ছবি ক্রেডিটঃ গুগল
তখন আমরা তিন বান্ধুবী ক্লাস নাইনে পড়ি। আমার স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি সবজায়গায় তিন ভালো বান্ধুবীই হয় কেন জানিনা! তিন আমার লাকি নাম্বার কিনা তাও জানিনা! আমাদের ঐ সময় টিনএজদের মধ্যে ফ্রেন্ডশিপ ডে উদযাপন শুরু হয়। এইদিনে আমরা একে অপরকে ফ্রেন্ডশিপ বেল্ট পরাতাম আর ভাই-বোন, কাজিন দ্বারা এমনকি নিজে নিজের হাতে ফ্রেন্ডশিপ বেল্ট পরিয়ে হাতে বেলতের সংখ্যা বাড়িয়ে ভাব দেখাতাম আমার তোমাদের থেকে বেশি ফ্রেন্ড। তখন যার হাতে যত বেশি বেল্ট থাকতো তাকে ততো বন্ধুমহলে ফেমাস মনে করা হতো।
আমাদের মেয়েদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা হতো কে কার চেয়ে বেশি সুন্দর বেল্ট বানিয়ে আনতে পারে বাসায় সুতো দিয়ে। তাই সুন্দর ফ্রেন্ডশিপ বেল্টের চক্করে না কিনে বাসার সব সুতা করতাম সাবাড়। তো আমরা তিন বান্ধুবী আমি, মুক্তা, সুইটি একে অপরকে নিজেদের বানানো ফ্রেন্ডশিপ বেল্ট পরিয়ে টিফিন পিরিয়ডে নিচে গেলাম টিফিন করতে। হঠাৎ সুইটি জিজ্ঞেস করল, 'আমরা কত?' আমরা দুজন হতভম্ব হয়ে বললাম, 'আমরা তিনজন'। ও আবার জিজ্ঞেস করল, 'আমরা কত?' আমরা দুজন একে অপরের মুখের দিকে তাকালাম। ও দেখতে পারছে আমরা তিনজন তবুও ও জিজ্ঞেস করছে! তাই অগত্যা আবার বললাম, 'আমরা তিনজন'। এবার ধৈর্যহারা হয়ে ও আবার জিজ্ঞেস করল, 'আ-ম-রা কত?' এইবার আমরাও বিরক্ত হয়ে উত্তর করলাম, 'আ-ম-রা তি-ন-জ-ন'। ও বোঝাতে পারছে না ও কোন আমড়ার কথা বলছে, আমরাও বুঝতে পারছি না ও কোন আমরার কথা বলছে। এবার ও আর না পেরে বলল, 'আরে! খাওয়ার আমড়া! কত?' আমরা দুজন আকাশ থেকে পড়ব না মাটি খুঁড়ে বের হব বুঝতে না পেরে সারেন্ডারের সুরে বললাম, 'ও! আমড়া! তিন টাকা।' উফ! কি ছিল সেই দিনগুলো! উফ! সেই বয়স! উফ! কি ছিলাম আমরা! বোকা!