী মহিলা আছেন যারা কিনা ধর্ষণের বিপক্ষে কথা বলতে গিয়ে ধর্ষণের সমর্থকদের সাথে এমন কাদা ছিটাছিটি করেন যে মাঝখান দিয়ে ধর্ষিতার এবং নারীর সম্মান হারিয়ে যায়। আফসোস, কিছু মহিলারা নারীর সম্মান বুঝে না। যে মহিলারা নারীর সম্মান বোঝে না তারা আর যাই হোক নারী হতে পারা না। ধর্ষণের বিচারের জন্য আগে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে, নারীকে তার সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্টের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে উৎসাহিত করতে হবে, এবং সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৫